নতুন মৌসুম কেমন হবে গার্দিওলার

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
Thumbnail image

অমরত্ব অনেক আগেই পেয়েছেন। জীবনের এত এত প্রাপ্তি, কবীর সুমনের মতো এখন তিনি বলতেই পারেন, ‘নেই কোনো দাবিদাওয়া’র মতো কথা। কিন্তু চাওয়ার কী শেষ আছে! পেপ গার্দিওলার কথাই ধরুন, ক্লাব ফুটবলে হেন কোনো শিরোপা নেই তাঁর হাতের স্পর্শ পায়নি। গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির আরাধ্য স্বপ্ন পূরণ করেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ এনে দিয়ে। ট্রেবল জয়ে গড়েছেন ইতিহাস। কিন্তু এই প্রাপ্তি যেন গার্দিওলার ক্ষুধাকে আরও চাঙা করে দিয়েছে। স্প্যানিশ কোচের লক্ষ্য এখন প্রাপ্তির গ্রাফটাকে ঊর্ধ্বমুখী করা।

সেই লক্ষ্যে আজ রাতে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে নেমে পড়ছেন লড়াইয়ে। ওয়েম্বলিতে কমিউনিটি শিল্ডে আর্সেনালের মুখোমুখি হবে গার্দিওলার শিষ্যরা। ২০২৩-২৪ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ শুরু হবে আগামী সপ্তাহে। তার আগে গানারদের সঙ্গে লড়াইটাকে শক্তির মহড়া বলায় যায়। গত মৌসুমে শিল্ড জেতা হয়নি, তবে পুরো মৌসুমে অভিজ্ঞ ধীবরের মতো ধীরে ধীরে যেভাবে জাল গুটালেন নিপুণ দক্ষতায়, তাতেই লেখা হলো নতুন ইতিহাস।

এবার কি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি না ভিন্ন কিছু—কেমন হবে গার্দিওলার নতুন মৌসুম? প্রায় প্রতি মৌসুমে নড়বড়ে শুরু হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভয়ংকর হয়ে ওঠে সিটি। সেটি আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন স্প্যানিশ কোচ, ‘প্রতি মৌসুমের শুরুতে আমাদের লড়াই করতে হয়, সেটা ঠিক। আশা করি, এবারও আমাদের মানসিকতা প্রতিযোগিতা করতে সাহায্য করবে।’

এবারও সিটির দুই ভরসা কেভিন ডি ব্রুইনা ও আলিং হলান্ডগত মৌসুমে তীরে এসে তরি ডোবায় লিগ জেতার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছিল আর্সেনাল। তবে এবার তারা বেশ ভালোভাবেই ঘর গোছাচ্ছে। গার্দিওলাও চুপ নেই। ইতিমধ্যে গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ১১৯.১০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে ফেলেছেন দুই খেলোয়াড় কিনতে। তার মধ্যে গতকাল জাসকো গাভারদিওলের সঙ্গে চুক্তি করেছে ৯০ মিলিয়ন ইউরোতে। প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি ডিফেন্ডার এখন এই ক্রোয়েশিয়ান।

তবে রিয়াদ মাহরেজ ও ইলকাই গুন্দোয়ানের অভাব কি ভোগাবে না সিটিকে? সৌদি প্রো লিগের অর্থের কাছে ছেড়ে দিতে হয়েছে মাহরেজকে। নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে গার্দিওলারই সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায় গেছেন গুন্দোয়ান। কাতালান জায়ান্টরা আনতে চায় বের্নার্দো সিলভাকেও। তবে পেপ আকার-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রিয় শিষ্যকে হারাতে চান না। নয়তো মাঝমাঠে যে ভুগতে হবে সিটিকে! এবারও তিনি আস্থাটা রাখবেন মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনার কাঁধে। গোলমুখে আর্লিং হালান্ড তো আছেনই ত্রাস ছড়াতে। ফিল ফোডেনকেও ব্যবহার করতে পারেন শুরু থেকে।

Captureসিটিকে বেশির ভাগ সময় ৩-২-৪-১ ফরমেশনে খেলিয়েছেন গার্দিওলা। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালেও একই কৌশলে পেয়েছেন সাফল্য। বার্সেলোনাতে তাঁর ট্রেডমার্ক ৪-৩-৩ ফরমেশন তো বিখ্যাতই হয়ে আছে। টিকিটাকা দর্শনের ফুটবলে কাতালান জায়ান্টরা ৭০ দশকের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কাটিয়েছে তাঁর অধীনে। তবে বায়ার্নে তাঁর ফরমেশন ছিল ২-৩-৫। নতুন জায়গায় নতুন কৌশল বেছে নিলেও সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি গার্দিওলাকে। এবারও হয়তো শিষ্যদের সেই আগের ফরমেশনে খেলাতে পারেন।

সেটাতে সাফল্য না পেলে ৪-৩-৩ ফরমেশন তো আছেই।

ইতিহাদে নিজের ৭ মৌসুমে ১৪টি শিরোপা জিতেছেন গার্দিওলা। আর বার্সা, বায়ার্ন মিউনিখ ও সিটির হয়ে ১৪ বছরের পেশাদারি কোচিং ক্যারিয়ারে ৩৫ শিরোপা, সবচেয়ে কম সময়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে জয়ের সেঞ্চুরি—এমন কত কীর্তিই তো লেখা যায় ৫২ বছর বয়সী কোচের নামের পাশে। তবে লিওনেল মেসির সাবেক গুরুর সবচেয়ে বড় পরিচয়, আধুনিক ফুটবলের সবচেয়ে বড় বিপ্লবী যে তিনিই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত