Ajker Patrika

নারী নির্যাতকদের রুখতেই হবে

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ০৯: ৫৪
নারী নির্যাতকদের রুখতেই হবে

বছরখানেক আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে স্ত্রী নির্যাতনের হারে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এটা নিশ্চয়ই কোনো গৌরবের বিষয় নয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের ৫০ শতাংশই জীবনে কখনো না কখনো স্বামী বা সঙ্গীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গত এক বছরে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়েছে বলে মনে হয় না।

প্রতিদিনের দৈনিক পত্রিকায়ই নারী নির্যাতন বা নারীর প্রতি সহিংসতার এক বা একাধিক খবর থাকে। এর কোনো কোনো খবর পড়ে হতবিহ্বল হয়ে পড়তে হয়। মানুষ কীভাবে এতটা হিংস্র ও নির্দয় হয়ে উঠেছে, তা ভেবে আতঙ্কিত হতে হয়। মঙ্গলবারের ‘আজকের পত্রিকা’র প্রথম পাতায় খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী ও তার চেয়ে বড় তারই এক খালাতো বোন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের আগে বড় বোনের এক বছর বয়সী কন্যার গলায় ছুরি ধরে ও আছাড় মেরে দুর্বৃত্তরা ভয় দেখায়। তাদের বসতবাড়ির ঘরে ঢুকেই এই দুর্বৃত্তরা ওই দুই বোনকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে, অন্যদেরও ধরার চেষ্টা চলছে। কিন্তু অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে কি না, তা বলা যাবে না।

মঙ্গলবারে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত অন্য একটি খবর থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে ১৭টি দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারী নির্যাতনকারীকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে প্রান্তিক নারীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যেকোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক নারীরা যাতে অবাধে নিজের মতামতের ভিত্তিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ নারীবান্ধব করা। দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন সিইসি।

নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মহিলা পরিষদের দাবিগুলো গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আইন ও বিধিবিধান প্রণয়ন নয়, প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার। রাজনৈতিক দলগুলো মুখে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেও বাস্তবে নারীবান্ধব মনোভাবের পরিচয় দেয় না। তার বড় প্রমাণ রাজনৈতিক দলের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার বিধান কার্যকরে অনীহা। এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের সময় রাজনৈতিক দলের সকল পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার বিধান করা হয়েছিল। তাতে ২০২০ সালের মধ্যে এই কোটা পূরণ করার শর্ত ছিল। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয়নি।

এই যে রাজনৈতিক দলগুলো শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হলো, এর জন্য তাদের কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু হলে নারীর প্রতি সহিংসতাও কমতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত