কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি বাজার অন্যতম বড় সবজি বাজার হিসেবে খ্যাত। প্রতিদিন এই বাজারে সবজির হাট বসে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা এই বাজারে সবজি নিয়ে আসেন। এখানে প্রতিদিন কোটি টাকার মতো সবজি বেচাকেনা হয় বলে জানিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। সবজি সংরক্ষণাগার তৈরি ও বাজারজাত সহজতর করতে সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলে এখানকার সবজি ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা আরও উপকৃত হবেন।

সম্প্রতি তারাকান্দি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের পূর্বপাশে বটগাছ ঘিরে বসে বিশাল সবজির হাট। কৃষক আর পাইকার মিলে একাকার। দরদাম হচ্ছে। বিক্রীত সবজি বস্তাভর্তি করে উঠানো হচ্ছে অটোরিকশা, টমটম, পিকআপ আর ট্রাকে। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা বেচাকেনা হয়ে থাকে। দূর-দূরান্তের পাইকারেরা অটোরিকশা, পিকআপ, ট্রাক নিয়ে আসেন সবজি কেনার জন্য।

সবজি বিক্রি করতে আসা উপজেলার ঝাউগারচর গ্রামের নূর নবী বলেন, ‘দুই যুগ ধরে চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত। উৎপাদিত সবজি এই হাটে নিয়ে আসি। প্রতিদিন এখানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে আসেন। দূর-দূরান্তের পাইকারেরা এখান থেকে কম মূল্যে সবজি কিনতে পারছেন।’

একই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, তারাকান্দি সবজির বাজারে প্রতিদিন কোটি টাকার সবজি বেচাকেনা হয়ে থাকে। বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো হলে আরও বেশি ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটবে। পাশাপাশি উৎপাদিত সবজি সংরক্ষণ করতে সরকারি উদ্যোগে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলে এখানকার কৃষকেরা উপকৃত হতেন।

আজহারুল ইসলাম নামে একজন পাইকার জানান, তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থেকে এসেছেন। প্রতি সোমবার এই হাটে আসেন। এখান থেকে কম দামে সবজি কিনে হাওর এলাকায় সরবরাহ করে থাকেন।

তারাকান্দি বাজারের সবজির আড়তদার মো. খোকন মিয়া বলেন, ‘৫০ বছর ধরে আমি সবজি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ২০ বছর নিজে চাষাবাদও করছি। ৩০ বছর ধরে আড়ত চালাচ্ছি। প্রতিদিন এই বাজারে কোটি টাকার সবজি বেচাকেনা হয়। দিনদিন এ সবজির হাটের সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে। একসময় যে হাটের ইজারা ছিল ৪০০ টাকা, সেখানে বর্তমানে ৪০ লাখ টাকা।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এখানকার মাটি কৃষির জন্য খুবই উপযোগী। কৃষি বিভাগ থেকে সবসময় কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়। এখানকার সবজি বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হয়ে থাকে। সবজি সংরক্ষণ ও বাজারজাত প্রক্রিয়া সহজতর করতে সরকারি উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে এখানকার কৃষি ও কৃষকের আরও উন্নয়ন হবে।