শামীমা জামান
২০১৯ সালে বিখ্যাত এক নিউজ পোর্টালে আমার একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। যেটি আসলে সেই সময় ভাইরাল হয়েছিল। দেশবাসী একজন মেধাবী কবি আফতাব আহমেদকে গুলতেকিন আহমেদের দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে চিনেছিল। গতানুগতিক সামাজিক সমালোচনায় নয়, গ্রহণ করেছিল পরম মমতায়। নারীদের কাছে, এমনকি নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার কাছেই তিনি একটি ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছিলেন।
বোদ্ধা লেখকেরা অনেকেই তাঁর লেখার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন ব্যক্তিগতভাবে। তবে সবাই তাঁকে গুলতেকিনের স্বামী হিসেবে ভালো লাগার একজন মানুষ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
আমার সেই আর্টিকেলটি ছাপা হওয়ার পর পীর হাবিব ভাইসহ বড় বড় জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকেরা অনেকেই যোগাযোগ করেন খবরের সত্যতা নিয়ে এবং পরে তাঁরা প্রথম পাতাতেই খবর ছাপেন।
সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল সেই বিয়ে। গুলতেকিন বা আফতাব কেউ হয়তো লুকিয়েচুরিয়ে কিছু করতে যাননি, কিন্তু বিয়ের খবর দিয়ে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হওয়ার কথাও ভাবেননি। তাঁরা চলছিলেন তাঁদের নিজস্ব গণ্ডিতেই।
হুমায়ূনের জন্মদিনে সবাই যখন তাঁকে নিয়ে নানান স্ট্যাটাস দিচ্ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আমার তখন গোপনে প্রাপ্ত টাটকা বিয়ের খবরটি ঠিক ওই দিন প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। সে ভাবনাতেই লেখা। অনেকে যদিও গুলতেকিনকে দোষারোপ করেছিলেন এমন দিনে এ খবরটি দেওয়ার, অথচ গুলতেকিন বা আফতাব কেউই এ বিষয়ে কিছু জানতেন না। কিন্তু আর্টিকেলটি প্রকাশ হওয়ার পরবর্তী ঘটনা সবার জানা। তাঁরা হয়ে ওঠেন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’।
আফতাব ভাইয়ের সঙ্গে যখন আমার কথা হয়, তিনি বিষয়টি খুব পছন্দ না করলেও তেমন কিছু বলেননি। পরে তাঁর সঙ্গে আমার কথা হতো লেখালেখি বিষয়েই। অন্য দেশ পত্রিকার জন্য তাঁর আর গুলতেকিনের কবিতা চাইতেই আমাকে সাহায্য করেন সুহৃদ ও সশ্রদ্ধচিত্তে।
গুলতেকিন-আফতাবের যুগলবন্দী আমাকে খুব শুভ্র শান্তিময় জীবন ভাবনা জোগাত। কবিতার মতো মনে হতো তাঁদের জীবন। দুজন মানুষ। একই মানসিকতার। একই শিল্প ও রুচিবোধ নিয়ে পার করেন তাঁদের নান্দনিক জীবন। দুই কাপ চায়ের সঙ্গে একটি কবিতা ও সুরের মূর্ছনায় ভরে ওঠা স্বপ্নের ষাটোর্ধ্ব রোমান্স। যেখানে নেই বাস্তবতার দুর্বিষহ অশান্ত টানাপোড়েন, চাওয়া-পাওয়ার হিসাবে দণ্ডিত প্রতিপক্ষ। জীবনের সব পঙ্কিলতা এড়িয়ে কবিতার হাতে হাত রেখে এক শৈল্পিক সহাবস্থান।
ভেবেছিলাম সৃষ্টিকর্তা গুলতেকিনের এক জীবনের সব মেঘ সরিয়ে আনন্দম আলোকরশ্মি দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন বাকি জীবন। তাঁরা খুব সুন্দর থাকবেন। এমন জীবন হয়। হতে পারে। হুমায়ূন-গুলতেকিনের ট্র্যাজেডি কাব্য যেন শেষ হলো গুলতেকিন-আফতাবের মিলনকাব্য দিয়ে।
কিন্তু এই মৃত্যু, সেই জীবন-ভাবনাকে মিথ্যে প্রমাণ করল। জীবনের সব সুন্দর স্থায়ী নয়। যেখানে জীবনই স্থায়ী নয়। এক জীবনে হুমায়ূনের মৃত্যুর শোক দূর থেকে সামলাতে হয়েছে গুলতেকিনকে। সেই শোক সামলানোর জন্য কিছু নেতিবাচক নিষ্ঠুর উপঢৌকন হয়তো তখন ছিল। কিন্তু এবারের এই মৃত্যু, আফতাব ভাইয়ের এই আচমকা চলে যাওয়া—গুলতেকিন কি আবারও সামলে উঠতে পারবেন? আহারে জীবন!
আফতাব থেকে যাবেন গুলতেকিনের কবিতা হয়ে। ওপারে ভালো থাকুন আফতাব।
শামীমা জামান, নিউইয়র্কপ্রবাসী, সাহিত্যিক
২০১৯ সালে বিখ্যাত এক নিউজ পোর্টালে আমার একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। যেটি আসলে সেই সময় ভাইরাল হয়েছিল। দেশবাসী একজন মেধাবী কবি আফতাব আহমেদকে গুলতেকিন আহমেদের দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে চিনেছিল। গতানুগতিক সামাজিক সমালোচনায় নয়, গ্রহণ করেছিল পরম মমতায়। নারীদের কাছে, এমনকি নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার কাছেই তিনি একটি ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছিলেন।
বোদ্ধা লেখকেরা অনেকেই তাঁর লেখার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন ব্যক্তিগতভাবে। তবে সবাই তাঁকে গুলতেকিনের স্বামী হিসেবে ভালো লাগার একজন মানুষ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
আমার সেই আর্টিকেলটি ছাপা হওয়ার পর পীর হাবিব ভাইসহ বড় বড় জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকেরা অনেকেই যোগাযোগ করেন খবরের সত্যতা নিয়ে এবং পরে তাঁরা প্রথম পাতাতেই খবর ছাপেন।
সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল সেই বিয়ে। গুলতেকিন বা আফতাব কেউ হয়তো লুকিয়েচুরিয়ে কিছু করতে যাননি, কিন্তু বিয়ের খবর দিয়ে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হওয়ার কথাও ভাবেননি। তাঁরা চলছিলেন তাঁদের নিজস্ব গণ্ডিতেই।
হুমায়ূনের জন্মদিনে সবাই যখন তাঁকে নিয়ে নানান স্ট্যাটাস দিচ্ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আমার তখন গোপনে প্রাপ্ত টাটকা বিয়ের খবরটি ঠিক ওই দিন প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। সে ভাবনাতেই লেখা। অনেকে যদিও গুলতেকিনকে দোষারোপ করেছিলেন এমন দিনে এ খবরটি দেওয়ার, অথচ গুলতেকিন বা আফতাব কেউই এ বিষয়ে কিছু জানতেন না। কিন্তু আর্টিকেলটি প্রকাশ হওয়ার পরবর্তী ঘটনা সবার জানা। তাঁরা হয়ে ওঠেন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’।
আফতাব ভাইয়ের সঙ্গে যখন আমার কথা হয়, তিনি বিষয়টি খুব পছন্দ না করলেও তেমন কিছু বলেননি। পরে তাঁর সঙ্গে আমার কথা হতো লেখালেখি বিষয়েই। অন্য দেশ পত্রিকার জন্য তাঁর আর গুলতেকিনের কবিতা চাইতেই আমাকে সাহায্য করেন সুহৃদ ও সশ্রদ্ধচিত্তে।
গুলতেকিন-আফতাবের যুগলবন্দী আমাকে খুব শুভ্র শান্তিময় জীবন ভাবনা জোগাত। কবিতার মতো মনে হতো তাঁদের জীবন। দুজন মানুষ। একই মানসিকতার। একই শিল্প ও রুচিবোধ নিয়ে পার করেন তাঁদের নান্দনিক জীবন। দুই কাপ চায়ের সঙ্গে একটি কবিতা ও সুরের মূর্ছনায় ভরে ওঠা স্বপ্নের ষাটোর্ধ্ব রোমান্স। যেখানে নেই বাস্তবতার দুর্বিষহ অশান্ত টানাপোড়েন, চাওয়া-পাওয়ার হিসাবে দণ্ডিত প্রতিপক্ষ। জীবনের সব পঙ্কিলতা এড়িয়ে কবিতার হাতে হাত রেখে এক শৈল্পিক সহাবস্থান।
ভেবেছিলাম সৃষ্টিকর্তা গুলতেকিনের এক জীবনের সব মেঘ সরিয়ে আনন্দম আলোকরশ্মি দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন বাকি জীবন। তাঁরা খুব সুন্দর থাকবেন। এমন জীবন হয়। হতে পারে। হুমায়ূন-গুলতেকিনের ট্র্যাজেডি কাব্য যেন শেষ হলো গুলতেকিন-আফতাবের মিলনকাব্য দিয়ে।
কিন্তু এই মৃত্যু, সেই জীবন-ভাবনাকে মিথ্যে প্রমাণ করল। জীবনের সব সুন্দর স্থায়ী নয়। যেখানে জীবনই স্থায়ী নয়। এক জীবনে হুমায়ূনের মৃত্যুর শোক দূর থেকে সামলাতে হয়েছে গুলতেকিনকে। সেই শোক সামলানোর জন্য কিছু নেতিবাচক নিষ্ঠুর উপঢৌকন হয়তো তখন ছিল। কিন্তু এবারের এই মৃত্যু, আফতাব ভাইয়ের এই আচমকা চলে যাওয়া—গুলতেকিন কি আবারও সামলে উঠতে পারবেন? আহারে জীবন!
আফতাব থেকে যাবেন গুলতেকিনের কবিতা হয়ে। ওপারে ভালো থাকুন আফতাব।
শামীমা জামান, নিউইয়র্কপ্রবাসী, সাহিত্যিক
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে