Ajker Patrika

মাগুরায় হাসপাতালে শয্যার দ্বিগুণ রোগী

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
মাগুরায় হাসপাতালে শয্যার দ্বিগুণ রোগী

মাগুরায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে জেলার নানা প্রান্ত থেকে। বাড়তি রোগীর চাপে হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে শিশুদের।

গতকাল সোমবার মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, শিশু রোগীর সংখ্যা ১৫২। হাসপাতালের নতুন ভবনের চারতলায় বেশির ভাগ রোগী মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ভবনে শিশু ওয়ার্ডের মোট বরাদ্দ শয্যা রয়েছে ১০টি। খাতাকলমে শয্যা বেশি হলেও লোকবলের অভাবে সব চালু করা যায়নি বলে জানা গেছে।

শয্যার অভাবে মেঝে ঠান্ডা থাকলেও চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে শিশুদের। কেউ এসেছে ঠান্ডা-জ্বর নিয়ে, কেউবা পাতলা পায়খানার সমস্যা নিয়ে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এর মধ্যে ৩২ শিশু। ঠান্ডা-জ্বর নিয়ে ৫৬ এবং পাতলা পায়খানা ও কলেরায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৪। অন্যান্য সমস্যায় কিছু শিশু ভর্তি আছে। তবে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৬৫ শিশু রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে বলে হাসপাতাল থেকে জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা পরপর শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রায় ৮০টি। বেশির ভাগ পাতলা পায়খানা থেকে শুরু করে ঠান্ডাজনিত নিউমোনিয়ার সমস্যা নিয়ে এরা ভর্তি হচ্ছে। এক মাস থেকে দুই বছরের শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। হাসপাতালে প্রতি ৮ ঘণ্টার সেবিকা দায়িত্ব পালন করছেন ১৪ থেকে ১৬ জন। তবে চিকিৎসক-সংকট রয়েছে আগে থেকেই।

সদরের বেরইল পলিতা থেকে তিন মাসের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন লুবনা খাতুন। তিনি বলেন, ‘গত রোববার বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। মেয়ের ৪ দিন ধরে জ্বর আর পাতলা পায়খানা। ডাক্তার ভর্তি করে দিয়েছেন। এখন মেয়ের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।’ চারতলায় শিশু ওয়ার্ডের বেশির ভাগ রোগীর মা ও স্বজনেরা জানালেন, তাঁরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ডাক্তার একবেলা আসে তো অন্য বেলায় পাওয়া যায় না। সেবিকারাই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি তীব্র ঠান্ডায় শিশু রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকে বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে বলে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ সেবিকা বলেন, হাসপাতালে তীব্র ডাক্তার-সংকট। বিশেষ করে সব সময় চিকিৎসা দেওয়ার মতো ডাক্তার নেই। রাতের বেলায় হাসপাতালের ৪০০-৫৫০ রোগীর ভরসা জরুরি বিভাগের ডাক্তার। ফলে অচলাবস্থা রয়েছে।

শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক জুনিয়র কনসালট্যান্ট তানভির ইসলাম বলেন, ‘রোগীর চাপ বাড়ছে। যত ঠান্ডা পড়বে, ততই রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। এখন ঠান্ডা, জ্বর থেকে নিউমোনিয়া কলেরায় আক্রান্ত রোগী বেশি দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসাসেবা আমরা দিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া চিকিৎসক-সংকট তো আগে থেকেই রয়েছে। সব সীমাবদ্ধতার মাঝে আমরা চেষ্টা করছি সব রোগী যেন ঠিকমতো সেবাটা পায়।’

মাগুরা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ‘মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে খাতাকলমে ১০টি বেড দিয়ে চলছে।২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখনো লোকবল কম থাকায় চালু করা যায়নি। এখন শিশুরা নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শীতের এই সময়ে এটা বাড়তে থাকে। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় শয্যার পাশাপাশি মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত