স্বপ্না রেজা
ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকার কেন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকবার অভিপ্রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয়, এমন প্রশ্নের জবাব আশা করি সবার কাছে পরিষ্কার। অন্তত ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালে পরিষ্কার জবাব মিলবে। ছাত্রদের কারা কীভাবে ব্যবহার করেছে দলীয় স্বার্থে, বিনিময়ে ছাত্রদের ভাগ্যে কী জুটেছে, তার সাধারণ সহজ হিসাব অনেক তথ্য দিতে পারে, দিয়ে আসছে। কিংবা যারা এমন কাজে সম্পৃক্ত থেকেছে তারাই ভালো বলতে পারে, তারা আদতে কী পেয়েছে এবং কিসের আশায় তারা ব্যবহৃত হতে চায় বা চেয়েছে। তবে দ্বিধাহীনভাবে বলা যায় যে এমন কর্মকাণ্ডে অনেক ছাত্র পড়াশোনা থেকে বিমুখ হয়ে পড়েছে, পড়ছে এবং শিক্ষা অঙ্গনে অনেক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। ছাত্র কর্তৃক ছাত্র হত্যার মতো নির্মম ঘটনা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ভয়াবহ প্রভাব ও প্রতিপত্তির ফল এবং যেটা বহুবার ঘটেছে বলা যায় সব রাজনৈতিক সরকারের আমলে। এমন অনেক নজির সব রাজনৈতিক সরকারের আমলেই রয়েছে।
সম্প্রতি ছাত্র-জনতার যে গণ-অভ্যুত্থান এবং তার ফলে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলো, তাতে দেখা গেল যে একই সময়ে সব কটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা লাগাতারভাবে পদত্যাগ করেছেন। পরিষ্কার যে সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের এই পদত্যাগের হিড়িক। অর্থাৎ তাঁরা যে রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন এবং রাজনৈতিক সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে শিক্ষাঙ্গনকে পরিচালিত করতেন এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতেন, এই পদত্যাগে সেটাই পরিষ্কার হয়েছে। এটা না বললেই নয় যে দলীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া—সব রাজনৈতিক সরকার আমলের একটা সাধারণ ঘটনা বৈকি। বলাবাহুল্য যে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁরা কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন বা যোগ্যতায় নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারেন সেটা রাজনৈতিক সরকারের কখনোই বিবেচ্য বিষয় হয়ে থাকে না। বরং বিবেচনার মুখ্য হয়ে ওঠে, তাঁরা কতটা রাজনৈতিক দলের পক্ষ হয়ে কাজ করতে পারেন বা পারবেন। সোজা কথায়, তাঁরা রাজনৈতিক দলের ‘দালালির’ কাজে কতটা আন্তরিক হবেন, সক্রিয় থাকবেন, সেই বিবেচনাই থাকে মুখ্য। ফলে আমাদের দেখতে হয়, শিক্ষা নয়, রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থ হাসিলে এই নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজ করছেন, করে গেছেন এবং বর্তমানে একই ধারায় নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তাঁরাও সেই কাজটিই করে যাবেন।
যাহোক, যেহেতু তাঁদের নিয়োগ প্রদানকারী সরকারের পতন হয়েছে, সেহেতু তাঁরা আর ক্ষমতায় থাকার যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি কিংবা ক্ষমতায় থাকাকে ঝুঁকিমুক্ত মনে করেননি, নির্বিঘ্নে পদত্যাগ করেছেন। আবার এ-ও শোনা গেছে যে কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে উপাচার্যরা ও তাঁদের সহকারীরা পদত্যাগ করেছেন বা করতে বাধ্য হয়েছেন। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে বেশ কিছু আপত্তিকর ঘটনার সংবাদও আমরা পেয়েছি, যা কাম্য ছিল না। ছাত্র কর্তৃক শিক্ষকদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও প্রকাশ পেয়েছে, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক, হতাশার ও আশঙ্কাজনক। আশঙ্কাজনক এ কারণে যে শিক্ষকদের প্রতি ছাত্রদের যে শ্রদ্ধামূলক আচরণ থাকার কথা, সেটা যেন নেই। প্রায় বিলুপ্ত মনে হয়েছে এবং এটা করে গেছে রাজনৈতিক সরকার ও তার দলীয় অঙ্গসংগঠন। পরিবারকেও তার দায় থেকে সরিয়ে রাখা যায় না। পারিবারিক শিক্ষা যে নৈতিকতা বোধ ব্যক্তির ভেতর জাগাতে পারে, ন্যায়সংগত আচরণ শেখাতে পারে তা সমাজের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান পারে না।
পৃথিবীতে এমন নজির আছে কি না আমার জানা নেই যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লাগাতারভাবে দলীয়করণ করা হয় বা হয়েছে, যেটা বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক সরকার আমলেই কমবেশি করা হয়েছে। রাষ্ট্রের সব বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে গণ-অভ্যুত্থান এবং অর্জন, তার সাফল্য কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে দৃশ্যমান হতে হবে। যেটা সম্ভব হতে পারে তাদের বিচক্ষণতায় ও নির্ভুল কর্মপরিকল্পনায়। প্রথমেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগ্য, দক্ষ ও উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে উপাচার্য, শিক্ষক কিংবা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে এবং যাঁদের অবশ্যই ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে সমাজ, রাষ্ট্র এবং সর্বোপরি শিক্ষাঙ্গনে। একজন অভিভাবক বলছিলেন, দলীয় রাজনীতি যেন সবাইকে ধ্বংস করে গেছে প্রতিনিয়ত। বিবেক, চেতনা নেই। লোভ আর স্বার্থ চারপাশ। পেশাগত দায়িত্বের চেয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থপরতার অবিরত চাষাবাদ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
আর শিক্ষাব্যবস্থা বারবার অবহেলিত হয়েছে নানা কৌশল ও উপায়ে। এই সরকার যদি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দৃষ্টি না দেয়, তাহলে অতীত অভিজ্ঞতারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে অনেকেই মনে করছে। বিশেষ করে উপাচার্যসহ সব নিয়োগের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া দরকার। যদিও সরকারের অবস্থান নিয়ে অনেকের ভেতর আবার কমবেশি মিশ্র সংশয় ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই শ্রেণি মনে করছে, যেভাবে ও যে কৌশলে রদবদল করা হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতে বিচক্ষণতার কোনো সুযোগ থাকছে কি না তা দেখা দরকার। প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে গিয়ে সরকারকে কাজ করতে হবে। তা না হলে একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। অতীতে যা হয়েছে, তা তাঁরা আর দেখতে চান না। তাঁরা মনে করেন ব্যক্তির চেয়ে প্রক্রিয়ার সংস্কার জরুরি, যা হবে প্রকৃতার্থে শিক্ষাবান্ধব। সঠিক প্রক্রিয়া ও বিধিই পারে ব্যক্তির দায়বদ্ধতা জাগ্রত করতে।
শোনা গেছে, অনেক শিক্ষক উপাচার্য হওয়ার বাসনায় ছাত্রদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নিজেদের মোটাসোটা অভিজ্ঞতার দলিলসহ। এই বিষয়ে ছাত্রদের ক্ষমতাধর মনে করাটা ছাত্রদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে কি না, ভেবে দেখতে হবে। বিষয়টা সত্য হলে মোটেও ভালো লাগার নয়। কেননা ইতিপূর্বে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো এ ধরনের কার্যকলাপে জড়িত থাকত। এমন চর্চা প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। ছাত্ররা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যেন উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, কোনো ধরনের নৃশংসতার সুযোগ যেন না থাকে, নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার। শিক্ষাঙ্গন বাংলাদেশের শিক্ষিত ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক উপহার দেবে, এই মানসিকতা ও অঙ্গীকার থাকতে হবে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবার এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের। ছাত্রদের ব্যবহার করে ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধার যেন আর না হয়—অভিভাবকসহ সব জনগণের সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকার কেন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকবার অভিপ্রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয়, এমন প্রশ্নের জবাব আশা করি সবার কাছে পরিষ্কার। অন্তত ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালে পরিষ্কার জবাব মিলবে। ছাত্রদের কারা কীভাবে ব্যবহার করেছে দলীয় স্বার্থে, বিনিময়ে ছাত্রদের ভাগ্যে কী জুটেছে, তার সাধারণ সহজ হিসাব অনেক তথ্য দিতে পারে, দিয়ে আসছে। কিংবা যারা এমন কাজে সম্পৃক্ত থেকেছে তারাই ভালো বলতে পারে, তারা আদতে কী পেয়েছে এবং কিসের আশায় তারা ব্যবহৃত হতে চায় বা চেয়েছে। তবে দ্বিধাহীনভাবে বলা যায় যে এমন কর্মকাণ্ডে অনেক ছাত্র পড়াশোনা থেকে বিমুখ হয়ে পড়েছে, পড়ছে এবং শিক্ষা অঙ্গনে অনেক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। ছাত্র কর্তৃক ছাত্র হত্যার মতো নির্মম ঘটনা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ভয়াবহ প্রভাব ও প্রতিপত্তির ফল এবং যেটা বহুবার ঘটেছে বলা যায় সব রাজনৈতিক সরকারের আমলে। এমন অনেক নজির সব রাজনৈতিক সরকারের আমলেই রয়েছে।
সম্প্রতি ছাত্র-জনতার যে গণ-অভ্যুত্থান এবং তার ফলে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলো, তাতে দেখা গেল যে একই সময়ে সব কটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা লাগাতারভাবে পদত্যাগ করেছেন। পরিষ্কার যে সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের এই পদত্যাগের হিড়িক। অর্থাৎ তাঁরা যে রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন এবং রাজনৈতিক সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে শিক্ষাঙ্গনকে পরিচালিত করতেন এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতেন, এই পদত্যাগে সেটাই পরিষ্কার হয়েছে। এটা না বললেই নয় যে দলীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া—সব রাজনৈতিক সরকার আমলের একটা সাধারণ ঘটনা বৈকি। বলাবাহুল্য যে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁরা কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন বা যোগ্যতায় নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারেন সেটা রাজনৈতিক সরকারের কখনোই বিবেচ্য বিষয় হয়ে থাকে না। বরং বিবেচনার মুখ্য হয়ে ওঠে, তাঁরা কতটা রাজনৈতিক দলের পক্ষ হয়ে কাজ করতে পারেন বা পারবেন। সোজা কথায়, তাঁরা রাজনৈতিক দলের ‘দালালির’ কাজে কতটা আন্তরিক হবেন, সক্রিয় থাকবেন, সেই বিবেচনাই থাকে মুখ্য। ফলে আমাদের দেখতে হয়, শিক্ষা নয়, রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থ হাসিলে এই নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজ করছেন, করে গেছেন এবং বর্তমানে একই ধারায় নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তাঁরাও সেই কাজটিই করে যাবেন।
যাহোক, যেহেতু তাঁদের নিয়োগ প্রদানকারী সরকারের পতন হয়েছে, সেহেতু তাঁরা আর ক্ষমতায় থাকার যৌক্তিকতা খুঁজে পাননি কিংবা ক্ষমতায় থাকাকে ঝুঁকিমুক্ত মনে করেননি, নির্বিঘ্নে পদত্যাগ করেছেন। আবার এ-ও শোনা গেছে যে কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে উপাচার্যরা ও তাঁদের সহকারীরা পদত্যাগ করেছেন বা করতে বাধ্য হয়েছেন। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে বেশ কিছু আপত্তিকর ঘটনার সংবাদও আমরা পেয়েছি, যা কাম্য ছিল না। ছাত্র কর্তৃক শিক্ষকদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও প্রকাশ পেয়েছে, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক, হতাশার ও আশঙ্কাজনক। আশঙ্কাজনক এ কারণে যে শিক্ষকদের প্রতি ছাত্রদের যে শ্রদ্ধামূলক আচরণ থাকার কথা, সেটা যেন নেই। প্রায় বিলুপ্ত মনে হয়েছে এবং এটা করে গেছে রাজনৈতিক সরকার ও তার দলীয় অঙ্গসংগঠন। পরিবারকেও তার দায় থেকে সরিয়ে রাখা যায় না। পারিবারিক শিক্ষা যে নৈতিকতা বোধ ব্যক্তির ভেতর জাগাতে পারে, ন্যায়সংগত আচরণ শেখাতে পারে তা সমাজের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান পারে না।
পৃথিবীতে এমন নজির আছে কি না আমার জানা নেই যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লাগাতারভাবে দলীয়করণ করা হয় বা হয়েছে, যেটা বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক সরকার আমলেই কমবেশি করা হয়েছে। রাষ্ট্রের সব বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে গণ-অভ্যুত্থান এবং অর্জন, তার সাফল্য কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে দৃশ্যমান হতে হবে। যেটা সম্ভব হতে পারে তাদের বিচক্ষণতায় ও নির্ভুল কর্মপরিকল্পনায়। প্রথমেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগ্য, দক্ষ ও উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে উপাচার্য, শিক্ষক কিংবা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে এবং যাঁদের অবশ্যই ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে সমাজ, রাষ্ট্র এবং সর্বোপরি শিক্ষাঙ্গনে। একজন অভিভাবক বলছিলেন, দলীয় রাজনীতি যেন সবাইকে ধ্বংস করে গেছে প্রতিনিয়ত। বিবেক, চেতনা নেই। লোভ আর স্বার্থ চারপাশ। পেশাগত দায়িত্বের চেয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থপরতার অবিরত চাষাবাদ হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
আর শিক্ষাব্যবস্থা বারবার অবহেলিত হয়েছে নানা কৌশল ও উপায়ে। এই সরকার যদি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দৃষ্টি না দেয়, তাহলে অতীত অভিজ্ঞতারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে অনেকেই মনে করছে। বিশেষ করে উপাচার্যসহ সব নিয়োগের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া দরকার। যদিও সরকারের অবস্থান নিয়ে অনেকের ভেতর আবার কমবেশি মিশ্র সংশয় ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই শ্রেণি মনে করছে, যেভাবে ও যে কৌশলে রদবদল করা হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতে বিচক্ষণতার কোনো সুযোগ থাকছে কি না তা দেখা দরকার। প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে গিয়ে সরকারকে কাজ করতে হবে। তা না হলে একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। অতীতে যা হয়েছে, তা তাঁরা আর দেখতে চান না। তাঁরা মনে করেন ব্যক্তির চেয়ে প্রক্রিয়ার সংস্কার জরুরি, যা হবে প্রকৃতার্থে শিক্ষাবান্ধব। সঠিক প্রক্রিয়া ও বিধিই পারে ব্যক্তির দায়বদ্ধতা জাগ্রত করতে।
শোনা গেছে, অনেক শিক্ষক উপাচার্য হওয়ার বাসনায় ছাত্রদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নিজেদের মোটাসোটা অভিজ্ঞতার দলিলসহ। এই বিষয়ে ছাত্রদের ক্ষমতাধর মনে করাটা ছাত্রদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে কি না, ভেবে দেখতে হবে। বিষয়টা সত্য হলে মোটেও ভালো লাগার নয়। কেননা ইতিপূর্বে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো এ ধরনের কার্যকলাপে জড়িত থাকত। এমন চর্চা প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। ছাত্ররা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যেন উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, কোনো ধরনের নৃশংসতার সুযোগ যেন না থাকে, নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার। শিক্ষাঙ্গন বাংলাদেশের শিক্ষিত ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক উপহার দেবে, এই মানসিকতা ও অঙ্গীকার থাকতে হবে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবার এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের। ছাত্রদের ব্যবহার করে ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধার যেন আর না হয়—অভিভাবকসহ সব জনগণের সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৩ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে