বাজারে শীতের সবজি প্রচুর, তবু দাম চড়া

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ২৭

মাগুরায় চলতি সপ্তাহ থেকে বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। ভোরের কুয়াশা এখন সকাল আটটার পরও দেখা যাচ্ছে গ্রামে। এই অবস্থায় মাঠ থেকে নানা রকম শীতের শাকসবজি হাটবাজারে যেতে শুরু করেছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে শীতের সবজি প্রচুর। তবু দাম নাগালের বাইরে। জেলার একমাত্র পাইকারি বাজার একতায় বুধবার গিয়ে দেখা যায় নানা প্রকার সবজি ও শাকে ভরপুর। পাইকারি দরে সবজি কিনতে ভিড় করেছেন বিভিন্ন বাজার থেকে আসা খুচরা বিক্রেতারা।

বাঁধাকপি পাইকারি বিক্রি করছেন সেলিম আলী। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এখন শীত শুরু হয়েছে। বাঁধাকপি পাইকারিতে আজ বিক্রি করছি ২৫ টাকা কেজি। শীত যত বেশি হবে, এসব মৌসুমি সবজির দাম তত কমতে থাকবে। ফুলকপি বিক্রেতা সাজ্জাদুল হোসেন বলেন, ‘আজকে বাজারদর একটু কম, গতকাল ছিল ২৫ টাকা। আজ চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া থেকে অনেক কপি আইছে। তাই বাজারে দাম কমতি শুরু করেছে।’

পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা। এ ছাড়া পালংশাকের কেজি ২০ টাকা, মুলা ১২ টাকা, লাউ গড়ে পিস ৩৫ টাকা ও পেঁপের কেজি ১০ টাকা। খুচরা বাজারে এ পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, লাউয়ের পিস ৬০ টাকা, বাঁধাকপির কেজি ৬০ টাকা এবং উচ্ছে ১২০ টাকা। পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে দ্বিগুণের বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন।

পাইকারি বাজারে কিনতে আসা স্কুলশিক্ষক ফারুক হোসেন জানান, কত বড় দামের পার্থক্য, তা এখানে না এলে বুঝতাম না। ফুলকপি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি। অথচ খুচরা বাজারগুলোতে এটা এখনো ৬০-৭০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। দামের এ পার্থক্য মেনে নেওয়া যায় না। এত লাভ করার নিয়ম কোথায় আছে!

পুরাতন বাজারে আসা ক্রেতা শুকুর মিয়া বলেন, ‘সব জিনিসের দাম বেশি। একটু শীতের ফুলকপি আর টাকি মাছ দিয়ে তরকারি খেতে চেয়েছে বড় মেয়ে। কিন্তু টাকি মাছ কিনে পকেটে অল্প কিছু টাকা থাকায় ফুলকপি কিনতে পারছি না। ৭০ টাকা করে কেজি চাইছে। চালের বস্তা টেনে অল্প কিছু আয় করি, এত দাম হলি খাবানে কিরাম।’ 
পুরাতন ও নতুন বাজার থেকে শহরের ভায়না, পুলিশ লাইনস—সব কটি খুচরা বাজারে শীতের সবজির দাম পাইকারি বাজার থেকে কয়েক গুণ বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকার ফলেও দামের এত পার্থক্য কেন! প্রশাসনিক নজরদারি চান তাঁরা।

খুচরা ব্যবসায়ী সমিতি মাগুরা পুরাতন বাজারের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম জানান, ক্রেতারা সারা বছরই অভিযোগ করেন। শীতে এবার মৌসুমি সবজির সরবরাহ এখনো ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে পাইকারি বাজারে দাম বেশি। তাই আমাদেরও খরচ বেশি বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো কম লাভ করা যাচ্ছে না। সংসার চালাতে হলে এখন ৫ টাকার লাভের থেকে ১০ টাকা লাভ না করলে অনাহারে থাকতে হবে বলে তিনি জানান।

মাগুরা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শীতের প্রথম ভাগে এখনো সব ধরনের মৌসুমি সবজির বাজার ব্যাপকভাবে আসেনি। ফলে দাম বেশি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। তখন দরিদ্র মানুষেরা সহজে কিনে খেতে পারবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত