Ajker Patrika

‘সরকার ক্লিনিক করি দেওয়ায় উপকার হইচে’

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ১৬: ০৯
‘সরকার ক্লিনিক করি দেওয়ায় উপকার হইচে’

‘দুই দিন থাকি গায়ে জ্বর, সর্দি। হামার গ্রামোত সরকার ক্লিনিক করি দেওয়ায় খুব উপকার হইচে। একনা অসুস্থ হইলে হামরা এটে আসি। ওষুধ নিয়া খাই। আল্লাহর রহমতে সুস্থ হই। শেখের বেটি প্রধানমন্ত্রীর জইন্যে দোয়া করি।’ কথাগুলো বলেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসতী রহমানপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ নিতে আসা রওশন আরা (৫০)।

রওশন আরার বাড়ি উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ধবলসতী গ্রামে। একই গ্রামের গৃহিণী পারভীন বেগম বলেন, ‘সব মানুষেরই উপকার হইচে। গরিব মানুষ হামরা। পাটগ্রাম শহরে গেইলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ডাক্তারের ভিজিট দিবার লাগত। দেরি হতো। ভাড়াও খরচ হয়। কমিউনিটি ক্লিনিক হওয়ায় সব দিক থাকি ভালো হইচে।’

পাটগ্রাম উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টিতে পূর্ণাঙ্গ দাপ্তরিক কাজ চলছে। নতুন ৩টিতে দাপ্তরিক কাজ চালুর প্রক্রিয়া চলছে। বিলুপ্ত ছিটমহলেও গড়ে উঠেছে ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রতিটি পুরোনো ক্লিনিকে রয়েছে দুটি পাকা কক্ষ। নতুনগুলোতে রয়েছে চারটি কক্ষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া ১০টি বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক একটি। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের মধ্যে সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তাঁর উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিককে গড়ে তোলা হয়েছে ডিজিটালাইজড বা অত্যাধুনিক করে। দেওয়া হয়েছে ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ। বিনা মূল্যে দেওয়া হয় প্রাথমিক প্রয়োজনীয় ওষুধ। দিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বাড়ছে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা। ক্লিনিকগুলোতে গর্ভবতী মায়েদের সেবা, শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা ধরনের সেবা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, প্রতিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন বিভিন্ন রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। প্রতি মাসে এক হাজার থেকে দেড় হাজার রোগী সেবা নেন।

‘শেখ হাসিনার অবদান কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ’ এ প্রতিপাদ্যে প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়োজিত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারে (সিবিএইচসি) কর্মরত এই সিএইচসিপিরা চাকরি স্থায়ীকরণ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন অতিবাহিত করছেন।

পাটগ্রাম ইউনিয়নের ধবলসতী রহমানপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ছাবেদ মাহমুদ লিটু বলেন, ‘যথানিয়মে ১১ বছর থেকে চাকরি করছি। প্রায়ই পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়। মানুষের সেবা দিচ্ছি। কিন্তু আমার সন্তান ও পরিবারকে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পারছি না। চাকরি করছি ঠিক, তবে ভবিষ্যৎ নাই।’ একই কথা বলেন উপজেলার ঘোনাবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ফেরদৌস আলম রিপন ও জগতবেড় ইউনিয়নের মুন্সিরহাট কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি শারমিন বেগম।

পাটগ্রাম ইউনিয়নের ধবলসতী রহমানপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি গ্রুপের সভাপতি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রাবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকা অবহেলিত। এখানে কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভালোই চলে। জনগণ যাতে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পায়, এ বিষয়ে সব সময় গ্রুপ খোঁজখবর ও দেখভাল করে।’

পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, সব কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি গ্রুপের কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যাতে যথাসময়ে খোলে, সিএইচসিপিরা মানুষের সেবা ভালোমতো দেন, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। প্রায় সময় পরিদর্শন করা হয়। ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত