মো. আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)
স্বামীর অপমান ও অবহেলা সইতে না পেরে নিজের মতো করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কৃষিকে কেন্দ্র করে জীবনযুদ্ধে সফল হয়েছেন এই নারী। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের চরপেচাই গ্রামের এই নারীর নাম আকলিমা বেগম। বয়স চল্লিশ বছর। তিন সন্তানের জননী।
মা-বাবা মরা আকলিমা ২০ বছর আগে প্রতিবেশী দিনমজুর তহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়েতে তেমন কিছুই উপঢৌকন না পাওয়ায় ক্ষোভের অন্ত ছিল না তহিদুলের। দিনমজুরি করে সংসার চলত। অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াবিবাদ চলত। শারীরিক নির্যাতন করতেও ছাড়তেন না তহিদুল। দিনে দিনে সংসার বাড়ে। জন্ম নেয় একের পর এক তিনটি সন্তান। বাড়তে থাকে ঝগড়াবিবাদ। এরপরও আকলিমা স্বামীর সংসারে মুখ বুজে সহ্য করেন সবকিছু।
কিন্তু বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে অন্য এক নারীকে বিয়ে করে নতুন সংসার পাতেন তহিদুল। এরপরও টানা দুই বছর তাঁর পথ চেয়ে থাকেন আকলিমা। এর মাঝে একদিনও স্ত্রী-সন্তানদের খোঁজখবর নেননি তহিদুল। এভাবেই কেটে যায় আরও পাঁচ বছর। এই পাঁচ বছর আকলিমা মজুরি, ঝিয়ের কাজ করে ছেলেমেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেন। উপায় না পেয়ে একপর্যায়ে স্বামীর ভিটা ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে ভাই শহিদুলের বাড়িতে ওঠেন আকলিমা।
তিন সন্তানের মুখে আহার তুলে দিতে দিনমজুরি শুরু করেন। কিন্তু অভাব ফুরায় না। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। একসময় কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে জীবনযুদ্ধে নামেন আকলিমা। ভাইয়ের সহযোগিতায় চরপেচাই এলাকার জনৈক কুদ্দুস আলী ও জয়নুল হকের তিন বিঘা জমি বর্গা নেন তিনি। কিন্তু জমি চাষবাসে টাকা পাবেন কোথায়। বাধ্য হয়ে স্থানীয় একটি এনজিওর সদস্য হন। দুই মাস পর ঋণ পান ১০ হাজার টাকা। বর্গার জমি তিন ভাগের এক ভাগ চুক্তিতে নিজের শ্রমে শুরু করেন পর্যায়ক্রমে বাদাম, ভুট্টা ও ধান চাষ। তাঁর এ কাজে সহায়তা করেন বড় ছেলে রায়হান (১৮)।
প্রথমে আকলিমা ভাগে ৫ মণ বাদাম, ১০ মণ ধান ও ১২ মণ ভুট্টা পান। সংসার খরচের জন্য রেখে বাকি ফসল বিক্রি করেন ২০ হাজার টাকায়। ঋণ শোধ করে বাকি টাকা দিয়ে আরও জমি বর্গা নেন। এভাবে তিনি পাঁচ বছর ধরে সন্তানের ভরণপোষণ ও পড়ালেখার খরচ চালিয়ে অনেকটা সচ্ছলভাবে জীবন নির্বাহ করে বেশ কিছু টাকা জমান।
এ বছরও আকলিমা বেগমের বাদাম ও ধানের ফলন ভালো হয়েছে। অভাবের কারণে বড় ছেলে পড়াশোনা করতে না পারলেও দ্বিতীয় ছেলে রাকিবুল হাসান ও মেয়ে সোহেলী খাতুনকে শিক্ষিত করতে চান আকলিমা। এ কারণে কৃষিকাজের পাশাপাশি হাঁস, মুরগি ও ছাগলও লালনপালন করছেন তিনি। এতে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আয়ও বাড়ছে। এভাবেই মাঠে-ময়দানে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আকলিমা।
আকলিমা বলেন, ‘বেশি টাকা জমাতে না পারলেও সচ্ছলভাবে জীবন চলছে। স্বামী থেকেও নেই। অভাবের কারণে বড় ছেলে পড়াশোনা করতে পারেনি। বাকি দুই সন্তানকে পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই। জায়গাজমি না থাকলেও ভাইয়েরা আমার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। খোঁজখবর নেন। কৃষিকাজেও সহযোগিতা করেন। আমি এভাবেই আজীবন কৃষিকাজ করে তিন সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।’ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষিকাজের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা চান তিনি।
আকলিমার ভাই ফজর আলী জানান, তাঁর ছোট বোন খুবই পরিশ্রমী। তিন-চার বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলান। কোনো প্রকার মজুর নেন না। সব কাজ তিনি নিজেই করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, আকলিমার মতো নারীরা কৃষিকাজে এগিয়ে এলে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন আসবে। সেই সঙ্গে কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে নারীদের যেমন কৃষির ওপর আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, তেমনি বাড়বে কৃষির উৎপাদন। কৃষি বিভাগ থেকে আকলিমাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান নিলুফা ইয়াছমিন।
স্বামীর অপমান ও অবহেলা সইতে না পেরে নিজের মতো করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কৃষিকে কেন্দ্র করে জীবনযুদ্ধে সফল হয়েছেন এই নারী। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের চরপেচাই গ্রামের এই নারীর নাম আকলিমা বেগম। বয়স চল্লিশ বছর। তিন সন্তানের জননী।
মা-বাবা মরা আকলিমা ২০ বছর আগে প্রতিবেশী দিনমজুর তহিদুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়েতে তেমন কিছুই উপঢৌকন না পাওয়ায় ক্ষোভের অন্ত ছিল না তহিদুলের। দিনমজুরি করে সংসার চলত। অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াবিবাদ চলত। শারীরিক নির্যাতন করতেও ছাড়তেন না তহিদুল। দিনে দিনে সংসার বাড়ে। জন্ম নেয় একের পর এক তিনটি সন্তান। বাড়তে থাকে ঝগড়াবিবাদ। এরপরও আকলিমা স্বামীর সংসারে মুখ বুজে সহ্য করেন সবকিছু।
কিন্তু বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে অন্য এক নারীকে বিয়ে করে নতুন সংসার পাতেন তহিদুল। এরপরও টানা দুই বছর তাঁর পথ চেয়ে থাকেন আকলিমা। এর মাঝে একদিনও স্ত্রী-সন্তানদের খোঁজখবর নেননি তহিদুল। এভাবেই কেটে যায় আরও পাঁচ বছর। এই পাঁচ বছর আকলিমা মজুরি, ঝিয়ের কাজ করে ছেলেমেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেন। উপায় না পেয়ে একপর্যায়ে স্বামীর ভিটা ছেড়ে সন্তানদের নিয়ে ভাই শহিদুলের বাড়িতে ওঠেন আকলিমা।
তিন সন্তানের মুখে আহার তুলে দিতে দিনমজুরি শুরু করেন। কিন্তু অভাব ফুরায় না। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। একসময় কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে জীবনযুদ্ধে নামেন আকলিমা। ভাইয়ের সহযোগিতায় চরপেচাই এলাকার জনৈক কুদ্দুস আলী ও জয়নুল হকের তিন বিঘা জমি বর্গা নেন তিনি। কিন্তু জমি চাষবাসে টাকা পাবেন কোথায়। বাধ্য হয়ে স্থানীয় একটি এনজিওর সদস্য হন। দুই মাস পর ঋণ পান ১০ হাজার টাকা। বর্গার জমি তিন ভাগের এক ভাগ চুক্তিতে নিজের শ্রমে শুরু করেন পর্যায়ক্রমে বাদাম, ভুট্টা ও ধান চাষ। তাঁর এ কাজে সহায়তা করেন বড় ছেলে রায়হান (১৮)।
প্রথমে আকলিমা ভাগে ৫ মণ বাদাম, ১০ মণ ধান ও ১২ মণ ভুট্টা পান। সংসার খরচের জন্য রেখে বাকি ফসল বিক্রি করেন ২০ হাজার টাকায়। ঋণ শোধ করে বাকি টাকা দিয়ে আরও জমি বর্গা নেন। এভাবে তিনি পাঁচ বছর ধরে সন্তানের ভরণপোষণ ও পড়ালেখার খরচ চালিয়ে অনেকটা সচ্ছলভাবে জীবন নির্বাহ করে বেশ কিছু টাকা জমান।
এ বছরও আকলিমা বেগমের বাদাম ও ধানের ফলন ভালো হয়েছে। অভাবের কারণে বড় ছেলে পড়াশোনা করতে না পারলেও দ্বিতীয় ছেলে রাকিবুল হাসান ও মেয়ে সোহেলী খাতুনকে শিক্ষিত করতে চান আকলিমা। এ কারণে কৃষিকাজের পাশাপাশি হাঁস, মুরগি ও ছাগলও লালনপালন করছেন তিনি। এতে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আয়ও বাড়ছে। এভাবেই মাঠে-ময়দানে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আকলিমা।
আকলিমা বলেন, ‘বেশি টাকা জমাতে না পারলেও সচ্ছলভাবে জীবন চলছে। স্বামী থেকেও নেই। অভাবের কারণে বড় ছেলে পড়াশোনা করতে পারেনি। বাকি দুই সন্তানকে পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই। জায়গাজমি না থাকলেও ভাইয়েরা আমার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। খোঁজখবর নেন। কৃষিকাজেও সহযোগিতা করেন। আমি এভাবেই আজীবন কৃষিকাজ করে তিন সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।’ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষিকাজের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা চান তিনি।
আকলিমার ভাই ফজর আলী জানান, তাঁর ছোট বোন খুবই পরিশ্রমী। তিন-চার বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলান। কোনো প্রকার মজুর নেন না। সব কাজ তিনি নিজেই করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, আকলিমার মতো নারীরা কৃষিকাজে এগিয়ে এলে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন আসবে। সেই সঙ্গে কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে নারীদের যেমন কৃষির ওপর আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, তেমনি বাড়বে কৃষির উৎপাদন। কৃষি বিভাগ থেকে আকলিমাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান নিলুফা ইয়াছমিন।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১২ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে