দুই বছরেই লক্ষাধিক ইঁদুর নিধন নজরুলের

এম মুরশীদ আলী, রূপসা
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২২, ০৭: ০৪
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ১১: ৩৮

রূপসার টিএসবি ইউনিয়ন স্বল্পবাহিরদিয়া গ্রামের কৃষক মো. নজরুল ইসলাম শেখ (৭৫) ২০১৯-২০২১ সাল পর্যন্ত ১ লাখ ১১ হাজার ১০০টি ইঁদুর নিধন করেছেন। ২০২১ সালের ইঁদুর নিধন অভিযানে নজরুল ইসলাম ৫০ হাজার ১৩৩টি ইঁদুর নিধন করেন এবং ৩০ হাজার লেজ জমা দেন। ২০১৭-২০১৮ সালে আঞ্চলিক পর্যায়ে ইঁদুর নিধনে নজরুল ইসলাম প্রথম স্থান লাভ করেন।

কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইঁদুর ফসল ও খেতের অনেক ক্ষতি করে। শুধু তা-ই নয়; গুদামজাত শস্য, ফল-শাকসবজির সংরক্ষিত বীজ, কাপড়-চোপড়, বই-পুস্তক, লেপ-তোশক ইত্যাদি কাটাকাটি করে। এসব দেখেই ইঁদুর নিধনে সম্পৃক্ত হই। ইঁদুর নিধন শুরু করার পর থেকে আমার ফসলের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। দিনে প্রায় দুই ঘণ্টা ইঁদুর নিধনের কাজ করি। ইঁদুর নিধনের পর খাতায় দিন ও তারিখ উল্লেখ করে ইঁদুরের সংখ্যা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে রাখি, কারণ কৃষি অফিস সর্বোচ্চ ইঁদুর নিধনকারীকে পুরস্কার দেয়।

রূপসা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিমাংশু রায় বলেন, ‘ইঁদুর নিধনের আগ্রহ থাকায় কৃষক নজরুল ইসলামকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে তিনি ইঁদুর নিধনে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শিউলী মজুমদার জানান, ইঁদুর যে শুধু ক্ষুধার তাড়নায় কাটাকাটি করে তা নয়, জিনগত কারণে এদের দাঁত বাড়তে থাকে। দাঁতের বৃদ্ধিকে সীমাবদ্ধ রাখতেও এরা দিনরাত বিভিন্ন জিনিসপত্র কাটাকাটি করে। ইঁদুর সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে কৃষকের ধান গাছের শিষ কাটে ও গোলায় ভর্তি সংরক্ষিত ধান খায় এবং নষ্ট করে। ফলে নষ্ট হয়ে যায় কৃষকের কষ্টের ফসল। এ কারণে ইঁদুর নিধন খুবই জরুরি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘রূপসার স্বল্পবাহিরদিয়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলামের ইঁদুর নিধন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাঁর দেখাদেখি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা ইঁদুর নিধনে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও ইঁদুর নিধন অভিযানে সব কৃষকদের সংশ্লিষ্ট করতে প্রতিবছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান চালানো হয়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত