Ajker Patrika

ফিশারিজে দুর্ভোগ, সাঁকোয় পার

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ফিশারিজে দুর্ভোগ, সাঁকোয় পার

পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ফিশারিজ। বৃষ্টি হলেই পানি হয়ে যায় কোমর সমান। এমন অবস্থায় বাড়ির চারপাশে পানি থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে ময়মনসিংহের ত্রিশালের মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী মধ্যপাড়া গ্রামের ৩০টি পরিবার। শুকনো রাস্তা না থাকায় চলাচলে তাদের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো।

ভুক্তভোগীরা জানান, পাঁচ বছরের বেশি সময় এ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ৩০ পরিবারের প্রায় ২০০ সদস্য। ভাটিতে পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা সৃষ্টি করে মাছ চাষ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাদের এ দুর্ভোগ শুরু। বাড়ির তিন দিকেই মাছ চাষের প্রজেক্ট করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন মাছচাষিরা। এতে জমে থাকছে পানি। এখানে বসবাস করা পরিবারগুলো তাদের শিশুসন্তান, বয়স্ক লোক ও গৃহপালিত পশু লালন-পালন নিয়ে পড়েছে বিপাকে।

তাঁদের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই চারদিকে বুক পরিমাণ পানি জমে থাকে। পানি উঠেছে শোয়ার ও রান্নাঘরে। কয়েক দিন পর পানি কমলেও খেতের আইল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না। এ স্থানে বসবাস করেন সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। ভুক্তভোগীরা এ ভোগান্তি থেকে মুক্তির পাশাপাশি তাঁদের বাড়ি পর্যন্ত একটি সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানান।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক মাস তেমন বৃষ্টি না হলেও বাড়ির চারদিকে কাদাপানি জমে রয়েছে। খেতের আইলগুলোতেও জমে আছে পানি। ছোট শিশুদের কোলে নিয়ে মায়েরা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চাল ও ধানের বস্তাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে পার হচ্ছেন সাঁকোটি। ছোট শিশুরা একরকম গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা পারুল আক্তার বলেন, ‘আশপাশের খাল-বিল, নদী শুকিয়ে রয়েছে; অথচ আমাদের চলতে হয় সাঁকোতে। মানুষ মরলেও লাশ দাফন করতে কাদাপানি মাড়িয়ে কবরস্থানে নিতে হয়। কিছুদিন আগেও একজনের লাশ দাফন করতে বুক সমান পানি মাড়িয়ে কবরস্থানে নিতে হয়েছে। এই দুর্ভোগের জন্য ভালো জায়গায় বিয়ে করাতে ও দিতেও পারি না।’

শিশু শিক্ষার্থী তাওহীদ, জনি, ইস্রাফিলসহ আরও কয়েকজন বলে, বাড়ির চারদিকে পানি জমে থাকায় স্কুলে যেতে অসুবিধা হয়। সাঁকো পার হয়ে কাদাপানির ভয়ে স্কুলে যাওয়া হয় না।

আজাহার নামে এক বয়স্ক ব্যক্তি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘সামনের কোনো নির্বাচনেই আর ভোট দেব না। ভোট দিলেই কী? আমাদের তো কোনো লাভ হয় না। বছরের অর্ধেক সময় পানিবন্দী হয়ে থাকছি। বাড়িতে যাতায়াতের জন্য একটা রাস্তা করার উদ্যোগও কেউ নেয়নি।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পেয়েই তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি জেনেছি। তারা খুব কষ্টে আছে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুছ মণ্ডল বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা দিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করায় ওই এলাকার প্রায় ২০০ মানুষের এই দুর্ভোগ। আলোচনা করে শিগগির তাদের জন্য একটি রাস্তা করে দেব।’

জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী ফিশারিজ মালিক স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে হোসাইন প্রিন্সের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে আগে কেউ অভিযোগ দেয়নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত