Ajker Patrika

আঙুলের ছাপে আটকে আছে ৫ হাজার ভাতাভোগীর অর্থ

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০৮: ৩৬
আঙুলের ছাপে আটকে আছে ৫ হাজার ভাতাভোগীর অর্থ

ব্যাংক হিসাবে টাকা আসার পরও তা তুলতে পারছেন না যশোরের মনিরামপুর উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার ভাতাভোগী। তাঁরা জানিয়েছেন, ব্যাংক এশিয়ার এজেন্টের কাছে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, আঙুলের ছাপ মিলছে না। ছাপ না মেলায় তাঁদের টাকা দেওয়া হয়নি। ভাতার টাকা পাওয়া নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে।

উপজেলার মামুদকাটি গ্রামের আলী আকবর গত সপ্তাহে ব্যাংক এশিয়ার নিকটস্থ এজেন্টের কাছে বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতে যান। তবে হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ না ওঠায় এজেন্ট তাঁকে টাকা দেননি। ভাতার টাকা তুলতে না পেরে হতাশ আলী আকবর। তাঁর বড় ভাই আবুল খায়ের, একই গ্রামের আবুল কালাম, ইউসুফ আলী, রঘুনাথপুর গ্রামের আসমা বেগম, সামছুন্নাহার বেগম, মান্দার কুমারসহ অনেকের এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী আলী আকবর বলেন, ‘ওষুধের দোকানে কিছু টাকা বাকি পড়েছে। ভাতার টাকা তুলে দিতে চাইছিলাম। মোবাইলে তিন মাসের ১ হাজার ৮০০ টাকার ম্যাসেজ পাইয়ে তুলতে গেছিলাম। ওরা বলল, আমার আঙুলের ছাপ নেচ্ছে না। এখন টাকা ওঠানো যাবে না। এ জন্য ফিরে আইছি। কবে যে টাকা তুলতি পারব, তাই ভাবতেছি।’

উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর ও ব্যাংক এশিয়ার একটি সূত্র জানিয়েছে, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। আঙুলের ছাপ দিয়ে ভাতাভোগীদের টাকা তুলতে হয়। শুরুতে আঙুলের ছাপ নিয়ে কিছু হিসাব নম্বর স্ব স্ব ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আইডি থেকে খোলা হয়েছে। কিছু খোলা হয়েছিল ব্যাংকের এজেন্টদের আইডি থেকে। এজেন্টের মধ্যে কেউ কেউ হিসাব নম্বর খোলার সময় অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ আছে। তাঁরা ভাতাভোগীর আঙুলের ছাপ না নিয়ে অন্যের আঙুলের ছাপ নিয়ে অনেকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমন কিছু অভিযোগ ব্যাংকের সদর দপ্তর পেয়েছে। তাই এজেন্টদের মাধ্যমে খোলা হিসাব নম্বরের আঙুলের ছাপ ব্যাংক সার্ভার থেকে মুছে দিয়েছে। এতে অনেকের টাকা উত্তোলন আটকে আছে। নতুন করে আঙুলের ছাপ নিয়ে ব্যাংকের নির্ধারিত প্রতিনিধির আইডি থেকে হিসাব খুলে টাকা দেওয়া হবে। 

ব্যাংক এশিয়ার হিসাবমতে, মনিরামপুরে আঙুলের ছাপে এক কিস্তির টাকা আটকে পড়া ভাতাভোগীর সংখ্যা পাঁচ থেকে ছয় হাজার। উপজেলার সোহরাব মোড়ের ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিনিধি আল মামুন বলেন, ‘অনেকে ভাতার টাকা তুলতে আসছেন। যাঁদের আঙুলের ছাপ উঠছে না, তাঁদের ইউনিয়ন পরিষদে যেতে বলে দিচ্ছি।’

ব্যাংক এশিয়ার মনিরামপুর উপজেলা টিম প্রধান প্রদীপ পাল বলেন, আঙুলের ছাপ মুছে যাওয়ায় উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে ২০০ থেকে ৩০০ ভাতাভোগীর টাকা আটকে গেছে। যাঁরা টাকা তুলতে পারেননি, তাঁদের নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে উদ্যোক্তার কাছে নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে আসতে বলা হচ্ছে। সময় নির্ধারণ করে আমাদের প্রতিনিধি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সবাইকে ডেকে আঙুলের ছাপ নেবেন। তখন টাকা তুলতে আর সমস্যা হবে না।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘টাকা তুলতে না পেরে অনেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে। সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত