ভাঙা সেতুতে দুর্ভোগ চরমে

সুজন মোল্লা, সিঙ্গাইর
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ৩৭
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৬

সিঙ্গাইর উপজেলায় গাজীখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের তিন বছর পর ভেঙে গেছে। এতে সরকারের প্রায় ৫৬ লাখ টাকার প্রকল্প ভেস্তে গেছে। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় সিঙ্গাইর ও ধামরাই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। অনিয়ম ও অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় সেতুটি ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কলাবাগান মাজারসংলগ্ন গাজীখালী নদীর ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেনের নামে সেতু নির্মাণকরা হয়। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫৬ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ টাকা।

নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের ১২ মে সেতুটি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। নির্মাণের তিন বছর পর ২০২০ সালে বন্যায় সেতুটি ভেঙে পড়ে।

সরেজমিনে সোমবার দেখা যায়, গাজীখালী নদীতে দুই পারের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হয় ছোট করে। এতে গত বছর বন্যায় সেতুর গোড়ার মাটি সরে গিয়ে এটি ধসে পড়ে নদীতে। ৪০ মিটারের সেতুটি ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য করে নির্মাণ করলে এমনটা হতো না। পরিকল্পনার ভুলেই সেতু ভেঙে গেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

স্থানীয় মনোয়ার হোসেন মাসুদ বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণ করায় সিঙ্গাইর ও ধামরাই উপজেলার মানুষ খুব খুশি হয়েছিল। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হতো। নির্মাণের তিন বছর পর ভেঙে যায়। এরপর থেকে দুই উপজেলার ১৫টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।

কলাবাগান এলাকার আলিম হোসেন বলেন, ‘সেতুটি দিয়ে সিঙ্গাইর উপজেলার তালেবপুর, ইরতা, নতুন ইরতা, কাংশা, ধামরাই উপজেলার খরারচর, বহতকূল, আটিমাইঠানসহ বিভিন্ন এলাকার যানবাহন ও মানুষ চলাচল করত। এখানে জরুরি ভিত্তিতে একটি সেতুটি নির্মাণ করা দরকার। এলাকার মানুষের ছয় কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সময় অপচয় হচ্ছে। দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

খড়ার চর এলাকার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের সময় স্থানীয় প্রশাসনের আরও দায়িত্বশীল হওয়া দরকার ছিল। প্রথমে সঠিক পরিকল্পনা করে সেতুটি নির্মাণ করলে এটি ভাঙত না। একই জায়গায় বারবার সেতু নির্মাণ করে সরকারি অর্থের অপচয় করা হচ্ছে।’

কাংশা গ্রামের আজিজুল ইসলাম বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এই এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের চরম সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষকেরা পড়েছেন বিপাকে। তাঁদের অতিরিক্ত গাড়িভাড়া দিয়ে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

তালেবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রমজান আলী বলেন, ‘নদীর দুই পাড়ের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী সেতুটি ছোট করে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই বন্যায় নদীর স্রোতে সেতুটি ভেঙে গেছে। এতে দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি।’

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রুবাইয়াত জামান বলেন, ‘গাজীখালী নদীর ওপর ৫ কোটিটাকা ব্যয়ে নতুন একটি সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সয়েল টেস্ট করেদরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপরকাজ শুরু হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত