গতকাল বুধবার ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৮টা ২০ মিনিট। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদ করিমের অফিস তালাবদ্ধ। তিন কোথায় জানতে চাইলে অফিস সহকারী বলেন, ‘স্যার, এখনো অফিসে আসেননি, পথে রয়েছেন।’ এ সময় শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘নতুন অফিস সূচির আজ প্রথম দিন। তাই একটু দেরি হয়ে গেছে।’

এ চিত্র অভয়নগর উপজেলার বেশির ভাগ সরকারি অফিসের। এখানে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকার নির্ধারিত সময়ে অফিস করছেন না। এমন অভিযোগ অনেক দিনের। অনেকে আবার নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিস ত্যাগ করেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদে সরেজমিনে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আশিকুর রহমানের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর কক্ষে ফ্যান চলছে। অথচ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তখনো অফিসে আসেননি। তিনি যশোর থেকে আসেন। মোবাইল ফোনে আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমার অফিসে আসতে ১০-১৫ মিনিট দেরি হবে। আপনি বসুন, চা খেয়ে যাবেন।’

উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তাকেও অফিসে দেখা যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমার এক স্টাফের ডেঙ্গু হয়েছে। তাঁকে দেখতে এসেছি।’

সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটেও উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস তালাবদ্ধ। একটু পর একজন এসে অফিস খোলেন। তিনি নিজেকে পিয়ন পরিচয় দিয়ে বলেন, সাইকেলের চাকা লিক হওয়ায় একটু দেরি হয়ে গেছে। অফিসের কেউ তখনো আসেননি। উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মিলন কুমার ঘোষ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি সার্ভের কাজে যশোরে আছি। ঘণ্টা খানেক পর অফিসে আসব।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসের প্রধান গেটের তালা পৌনে ৯টায়ও খোলা হয়নি। বাইরে কিছু সেবাগ্রহীতা বসে আছেন মাটিতে। এ সময় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি ট্রেনিংয়ে আছি।’

সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ঘাটতি পূরণে আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলোর অফিস সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করেছে। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ইউএনও মেজবাহ উদ্দীন জানান, উপজেলা পরিষদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরকার নির্ধারিত সময় মেনে অফিস করার নির্দেশ দেওয়া আছে। কেউ এ নির্দেশ অমান্য করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।