Ajker Patrika

‘ডাকাত’ হইতে সাবধান!

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ০৯: ১৩
‘ডাকাত’ হইতে সাবধান!

আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে আপাতত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোট গ্রহণ করার পক্ষে-বিপক্ষেই আলোচনা প্রবল। যারা রাজনৈতিকভাবে 

সরকারের বিরুদ্ধে, তারা ইভিএমে ভোট গ্রহণেরও বিরুদ্ধে। আবার সরকার-সমর্থক বা সরকারের বিরোধিতায় সোচ্চার নয়, এমন ব্যক্তিরাও ইভিএম প্রশ্নে বিভক্ত বলেই মনে হয়। এমনকি বিশেষজ্ঞদেরও ইভিএমের ব্যাপারে শর্তহীন সমর্থন নেই। যন্ত্রের ভালো-মন্দ দুই দিকই আছে। এখন ইভিএমের মন্দ দিক পরিহার করে শুধু ভালোটা আমরা ব্যবহার করতে সক্ষম হব কীভাবে, সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে সামনে আসছে।

ইভিএম নিয়ে চলমান বিতর্কে নতুন রসদ জুগিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান। সোমবার সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেছেন, ‘ইভিএমের মধ্যে চ্যালেঞ্জ একটাই, আর কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখি না। চ্যালেঞ্জটি হলো, ভোট গ্রহণের গোপন কক্ষে একজন ডাকাত, সন্ত্রাসী দাঁড়িয়ে থাকে এবং সে ভোটারদের বলে, আপনার ভোট হয়ে গেছে, আপনি চলে যান।’

নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। ভোট গ্রহণ অবাধ ও ত্রুটিমুক্ত করার জন্য যখন প্রায় সবাই দাবি জানাচ্ছেন, যখন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন, তখন আমাদের নির্বাচন কমিশনার ডাকাতের কথা বলে কি ভালো করলেন? তিনি কিন্তু কার্যত স্বীকার করেছেন যে ভোটারদের ভয় দেখানো এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিতে প্ররোচিত করার বিষয়টি বানোয়াট নয়। যে ডাকাতের কথা তিনি বলেছেন, এই ডাকাত কে? এই ডাকাত যে সরকার বা সরকারি দলের কেউ, তা-ও বুঝতে কষ্ট হয় না। ভোট গ্রহণের গোপন কক্ষে ঢোকার দুঃসাহস নিশ্চয়ই সরকারের বাইরের কেউ দেখাতে পারবে না।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বাটন টিপে দিতে কেন্দ্রে আমার লোক থাকবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ইভিএম না থাকলে রাতেই সব ভোট নিয়ে ফেলতেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বক্তব্য থেকে কি এটা স্পষ্ট হয় না যে, ব্যালট বা ইভিএম–যাতেই ভোট হোক না কেন, সরকার-সমর্থকেরা সবটাই নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখেন। ব্যালট পেপারে ভোট হলে আগের রাতেই সিল মেরে বাক্স ভরা হবে আর ইভিএমে হলে নিজের লোক দিয়ে বাটন টেপার ব্যবস্থা করা হবে। এই নিজের লোকদেরই তো নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব ‘ডাকাত’ বলেছেন। নয় কি? এই ডাকাতদের যদি নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনেও ঠেকাতে না পারে, তাহলে নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে পারবে কি? যদি আগামী সংসদ নির্বাচন ইভিএমেই নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে গোপন কক্ষের ডাকাত নিবৃত্ত করা সম্ভব হবে তো? নির্বাচন কমিশনকে যে আইনি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেটা প্রয়োগে সক্ষমতা কি কমিশনের আছে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত