Ajker Patrika

ভৈরব নদ দূষণকারী ১০৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২২, ১৫: ১৮
ভৈরব নদ দূষণকারী ১০৬

ভৈরব নদ দূষণকারী হিসেবে ১০৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। শুধু যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানাসহ পৌর এলাকাতেই এসব দূষণকারী চিহ্নিত করা হয়।

তালিকায় শহরের বেসরকারি ১১টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে শুরু করে পৌরসভার নালা এবং গৃহস্থালি কিছুই বাদ নেই। সবার বর্জ্যের ঠাঁই হয় এ ভৈরবে।

নদের বাবলাতলা থেকে নীলগঞ্জ পর্যন্ত দুই ধারের এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত দূষণ করে চলেছে। এটি যেন এখন অঘোষিত পয়োনিষ্কাশনের সুয়ারেজ লাইনে পরিণত হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত যশোর জেলার মাসিক উন্নয়ন সভায় দূষণকারীদের তালিকাটি উপস্থাপন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের একতা হাসপাতাল, মডার্ন হাসপাতাল, রেনেসাঁ হাসপাতাল, অসীম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্ক্যান হাসপাতাল, স্ক্যান ও ইউনিক হাসপাতালের মাঝের নালা, অর্থোপেডিকস হাসপাতাল, পপুলার হাসপাতাল, ল্যাব জোন, দেশ ক্লিনিক, কিংস হাসপাতাল ও ওই এলাকার স্বপন সরকার ও মুনছুর আহম্মেদ। এসব হাসপাতালের অভ্যন্তরে সেপটিক ট্যাংক নেই। তাদের সুয়ারেজ লাইন সরাসরি নদের পানিতে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন বর্জ্য সরাসরি নদে ফেলা হচ্ছে।

এদিকে কাঠেরপুলের রওশন আরার বাসা, গীরবশাহ মাজার-সংলগ্ন পৌরসভার নালা, রাজধানী হোটেল-সংলগ্ন পৌরসভার নালা, বাবলাতলা ব্রিজ-সংলগ্ন পৌরসভার নালা, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে পৌরসভার নালা, লোন অফিস পাড়ার হাবলু, গরুর খামার মালিক মমতাজ উদ্দীন পিন্টু, লোন অফিসপাড়ার পৌরসভার নালা, ৪ নম্বর ওয়ার্ড লিচুতলা ব্রিজ-সংলগ্ন পৌরসভার নালা, লিচুতলা ব্রিজ-সংলগ্ন বাসিন্দা জাহাঙ্গীর কাদের, একই এলাকার মো. আসলাম ও মোহাম্মদ আলী, লিচুতলা এলাকার হাসানুর রহমান, নিচুতলা ব্রিজ-সংলগ্ন নদীর বাম পাশের বিস্কুট কারখানা, এখানকার পৌরসভার নালা, নীলগঞ্জ সাহাপাড়ার সেলিম, একই এলাকার আনিছুর রহমান, নূর মোহাম্মদ সড়কের মো. নাসিম, আনোয়ার হোসেন, বাবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর মোল্যা, বুলু গাজী, হাবীব, পান্নু শেখ, ফজলে আলী বাবু, ইংশুল আলী, রাকিব হোসেন, দাউদ, স্থানীয় পৌরসভার নালা, মহাসিন শেখ, বিকাশ বিশ্বাস, স্থানীয় পৌরসভার নালা থেকে দূষিত পানি যাচ্ছে নদে।

এ ছাড়া মোল্লাপাড়ার জামাল শেখের স্ত্রী রিনা, ফজলুর করিম টুটুল, এলাকাভিত্তিক নালা, মোল্লাপাড়ার মাসুম খন্দকার, শফিয়ার রহমান, নীলগঞ্জের শাহেব আলী, মাসুম বিশ্বাস, মফিজ ছলেমান, হাফিজুর রহমান, ছাত্তার, ঝুমঝুমপুর নদীর পাড় এলাকার হাসানুর রহমান, আজবাহার মোল্লা, রাশিদা বেগম, ডা. শরিফুল ইসলাম, রনি সর্দ্দার, নারগিছ সামাদ, ফরিদা বেগম, ফারুখ হোসেন ও স্থানীয় পৌরসভার নালা, ঝুমঝুমপুর নদীর পাড়ের কাজী বুলবুল, বুদ্ধমিয়া হাজী, পৌরসভার আরও একটি নালা, নদের পাড়ের শফি, আলী হোসেন, মাসুদ, পৌরসভার আরেকটি নালা, স্থানীয় হেমায়েত শেখ রপ্তম শেখ ও কাজী আবুল হোসেন নদ দূষণের তালিকায় রয়েছে।

আর নদের পাড়ের শ্মশান রোডের মিজানুর রহমান, স্থানীয় পৌরসভার নালা, ঝুমঝুমপুর বলিয়াডাঙ্গার রুহুল আমিন, মনিরুজ্জামান, আকরাম হোসেন, শাহাদত, সুবলর মাছের কারখানা, স্থানীয় লালন ভূঁইয়া, বদিউর রহমানের স্ত্রী ফরিদা, সাইফুল ইসলাম, মাসুদ রানা, কালাম মিয়া, আব্দুল কাদের, স্থানীয় মসজিদ, রাশিদা বেগম, ইকবালের গরুর খামার, মিলন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় একটি নালা, মান্নান শেখ, পৌরসভার নালা ও কৃষ্ণ বিশ্বাস সমানতালে নদ দূষণ করে চলেছেন।

অপরদিকে নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর খান, শহিদুল, আফিয়া বেগম, আসকার মুন্সি, সৈয়দ রাশেদুল, মুজিবর ব্যাপারী, সোহেল, আমিরুল মোল্লা, শেখ আব্দুর রহিম দূষণকারী তালিকায় রয়েছেন।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার মাসিক উন্নয়ন কমিটির সভায় ভৈরব নদ দূষণকারীদের তালিকা তুলে ধরেছি। জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’

যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘ভৈরব নদ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুতই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত