সড়কে শত কোটি টাকার ক্ষতি

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২২, ০৭: ০২
আপডেট : ২৭ মে ২০২২, ১৪: ৩১

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সুনামগঞ্জে সড়ক, বসতভিটা ও মাছের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার অভ্যন্তরীণ ও উপ-আঞ্চলিক সড়কের অনেক স্থান ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কবে সড়কগুলো সংস্কার হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি দ্রুত সড়ক সংস্কার করার।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, হাওর অধ্যুষিত জনপদ সুনামগঞ্জে প্রতিবছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়ক, বসতভিটা ও মাছের খামার। তবে এসব ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে তেমন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ২০২০ সালের বন্যায় সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের কাঠাখালি নামক স্থানে একটি সেতু ভেঙে গেলেও প্রায় দুই বছর পর কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের।

বন্যায় বোরো, মৎস্য খামার ও সড়কের ২০০ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনো লোকালয়ে পানি থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুরোপুরি নিরূপণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, চলতি বন্যায় সুনামগঞ্জের অভ্যন্তরীণ তিনটি সেতু, একটি রাবার ড্যাম্পের বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। অন্তত ২০টি সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। জেলায় এলজিইডির অধীন ৫৫২ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার।

সুনামগঞ্জ দোয়ারাবাজার ছাতক সড়কের রামপুর এলাকার একটি পাকা সেতু বন্যার পানির তোড়ে সম্পূর্ণ ধসে যায়। বর্তমানে ছাতক উপজেলা থেকে সুনামগঞ্জ সদর পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ বিকল্প পথে যাতায়াত করছে।

এদিকে ২০২০ সালে ২৯ জুলাই বন্যায় ধসে পড়ে দোয়ারাবাজার-সুনামগঞ্জ সড়কের কাঠাখালি সেতু। সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই বছর পার হলেও সেতুটি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। এতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

জেলা শহরের সঙ্গে দোয়ারাবাজার উপজেলার তিন ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এ সড়ক। জেলা শহর থেকে সরাসরি দোয়ারাবাজার, ছাতক উপজেলায় যাতায়াত করে লক্ষাধিক মানুষ। বর্তমানে সড়ক ও সেতুর যে ক্ষতি হয়েছে, তা কবে সংস্কার হবে তা নিয়ে চিন্তিত স্থানীয়রা।

দোহালিয়া গ্রামের জমির উদ্দিন বলেন, ‘দুই বছর আগে এই সড়কের একটি সেতু ভেঙেছে। ওটাই এখন পর্যন্ত ঠিক করছে না। আর ওখন যে আরেকটা ভাঙল, ইটা যে কবে ঠিক হইব আল্লাহ জানেন।’

রামপুর গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সোহেল আহমদ বলেন, ‘আমরা এই সড়ক দিয়াই যাত্রী নিয়া চলাচল করি। এইটা আমরার সিএনজি চলাচলের নির্ধারিত সড়ক। ওখন সেতু ভাইঙ্গা গেল। আমরার রুজি রোজগাড়ও কমব।’

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় ৭টি সড়কের প্রায় ৭৫ কিলোমিটারের ক্ষতি হয়েছে, যা প্রায় ৫৫ কোটি টাকা।

এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেসব সড়ক ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নিরূপণ করা হয়েছে। আরও কিছু সড়ক হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ এখনো লোকালয়ে পানি রয়েছে। তবে আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের জন্য চাহিদা পাঠাব। অনুমোদন পেলেই সংস্কার শুরু হবে।’

২০২০ সালের বন্যায় ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আগের ক্ষতির কাজের দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করি। কিন্তু বন্যার কারণে আপাতত বন্ধ আছে।’

সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘সওজ দপ্তরের অধীনে যেসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ শুরু করেছি। আরও বৃহৎ আকারে সংস্কার করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে পত্র দিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণের ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত