নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপ্তাই
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা পাহাড়িকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা। উচ্ছল কৈশোর তার নেই। আছে মায়ের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া কঠিন এক জীবনসংগ্রাম। অথচ পূর্ণিমার জন্ম হয়েছিল এক অদ্ভুত ভালোবাসার গল্পের মধ্য দিয়ে।
১৯৯৮ সালের মে মাসের কোনো একসময়ে চন্দ্রঘোনা কুষ্ঠ হাসপাতালে কুষ্ঠরোগ নিয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া মাস্টারদা সূর্যসেন পল্লির স্বপ্না দাশ। কুষ্ঠ হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে বিনা খরচে তাঁর চিকিৎসা চলে। কিন্তু কুষ্ঠরোগের কারণে দুই পায়ে ক্ষত দেখা যাওয়ায় ২০০৪ সালে চিকিৎসকদের পরামর্শে পূর্ণিমার স্বপ্নার দুই পা কেটে ফেলতে হয়।
হাসপাতালে থাকা অবস্থায় স্বপ্নার ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয় সে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন কুষ্ঠরোগী জ্যোতিষ চাকমার সঙ্গে। ১৯৯৯ সালে স্বপ্না দাশ জ্যোতিষ চাকমাকে বিয়ে করেন। চন্দ্রঘোনা খ্রিষ্টান ও কুষ্ঠ হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং তাঁদের কুষ্ঠ হাসপাতালের কোয়াটারে সম্পূর্ণ বিনা ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এ ছাড়া বিনা মূল্যে তাঁদের চিকিৎসা ও ওষুধপত্রেরও ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
স্বপ্না চাকমা পরে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের মা হন। তাঁর ছেলে আকাশ চাকমা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে এখন বাসের হেলপারের কাজ করেন। আর মেয়ে পূর্ণিমা চাকমা চন্দ্রঘোনা পাহাড়িকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল স্বপ্নার স্বামী জ্যোতিষ চাকমা মারা গেলে পা-হীন স্বপ্না সন্তানদের নিয়ে এক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েন। ফলে তাঁকে হুইলচেয়ারে বসে শাকসবজি বিক্রির পেশায় নামতে হয়। এ কাজে মাকে সহায়তা করে পূর্ণিমা।
সম্প্রতি কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের কুষ্ঠ হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তায় দেখা মেলে স্বপ্না ও তাঁর মেয়ে পূর্ণিমার। কথা বলে জানা যায়, পূর্ণিমা স্কুলে যাওয়ার আগে হুইলচেয়ারে করে মাকে শাকসবজি বিক্রি করতে বসিয়ে দেয়। স্কুল বন্ধ থাকলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সে মায়ের কাজে সহায়তা করে।
জানা যায়, স্বপ্না প্রতিদিন রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কাপ্তাই সড়কের লিচুবাগান বনগ্রাম মূল রাস্তার পাশে সবজি বিক্রি করতে বসেন হুইলচেয়ারে। কোনো দিন ৫০০ তো কোনো দিন ৩০০ আবার কোনো কোনো কোনো দিন ২০০ টাকা রোজগার হয় তাঁর। বাজারে এখন আশপাশে অনেক অস্থায়ী দোকান বসার কারণে আগের মতো বিক্রি নেই। অনেক অর্থকষ্টে দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। পূর্ণিমার কথা ভেবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বপ্না বলেন, ‘এই বয়সে একজন মেয়ে আনন্দ করবে, খেলাধুলা করবে, প্রাণবন্ত থাকবে। কিন্তু, মেয়ের সেই শখ আমি পূরণ করতে পারিনি।’
কথা হয় পূর্ণিমা চাকমার সঙ্গে। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করতে করতে বলে, ‘খুব ইচ্ছে হয় স্কুল শেষে মাঠে খেলাধুলা করব, ভালো পোশাক কিনব, শহরে গিয়ে শিশু পার্ক দেখব। কিন্তু এগুলো আমার জীবনে নেই।’ তবে একটা শখ তার পূরণ হচ্ছে। পূর্ণিমা বনগ্রাম জুমপাড়া চার্চে প্রতি রোববার বিকেলে সংগীতা ম্যাডামের কাছে বিনা মূল্যে নাচ শিখছে। গত মাসে কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানে সে নেচেছে। সে বড় আনন্দের সময় ছিল পূর্ণিমার। নাচ শেখার ব্যবস্থা করে দেন মিশন এলাকার অনুপ নামের একজন।
স্বপ্না চাকমা অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকেন হ্রদের দিকে। পূর্ণিমার উচ্ছল শৈশবের জন্য কিছু করতে না পারার বেদনা তাঁকে ছিঁড়েখুঁড়ে খায়। তিনি নীরবে চোখের জল ফেলেন। পূর্ণিমা যেন দেখতে না পায় সে জন্য লুকিয়ে রাখতে হয় সে জল। স্বপ্না জানেন না, তাঁর মেয়ের জীবনে কী হবে!
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা পাহাড়িকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা। উচ্ছল কৈশোর তার নেই। আছে মায়ের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া কঠিন এক জীবনসংগ্রাম। অথচ পূর্ণিমার জন্ম হয়েছিল এক অদ্ভুত ভালোবাসার গল্পের মধ্য দিয়ে।
১৯৯৮ সালের মে মাসের কোনো একসময়ে চন্দ্রঘোনা কুষ্ঠ হাসপাতালে কুষ্ঠরোগ নিয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া মাস্টারদা সূর্যসেন পল্লির স্বপ্না দাশ। কুষ্ঠ হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে বিনা খরচে তাঁর চিকিৎসা চলে। কিন্তু কুষ্ঠরোগের কারণে দুই পায়ে ক্ষত দেখা যাওয়ায় ২০০৪ সালে চিকিৎসকদের পরামর্শে পূর্ণিমার স্বপ্নার দুই পা কেটে ফেলতে হয়।
হাসপাতালে থাকা অবস্থায় স্বপ্নার ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয় সে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন কুষ্ঠরোগী জ্যোতিষ চাকমার সঙ্গে। ১৯৯৯ সালে স্বপ্না দাশ জ্যোতিষ চাকমাকে বিয়ে করেন। চন্দ্রঘোনা খ্রিষ্টান ও কুষ্ঠ হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং তাঁদের কুষ্ঠ হাসপাতালের কোয়াটারে সম্পূর্ণ বিনা ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এ ছাড়া বিনা মূল্যে তাঁদের চিকিৎসা ও ওষুধপত্রেরও ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
স্বপ্না চাকমা পরে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের মা হন। তাঁর ছেলে আকাশ চাকমা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে এখন বাসের হেলপারের কাজ করেন। আর মেয়ে পূর্ণিমা চাকমা চন্দ্রঘোনা পাহাড়িকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল স্বপ্নার স্বামী জ্যোতিষ চাকমা মারা গেলে পা-হীন স্বপ্না সন্তানদের নিয়ে এক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েন। ফলে তাঁকে হুইলচেয়ারে বসে শাকসবজি বিক্রির পেশায় নামতে হয়। এ কাজে মাকে সহায়তা করে পূর্ণিমা।
সম্প্রতি কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের কুষ্ঠ হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তায় দেখা মেলে স্বপ্না ও তাঁর মেয়ে পূর্ণিমার। কথা বলে জানা যায়, পূর্ণিমা স্কুলে যাওয়ার আগে হুইলচেয়ারে করে মাকে শাকসবজি বিক্রি করতে বসিয়ে দেয়। স্কুল বন্ধ থাকলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সে মায়ের কাজে সহায়তা করে।
জানা যায়, স্বপ্না প্রতিদিন রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কাপ্তাই সড়কের লিচুবাগান বনগ্রাম মূল রাস্তার পাশে সবজি বিক্রি করতে বসেন হুইলচেয়ারে। কোনো দিন ৫০০ তো কোনো দিন ৩০০ আবার কোনো কোনো কোনো দিন ২০০ টাকা রোজগার হয় তাঁর। বাজারে এখন আশপাশে অনেক অস্থায়ী দোকান বসার কারণে আগের মতো বিক্রি নেই। অনেক অর্থকষ্টে দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। পূর্ণিমার কথা ভেবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বপ্না বলেন, ‘এই বয়সে একজন মেয়ে আনন্দ করবে, খেলাধুলা করবে, প্রাণবন্ত থাকবে। কিন্তু, মেয়ের সেই শখ আমি পূরণ করতে পারিনি।’
কথা হয় পূর্ণিমা চাকমার সঙ্গে। স্কুলে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করতে করতে বলে, ‘খুব ইচ্ছে হয় স্কুল শেষে মাঠে খেলাধুলা করব, ভালো পোশাক কিনব, শহরে গিয়ে শিশু পার্ক দেখব। কিন্তু এগুলো আমার জীবনে নেই।’ তবে একটা শখ তার পূরণ হচ্ছে। পূর্ণিমা বনগ্রাম জুমপাড়া চার্চে প্রতি রোববার বিকেলে সংগীতা ম্যাডামের কাছে বিনা মূল্যে নাচ শিখছে। গত মাসে কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানে সে নেচেছে। সে বড় আনন্দের সময় ছিল পূর্ণিমার। নাচ শেখার ব্যবস্থা করে দেন মিশন এলাকার অনুপ নামের একজন।
স্বপ্না চাকমা অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকেন হ্রদের দিকে। পূর্ণিমার উচ্ছল শৈশবের জন্য কিছু করতে না পারার বেদনা তাঁকে ছিঁড়েখুঁড়ে খায়। তিনি নীরবে চোখের জল ফেলেন। পূর্ণিমা যেন দেখতে না পায় সে জন্য লুকিয়ে রাখতে হয় সে জল। স্বপ্না জানেন না, তাঁর মেয়ের জীবনে কী হবে!
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৭ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে