Ajker Patrika

মা ইলিশ শিকার চলছেই

চারঘাট (রাজশাহী) ও বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
মা ইলিশ শিকার চলছেই

ইলিশ শিকার ২২ দিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও রাজশাহীর চারঘাটের জেলেরা তা মানছেন না। পদ্মা নদীতে মা ইলিশ ধরছেন তাঁরা। দিনের বেলায় কিছু সময়ের জন্য মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ অভিযান পরিচালনা করলেও রাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউ নদীতে যান না বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সুযোগে শত শত জেলে ধরছেন মা ইলিশ। দিন-রাতের অধিকাংশ সময় পদ্মায় এ রকম দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, চারঘাটে ১ হাজার ১৪৯ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। যাঁরা স্থানীয় পদ্মা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পদ্মা নদীর চারঘাট উপজেলার প্রায় ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে ২২ দিন মা ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলেরা যেন ইলিশ ধরতে নদীতে না নামেন, সে জন্য বিনা মূল্যে সরকারের পক্ষ থেকে চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে মোট ১৫-১৭ দিন ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুম। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ আসে নদীতে। তাদের প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে বছরের তিন সপ্তাহ ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। তাই এবার ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকছে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর।

এদিকে গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা নদীর রাওথা, পিরোজপুর, গোপালপুর, মুক্তারপুর, ইউসুফপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে শতাধিক জেলে নৌকায় কারেন্ট জাল নিয়ে মা ইলিশ শিকার করছেন। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মৎস্য কিংবা নৌ পুলিশ কোনো বিভাগের কোনো টহল দল এ সময় চোখে পড়েনি।

দেখা যায়, ওই সময়ের মধ্যে জেলেরা দফায় দফায় জাল ফেলে ইলিশ শিকার করেছেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে। মোবাইল ফোনে কল পাওয়ার পর বিক্রেতারা মোটরসাইকেলে করে মাছ নিরাপদ স্থানে পৌঁছেও দিচ্ছেন। আবার ক্রেতারাও নদীপাড়ের নির্দিষ্ট স্থান থেকে মাছ কিনে ফিরছেন।

এ সময় নাম না প্রকাশের শর্তে এক জেলে বলেন, প্রতিবারের মতো এবার নদীতে প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ নেই। সারা দিনে প্রশাসনের লোক দু-একবার নদীতে আসে। তা ছাড়া প্রশাসনের কেউ কেউ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অভিযানের তথ্য মোবাইল ফোনে জেলেদের জানিয়ে দিচ্ছেন। তাই এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত কোনো জেলেই আটক হয়নি। জানতে চাইলে চারঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বেলাল হোসেন জানান, উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিদিনই নদীতে অভিযান চলছে। কিন্তু জেলেদের শতভাগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, ৪০ কিলোমিটার নদী এলাকা দেখভালের জন্য নৌ পুলিশের পর্যাপ্ত জনবল কিংবা স্পিডবোট কোনোটাই নেই। তাই এক পাশে অভিযানে গেলে অন্য পাশের জেলেরা নদীতে নামতে পারেন।

চারঘাট উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ মোল্লাহ জানান, গত ৯ দিনের অভিযানে কোনো জেলে আটক না হলেও ৪ হাজার ৫০০ মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাবনার বেড়া, মানিকগঞ্জের শিবালয়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন বসছে ইলিশ মাছ বিক্রির হাট। অভিযোগ উঠেছে এ কাজের সহযোগিতা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী মহল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের কল্যানপুর চর, চরবাকুটিয়া, শিবালয়ের চরযমুনা, লালগোলাচর, চরজাফরগঞ্জ, শাহজাদপুরের ভেড়াকোলা বাজার, চৌহালীর ওমরপুরসহ কয়েকটি স্থানে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।

কল্যানপুর চরের এক বাসিন্দা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ভারেঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম উপস্থিত থেকে ক্রয় বিক্রয় দেখভাল করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, পরিবারের খাওয়ার জন্য নদীর মাছ কিনতে মাঝেমধ্যে ওই বাজারে যান।

বেড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম জানান, তাঁরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। মাছ শিকারিদের ধাওয়া দিলে অতি দ্রুত জাল ফেলে সটকে পড়েন তাঁরা।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত