ধানখেতে উদ্ধার সেই শিশুর জন্য ঈদের নতুন পোশাক

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০৩
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ০৮

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ধানখেত থেকে উদ্ধার এবং পরে ঠাঁই হওয়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠান ঢাকার আজিমপুরে ছোটমনি নিবাসের সেই নবজাতকের বয়স এখন ৫ মাস ১১ দিন। সে এখন মা-বাবার সঙ্গে নিজেদের বাড়িতেই থাকে। সেখানে সে ভালো আছে। গতকাল সোমবার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইউনুস রহমান শিশুটির জন্য ঈদের নতুন পোশাক নিয়ে তাকে দেখতে বাড়িতে যান।

জানা গেছে, গত বছরের ৭ নভেম্বর বিকেলে কেন্দুয়া পৌরসভার আদমপুর এলাকার একটি ধানখেত থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে সে বেশ কয়েক দিন কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিল। একপর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কর্মকর্তার দপ্তরের উদ্যোগে শিশুটির প্রকৃত অভিভাবকের খোঁজে এলাকায় মাইকিং ও প্রচার চালানো হলে পুলিশি তদন্তে শিশুটির অভিভাবকের খোঁজ মেলে। তবে নবজাতককে নিজেদের বলে স্বীকার করলেও ওই দম্পতি তাকে নিতে রাজি হননি। পরে পুলিশ বাদী হয়ে শিশুটির প্রতি নিষ্ঠুরতার অপরাধে বাবা-মাসহ চারজনের নামে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা করে। গ্রেপ্তার দম্পতিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারেও পাঠানো হয়। একই সঙ্গে শিশুটির প্রকৃত অভিভাবক নির্ধারণের জন্য নবজাতক ও গ্রেপ্তার দম্পতির ডিএনএ পরীক্ষারও নির্দেশ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠান ঢাকার আজিমপুরে ছোটমনি নিবাসে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরিতে ওই নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। তা ছাড়া গ্রেপ্তার দম্পতিরও ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা নেওয়া হয়।

একপর্যায়ে গ্রেপ্তার ওই দম্পতি শিশুটিকে নিতে রাজি হন। আদালতের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কর্মকর্তার দপ্তরের সহায়তায় ঢাকার আজিমপুরে ছোটমনি নিবাস থেকে ওই নবজাতক ছেলেটিকে তার প্রকৃত অভিভাবক মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে শিশুটি মা-বাবার সঙ্গে বাড়িতেই আছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইউনুস রহমান শিশুটিকে দেখতে তাদের বাড়ি যান। এ সময় তিনি শিশুটির সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়ার পাশাপাশি তাকে কোলে নিয়ে আদর করেন। সেই সঙ্গে শিশুটির জন্য ঈদের নতুন পোশাক উপহার দেন। এ সময় শিশুটির মা ও দাদিসহ প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ইউনুস রহমান বলেন, ‘শিশুটির সার্বিক খোঁজ-খবর নিতেই তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে খুবই আদর-যত্নে বড় করছেন। সেখানে সে ভালো আছে। এ ছাড়া যে কোনো ধরনের সহযোগিতা ও প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্যও শিশুটির অভিভাবকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত