পাখি দিয়ে পোকা দমন

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ২৩
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ২০

গঙ্গাচড়ায় আমন খেতে এখন সবুজের সমারোহ। ইতিমধ্যে অধিকাংশ জমিতে ধানের শিষ বেরিয়ে এসেছে। আর কিছুদিন পর কৃষকেরা ফসল গোলায় ওঠাবে। তাঁরা এই ধান চাষে পোকা দমনের ক্ষেত্রে কীটনাশকের পরিবর্তে পাখি দিয়ে ‘পার্চিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বেশ সুফল পাচ্ছেন। এতে যেমন কমে আসছে উৎপাদন খরচ, তেমনি রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ।

‘পার্চিং’ পদ্ধতিতে কৃষকেরা জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ না করে গাছের ডালপালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে পোকা দমন করছেন। একে ‘ডেথ পার্চিং’ পদ্ধতি বলে। এ ছাড়াও ধানখেতে ধঞ্চেগাছ অথবা পানিতে টিকে থাকতে পারে এমন গাছ লাগিয়ে পোকা দমন করা হয়। একে বলে ‘লাইভ পার্চিং’। এ ক্ষেত্রে ধঞ্চেগাছের পাতা জমিতে পড়ে তৈরি হয় জৈব সার। এতে জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়।

সরেজমিনে উপজেলার দক্ষিণ কোলকোন্দ, চেংমারী, বালারঘাট, হাবু, গজঘণ্টা বটতলা, বড়াইবাড়ী, মণ্ডলের হাট, সয়রাবাড়ি, চন্দনের হাট, নবনীদাস, মর্নেয়া, বড় রুপাই, চান্দামাড়ি ও ধামুরসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, কৃষকেরা ধানখেতে পোকা দমনে সারি সারি গাছের ডালপালা পুঁতে রেখেছেন। আবার অনেকে সারি করে ধঞ্চেগাছ লাগিয়ে পার্চিং পদ্ধতিতে খেতের পোকামাকড় দমন করছেন।

উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের আলেকিশামাত গ্রামের কৃষক সমছের আলী আজকের পত্রিকাকে জানান, আমন ধানখেতে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও ঘাস ফড়িংসহ বিভিন্ন পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করলেও অনেক সময় তা মরে না। ফসলের উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়। অন্যদিকে পার্চিং পদ্ধতির ফলে পাখি ডালে বসে ধানখেতের পোকা খেয়ে ফেলছে। এ পদ্ধতিতে পোকা দমনে খরচও নেই। ফলে ধান চাষে উৎপাদন খরচ কমে আসছে।

গজঘণ্টা জয়দেব চারমাথা গ্রামের কৃষক বাবলু মিয়া বলেন, ‘এক একর জমিতে আমন ধান লাগিয়েছি। পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি। আমার ধান খেতে পোকামাকড় লাগেনি। অথচ কীটনাশক ব্যবহার করতে গেলে বাড়তি প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হতো।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গঙ্গাচড়ায় ১৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে এবার ৮০ শতাংশ ধানখেতেই কৃষকেরা পার্চিং পদ্ধতির মাধ্যমে পোকা দমন করছেন। এটি একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতি প্রয়োগে ধানের উৎপাদন খরচ ও রোগবালাই কমেছে। সে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ রোধ হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ৮০ শতাংশ ধানখেতে লাইভ পার্চিং ও ডেথ পার্চিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। এর সুফল কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত