পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩৭ কৃষকের খেলাপি ঋণের বিষয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। গতকাল রোববার কমিটির সদস্যরা জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (পরিদর্শন) আহসানুল গণির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা শহরের এলএমবি মার্কেটে পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকের কার্যালয়ে যায়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপব্যবস্থাপক (পরিদর্শন ও আইন) আব্দুর রাজ্জাক ও সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রকল্প ঋণ) আমিনুল ইসলাম রাজীব।

তিনজন পরে ব্যাংকের পাবনা শাখা ব্যবস্থাপক কাজী জসিম উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে জেলা প্রশাসক রাসেল বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে রয়েছে। সুদ মওকুফ করার বিষয়টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেন তিনি, যাতে কোনো কৃষক হয়রানির শিকার না হন। জবাবে উপমহাব্যবস্থাপক আহসানুল জানান, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

আহসানুল জানান, তাঁরা আজ সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজিচাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঋণখেলাপি সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় তাঁরা পল্লী প্রকল্প ঋণগ্রহীতা সদস্যদের তথ্য পর্যালোচনা করবেন। পরে ঢাকায় গিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাবনা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ভাড়ইমারীর ৪০ কৃষক দলগত ঋণ হিসাবে ১৬ লাখ টাকা নেন। দীর্ঘদিনেও সেই ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২১ সালে ৩৭ কৃষকের নামে মামলা করে ব্যাংক। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে গত ২৫ নভেম্বর ১২ কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে ২৭ নভেম্বর পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক শামসুজ্জামান গ্রেপ্তার ১২ কৃষকসহ ৩৭ জনের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে ২৯ নভেম্বর কৃষকেরা সুদসহ ঋণের বাকি টাকা ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজিচাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য কৃষকদের পক্ষে বিলকিস নাহার এ-সংক্রান্ত আবেদন করেন।