সব সারেরই বাড়তি দাম

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২২, ১২: ৪৭
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ২৯

রাজবাড়ীতে এমওপি (পটাশ) সার দ্বিগুণ দামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার নির্ধারিত দাম থেকে কেজিতে ৪-৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সংকটের কারণে এমওপি আর পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সারের দাম বেড়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় সারের কোনো সংকট নেই। দাম বেশি রাখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, এ বছর রাজবাড়ীতে আম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। তবে কৃষককে সব ধরনের সারই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। সরকারনির্ধারিত দামে কোনো সারই কিনতে পারছেন না তাঁরা। এমওপি কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে।

সদর উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের কৃষক রহমান মণ্ডল বলেন, ‘ইউরিয়াসহ অন্যান্য সারও নির্ধারিত দাম থেকে কেজিতে ৪-৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সরকার ইউরিয়া সারের দাম ২২ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও ২৫-২৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। টিএসপি সারের দাম প্রতি কেজি ২২ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ২৬-২৮ টাকা। ডিএপি সারের দাম ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৪-৫ টাকা বেশি রাখছেন।’

আরেক কৃষক মোস্তফা খান বলেন, ‘সার ও তেলের দাম বেশি, আমরা যাব কোথায়। তেলের দাম বাড়ায় চাষে ও সেচে খরচ বেড়েছে। সারের দাম বাড়ায় প্রয়োজনের তুলনায় সার পাচ্ছি না।’ কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সরকার সারের দাম বাড়িয়েছে। তেলের দাম বাড়িয়েছে। চাষাবাদ খরচ অনেক বেড়ে যাবে। টাকা খরচ করে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে শেষে ন্যায্য দাম না পেলে না খেয়ে থাকতে হবে।’ সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কৃষক আবু বক্কার জানান, তিনি দুই একর জমিতে আমন ধান চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সার ও তেলের দাম বেড়েছে। বৃষ্টি না থাকায় জমি শুকনা। পানি দিতে হবে বিকল্প উপায়ে। সে ক্ষেত্রে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এ ছাড়া কৃষিশ্রমিক পাওয়াও দুষ্কর হয়ে গেছে। একজন শ্রমিককে দিনে ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হয়। সব মিলিয়ে আমন চাষাবাদ নিয়ে তিনি খুব সমস্যায় আছেন।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের সারের ডিলার সহিদ হোসেন বলেন, ‘সার রাজবাড়ী পর্যন্ত নিয়ে আসার গাড়িভাড়া বেড়েছে। এরপর আমাদের কাছ থেকে সাব-ডিলাররা সার নিয়ে যায়, সেখানেও খরচ বেড়েছে। সার পরিবহন করতে গিয়ে অনেক নষ্ট হয়, সেটিও আমাদের মধ্যে। সব মিলিয়ে আমাদের লাভ কমেছে, খরচ বেড়েছে।’ তিনি সারের বেশি দাম নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘১৫ দিনের বেশি সময় ধরে আমাদের কোনো এমওপি সার সরবরাহ নেই। এ জন্য যাঁদের আছে, তাঁরা হয়তো বেশি দামে বিক্রি করছেন।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় চলতি বছর ৫০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলায় তিন ধরনের আমন ধানের আবাদ হয়। উফশী, হাইব্রিড এবং স্থানীয় জাত। এর মধ্যে উফশী আমন ৪৩ হাজার ৩০০ হেক্টর, হাইব্রিড ৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাত ৭৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হওয়ার কথা রয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন, যা গতবারের চেয়ে ২ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহীদ নূর আকবর বলেন, ‘জেলার কোথাও এমওপি সারের সংকট নেই। বর্তমানে জেলায় ১৩২ মেট্রিক টন এমওপি সার মজুত আছে। কেউ বেশি দামে সার বিক্রি করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত