৯ খাল এখন ধানের খেত

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২২, ০৭: ০৬
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, ১৭: ৫৩

জয়পুরহাটের কালাইয়ের ৯টি খালে ধান চাষ করা হচ্ছে। অথচ বন্যা ও অতিবর্ষণের কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারে ছোট-বড় এ খালগুলো। সে সঙ্গে শুকনো মৌসুমে সেচসুবিধা ও স্থানীয় মৎস্যসম্পদ রক্ষায় খালগুলো ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শত বছরের পুরোনো নালাসহ খালগুলোর প্রস্থ ও গভীরতা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। তাই এগুলো প্রান্তিক চাষিদের কোনো উপকারে আসছে না।

কালাই উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ৯টি খাল হলো—হারাবতী খাল, মাত্রাই-কুসুমসাড়া, মোসলেমগঞ্জ, হাতিয়র-তারাপানি, থুপসাড়া-তারাপানি, নুনগোলা (উৎপত্তিস্থল তালোড়া বাইগুনী), নুনগোলা (উৎপত্তিস্থল পূর্ব সরাইল), শিকটা-মাদাই ও বাখরা-কাদিরপুর খাল।

৯টি খালের মোট ৬১ দশমিক ৯ কিলোমিটার প্রবাহিত জলধারা এই উপজেলার কৃষিজমির অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন, শুকনো মৌসুমে ফসলের পানি সেচব্যবস্থা এবং দেশি মাছ ও জলজ প্রাণীর মুক্ত আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

উপজেলার মধুবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেন আমলে শাসকেরা কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব নিত বিধায় তাঁদের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও সেচের পানির সুবিধার জন্য বহু খাল-বিল, নদী-নালা খনন করে দিতেন। কিন্তু কালের গর্ভে তা এখন জনকল্যাণে আসছে না।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কিছু ছাড়া অধিকাংশ এলাকায় খালগুলো দখলের কবলে পড়ে সরু নালায় পরিণত হয়েছে। কোথাওবা গভীরতা কমে ১ থেকে ১ দশমিক ৫ ফুট হয়েছে; যা জমি থেকে সামান্য নিচে। কোথাও আবার খাল জমিতে পরিণত হয়ে চলছে ধান চাষ। অন্যদিকে ফসলের বিস্তীর্ণ মাঠ থেকে যেসব নালা খালে পতিত হয়েছে এর অধিকাংশ চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে বন্যা বা অতিবর্ষণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এ কারণে ফসল তলিয়ে থাকে পানিতে। 
সম্প্রতি মাঘের শীতে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় অধিকাংশ কৃষকই পানি নিষ্কাশনের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। এতে আলুতে লোকসান গুনছেন তাঁরা।

পৌরসভার মুন্সিপাড়ার আলুচাষি মনোয়ার হোসেনের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ২৬ বিঘা জমির আলুতে এবার আশানুরূপ ফল পাননি বলে জানান। মাঠপর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, উপজেলার অধিকাংশ আলুচাষির ছিল একই অবস্থা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খালগুলোর গভীরতা বৃদ্ধিসহ আগের প্রশস্ততা ফিরিয়ে আনা জরুরি। কেননা এগুলো কোনো প্রান্তিক চাষিদের কোনো উপকারে আসছে না।

এ বিষয়ে কালাই জোন বরেন্দ্র উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, কানমনা হারাবতী খালের ১৩ দশমিক ১৪ কিলোমিটার খাল ২০১৩ সালে পুনরায় খনন করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কালাই উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী আবু তাহের বলেন, নুনগোলা খালের ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার অংশ পূর্বে পুনরায় খনন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জয়পুরহাট জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, কালাই উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক এখন পর্যন্ত কোনো খাল পুনর্খনন করা হয়নি। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত