ফারুক হাসান
স্বাধীনতা-উত্তরকালে যে কয়টি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনন্য অর্জন, এর মধ্যে অন্যতম হলো তৈরি পোশাকশিল্প খাত, যা আজ আমাদের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। খাতটি শুধু জাতীয় অর্থনীতিকেই সমৃদ্ধ করেনি, একই সঙ্গে নিশ্চিত করেছে অগণিত মানুষের কর্মসংস্থান। প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস এই শিল্পের জিডিপিতে অবদান ১১ শতাংশ।
পোশাকশিল্পের হাত ধরেই দেশের অর্থনীতিতে এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে সামনের সারিতে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৩০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশকেও ধরা হয়। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে পোশাকশিল্প।
কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে অভূপূর্ব সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। আর ডেনিমে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে সব দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ রয়েছে প্রথম অবস্থানে। সরকারের সহযোগিতায় শিগগিরই ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ শীর্ষস্থান অধিকার করবে বলে আমরা আশাবাদী।
গত ৫০ বছরে আমরা শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি মডেল অনুসরণ করেছি। এখন সময় এসেছে টেকসই উৎপাদনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধি অনুসরণ এবং একটি টেকসই ব্যবসায়িক মডেল অর্জন করার জন্য আগামী দিনে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে, কারিগরি ও উদ্ভাবনী উৎকর্ষ এনে, শিল্প-শ্রমিক-সমাজ-পরিবেশের মধ্যে একটি সামগ্রিক ইকো-সিস্টেম এনে প্রবৃদ্ধির পরবর্তী মডেল নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের। এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিজিএমইএ পোশাকশিল্পের টেকসই কৌশলগত রূপকল্প-২০৩০ প্রণয়ন করেছে। এর অভীষ্ট হচ্ছে মানুষ ও পরিবেশ, অর্থাৎ এই সবুজ গ্রহকে বিপন্ন না করে শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা, যা ইএসজির (এনভায়রনমেন্টাল সোশ্যাল গভর্ন্যান্স) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রূপকল্পের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক
২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে বিজিএমইএ ইউএনএফসিসিসির ‘ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি চার্টার ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন’ স্বাক্ষর করেছে। এই অঙ্গীকার বিজিএমইএর কৌশলগত টেকসই উন্নয়ন রূপকল্পে ১ নম্বরে রাখা হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ জ্বালানি ব্যবহারের অন্তত ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপন্ন করাও লক্ষ্য।
গত অর্থবছরে আমরা ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির মাইলফলক ছুঁয়েছি এবং আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার, সহযোগী ব্র্যান্ড এবং স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতায় ২০৩০ সালের মধ্যে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হব। শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ইতিমধ্যেই বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে পোশাকশিল্পের জন্য একটি উদ্ভাবন, দক্ষতা ও পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে শিল্পের উৎপাদনশীলতা ৬০ শতাংশ বাড়ানো।
২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিটি দেশে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগসংবলিত পোশাক-পণ্য রপ্তানি করে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের পদচিহ্ন ছড়িয়ে দেওয়াটাও আরেকটি লক্ষ্য। ইতিমধ্যে পোশাকশিল্পে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সুশাসন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা যায় না। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে শিল্পে শতভাগ সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা একা পথ চলতে চাই না; একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য দেশে ও বিদেশে সব সহযোগীর সঙ্গে অংশীদারত্বমূলক এবং দৃঢ় কাজের সম্পর্ক গড়তে চাই।
২০৩০ সালের মধ্যে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে ইতিমধ্যেই সরকারের সহায়তায় পণ্য, বাজার ও ফাইবার বহুমুখীকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন, ইনোভেশন ও টেকনোলজি আপগ্রেডেশন, কস্ট-কমপিটিটিভ হওয়ার মাধ্যমে ভ্যালু চেইনে এগিয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পণ্য বহুমুখীকরণ: বৈশ্বিক বাজারে গুণগত মানসম্পন্ন স্পোর্টসওয়্যার, আউটারওয়্যার এই পণ্যগুলোর বিশাল চাহিদা। তবে সেই সব বাজারে আমাদের উপস্থিতি নগণ্য। হাই-ফ্যাশনে সক্ষমতা প্রদর্শন করতে হাই-এন্ড ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তোলা হবে।
বিশ্ববাজারে কটন বস্ত্রের শেয়ার এবং পোশাকের ব্যবহার মাত্র ২৫ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি করা তৈরি পোশাকের ৭৫ শতাংশ কটন পণ্যে কেন্দ্রীভূত। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সাধারণ পোশাকের পাশাপাশি উচ্চমূল্যের বা ব্যতিক্রমী পোশাক তৈরিতে সদস্যদের প্রতিনিয়ত উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
বাজার বহুমুখীকরণ: বিজিএমইএ অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসির মাধ্যমে নতুন নতুন বাজার তৈরি এবং আমাদের মূল বাজারগুলোতে কীভাবে রপ্তানি আরও বাড়ানো যেতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছে। বিগত দশকে বাজার সম্প্রসারণে আমাদের সফলতাও অনেক।যেখানে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে অপ্রচলিত বাজারগুলোতে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৪৮ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা ৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে নতুন কয়েকটি বাজারের ওপর ভর করে পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো অপ্রচলিত বাজারে এই প্রথম ১ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। জাপানে রপ্তানি গত বছর ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল, এবার তা দেড় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য পণ্যের ডিজাইন পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া, লিড টাইম কমানো, সর্বশেষ প্রযুক্তি গ্রহণ, উৎপাদন ব্যয় কমানো এবং কারখানাগুলোকে আরও টেকসই করার কোনো বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে জ্ঞানার্জনের জন্য বিজিএমইএর প্রধান কার্যালয়ে নতুন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কেন্দ্রটি পোশাক কারখানাগুলোকে অটোমেশন, থ্রিডি ডিজাইনিং, উদ্ভাবন, সর্বোত্তম শিল্প প্রকৌশল-প্রক্রিয়া গ্রহণ ও অনুশীলন, ডিজিটাল ম্যানুফ্যাকচারিং বিষয়ে সম্যক ধারণা অর্জন এবং মডিউলার প্রক্রিয়াগুলো অনুপ্রাণিত করার জন্যও কাজ করবে।
টেকনোলজি আপগ্রেডেশন: বিশ্ববাণিজ্যপটে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান এবং এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ সবার সামনে আসছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প ইতিমধ্যেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে প্রবেশ করেছে, আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচলিত উৎপাদন এবং শিল্পব্যবস্থার স্বয়ংক্রিয়করণের প্রক্রিয়া চলমান। প্রতিটি কারখানাই এখন অটোমেশনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
পোশাকশিল্প নিরাপদ কর্মপরিবেশের রোল মডেলের তকমা পেয়েছে। আমরা সামাজিক ও পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যাপক অগ্রগতিসহ অনেক উদ্যোগের মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন শিল্প গড়তে সক্ষম হয়েছি।
সবুজ শিল্পায়ন: বিশ্বের সর্বাধিক পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানার আবাসস্থল এখন বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) সনদপ্রাপ্ত ১৯৮টি লিড গ্রিন কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে প্লাটিনাম রেটেড ৭১ এবং ১১৩টি গোল্ড রেটেড। বিশ্বের সেরা ১০০ কারখানার মধ্যে ৪০টি আমাদের। আরও ৫০০টির মতো কারখানা লিড সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়াধীন।
সার্কুলারিটি: রূপকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমরা সার্কুলার ফ্যাশন বা সার্কুলারিটি নিয়েও কাজ করছি। বিজিএমইএ দেশে সার্কুলার ফ্যাশন অনুশীলনকে সহায়তা করার জন্য একটি ‘সার্কুলার ফ্যাশন পার্টনারশিপ’ প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, পোশাক কারখানায় প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সার্কুলার ফ্যাশনসহ পোশাক খাতে টেকসই অনুশীলনের প্রচার করা।
রেসপন্সিবল বিজনেস হাব: বর্তমানে ফ্যাশন বিশ্বের একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সাসটেইনেবল বিজনেস এনভায়রনমেন্ট। নতুন নতুন ডিউ ডিলিজেন্স গাইডলাইন আসছে। বিজিএমইএ জিআইজেডের সহযোগিতায় পোশাক খাতে মানবাধিকার, পরিবেশগত ডিউ ডিলিজেন্স (এইচআরইডিডি) শক্তিশালী করতে রেসপন্সিবল বিজনেস হাব চালু করেছে।
যেসব ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে
কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে আমরা সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের গুরুত্ব এবং শিল্পে এর প্রভাব দেখেছি। আমাদের অবশ্যই গুরুত্ব আরোপ করতে হবে সময়মতো অর্ডার সরবরাহ করায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটানোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি উৎপাদন খরচ কমাতে, গুণগত মান উন্নত করতে, সাপ্লাই চেইনের দক্ষতা বাড়াতে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। আপস্ট্রিম সাপ্লাই চেইনকে একীভূত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আমদানি করা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
মন্দার সময় ক্রেতারা আরও সাশ্রয়ী মূল্যে বিকল্পগুলো খুঁজছেন। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য পোশাক প্রস্তুতকারকদের অবশ্যই উৎপাদন পরিচালনা সুবিন্যস্তকরণ, বর্জ্য হ্রাসকরণ এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে ব্যয় দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশ্বব্যাপী ভোক্তারা ফ্যাশনশিল্পের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে উঠছেন এবং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পোশাকের ক্রমবর্ধমান চাহিদা রয়েছে।
জৈব কটন ও পুনর্ব্যবহৃত উপকরণ ব্যবহার করে, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি টেকসই ফ্যাশন চেইন তৈরি করে ভোক্তাদের এই প্রবণতাকে পুঁজি করে আমরা সুবিধা পেতে পারি। এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সহজে অর্থায়নের নিয়মিত স্কিমগুলো গ্রহণ করতে পারে এবং সাসটেইনেবিলিটি চর্চাগুলো গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থ হয়, এর ব্যবস্থা করতে হবে।
শিল্পের জন্য অব্যাহত বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহের বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে রপ্তানি ত্বরান্বিত করার জন্য আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া, বিশেষ করে কাস্টমস, বন্দর এবং বন্ড-সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ করা জরুরি।
সবশেষে বলতে হয়, দীর্ঘ মেয়াদে শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য শক্তিশালী নীতি-সহায়তা স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। যেসব নীতি-সহায়তা ইতিমধ্যে শিল্পের জন্য সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সমর্থন দেওয়া জরুরি। তারা এই সংকটকালে আন্তর্জাতিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শক্তিশালী উপস্থিতির জন্য আগামী কয়েক বছরের জন্য স্থিতিশীল রাজস্ব নীতি, আরও প্রণোদনামূলক স্কিম, রপ্তানির কাঁচামালে শুল্ক-সুবিধা, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদান প্রভৃতির কথা ভাবতে পারে।
লেখক: সভাপতি, বিজিএমইএ
স্বাধীনতা-উত্তরকালে যে কয়টি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনন্য অর্জন, এর মধ্যে অন্যতম হলো তৈরি পোশাকশিল্প খাত, যা আজ আমাদের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। খাতটি শুধু জাতীয় অর্থনীতিকেই সমৃদ্ধ করেনি, একই সঙ্গে নিশ্চিত করেছে অগণিত মানুষের কর্মসংস্থান। প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস এই শিল্পের জিডিপিতে অবদান ১১ শতাংশ।
পোশাকশিল্পের হাত ধরেই দেশের অর্থনীতিতে এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে সামনের সারিতে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৩০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশকেও ধরা হয়। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে পোশাকশিল্প।
কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে অভূপূর্ব সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। আর ডেনিমে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে সব দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ রয়েছে প্রথম অবস্থানে। সরকারের সহযোগিতায় শিগগিরই ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ শীর্ষস্থান অধিকার করবে বলে আমরা আশাবাদী।
গত ৫০ বছরে আমরা শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি মডেল অনুসরণ করেছি। এখন সময় এসেছে টেকসই উৎপাদনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধি অনুসরণ এবং একটি টেকসই ব্যবসায়িক মডেল অর্জন করার জন্য আগামী দিনে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে, কারিগরি ও উদ্ভাবনী উৎকর্ষ এনে, শিল্প-শ্রমিক-সমাজ-পরিবেশের মধ্যে একটি সামগ্রিক ইকো-সিস্টেম এনে প্রবৃদ্ধির পরবর্তী মডেল নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের। এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিজিএমইএ পোশাকশিল্পের টেকসই কৌশলগত রূপকল্প-২০৩০ প্রণয়ন করেছে। এর অভীষ্ট হচ্ছে মানুষ ও পরিবেশ, অর্থাৎ এই সবুজ গ্রহকে বিপন্ন না করে শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করা, যা ইএসজির (এনভায়রনমেন্টাল সোশ্যাল গভর্ন্যান্স) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রূপকল্পের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক
২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে বিজিএমইএ ইউএনএফসিসিসির ‘ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি চার্টার ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন’ স্বাক্ষর করেছে। এই অঙ্গীকার বিজিএমইএর কৌশলগত টেকসই উন্নয়ন রূপকল্পে ১ নম্বরে রাখা হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ জ্বালানি ব্যবহারের অন্তত ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপন্ন করাও লক্ষ্য।
গত অর্থবছরে আমরা ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির মাইলফলক ছুঁয়েছি এবং আগামী দিনগুলোতে রপ্তানি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার, সহযোগী ব্র্যান্ড এবং স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতায় ২০৩০ সালের মধ্যে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হব। শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ইতিমধ্যেই বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে পোশাকশিল্পের জন্য একটি উদ্ভাবন, দক্ষতা ও পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে শিল্পের উৎপাদনশীলতা ৬০ শতাংশ বাড়ানো।
২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিটি দেশে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগসংবলিত পোশাক-পণ্য রপ্তানি করে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের পদচিহ্ন ছড়িয়ে দেওয়াটাও আরেকটি লক্ষ্য। ইতিমধ্যে পোশাকশিল্পে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সুশাসন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা যায় না। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে শিল্পে শতভাগ সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা একা পথ চলতে চাই না; একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য দেশে ও বিদেশে সব সহযোগীর সঙ্গে অংশীদারত্বমূলক এবং দৃঢ় কাজের সম্পর্ক গড়তে চাই।
২০৩০ সালের মধ্যে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে ইতিমধ্যেই সরকারের সহায়তায় পণ্য, বাজার ও ফাইবার বহুমুখীকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন, ইনোভেশন ও টেকনোলজি আপগ্রেডেশন, কস্ট-কমপিটিটিভ হওয়ার মাধ্যমে ভ্যালু চেইনে এগিয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পণ্য বহুমুখীকরণ: বৈশ্বিক বাজারে গুণগত মানসম্পন্ন স্পোর্টসওয়্যার, আউটারওয়্যার এই পণ্যগুলোর বিশাল চাহিদা। তবে সেই সব বাজারে আমাদের উপস্থিতি নগণ্য। হাই-ফ্যাশনে সক্ষমতা প্রদর্শন করতে হাই-এন্ড ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তোলা হবে।
বিশ্ববাজারে কটন বস্ত্রের শেয়ার এবং পোশাকের ব্যবহার মাত্র ২৫ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি করা তৈরি পোশাকের ৭৫ শতাংশ কটন পণ্যে কেন্দ্রীভূত। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সাধারণ পোশাকের পাশাপাশি উচ্চমূল্যের বা ব্যতিক্রমী পোশাক তৈরিতে সদস্যদের প্রতিনিয়ত উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
বাজার বহুমুখীকরণ: বিজিএমইএ অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসির মাধ্যমে নতুন নতুন বাজার তৈরি এবং আমাদের মূল বাজারগুলোতে কীভাবে রপ্তানি আরও বাড়ানো যেতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছে। বিগত দশকে বাজার সম্প্রসারণে আমাদের সফলতাও অনেক।যেখানে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে অপ্রচলিত বাজারগুলোতে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৪৮ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা ৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে নতুন কয়েকটি বাজারের ওপর ভর করে পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো অপ্রচলিত বাজারে এই প্রথম ১ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। জাপানে রপ্তানি গত বছর ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছিল, এবার তা দেড় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য পণ্যের ডিজাইন পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া, লিড টাইম কমানো, সর্বশেষ প্রযুক্তি গ্রহণ, উৎপাদন ব্যয় কমানো এবং কারখানাগুলোকে আরও টেকসই করার কোনো বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে জ্ঞানার্জনের জন্য বিজিএমইএর প্রধান কার্যালয়ে নতুন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কেন্দ্রটি পোশাক কারখানাগুলোকে অটোমেশন, থ্রিডি ডিজাইনিং, উদ্ভাবন, সর্বোত্তম শিল্প প্রকৌশল-প্রক্রিয়া গ্রহণ ও অনুশীলন, ডিজিটাল ম্যানুফ্যাকচারিং বিষয়ে সম্যক ধারণা অর্জন এবং মডিউলার প্রক্রিয়াগুলো অনুপ্রাণিত করার জন্যও কাজ করবে।
টেকনোলজি আপগ্রেডেশন: বিশ্ববাণিজ্যপটে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান এবং এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ সবার সামনে আসছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প ইতিমধ্যেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে প্রবেশ করেছে, আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচলিত উৎপাদন এবং শিল্পব্যবস্থার স্বয়ংক্রিয়করণের প্রক্রিয়া চলমান। প্রতিটি কারখানাই এখন অটোমেশনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
পোশাকশিল্প নিরাপদ কর্মপরিবেশের রোল মডেলের তকমা পেয়েছে। আমরা সামাজিক ও পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যাপক অগ্রগতিসহ অনেক উদ্যোগের মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন শিল্প গড়তে সক্ষম হয়েছি।
সবুজ শিল্পায়ন: বিশ্বের সর্বাধিক পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানার আবাসস্থল এখন বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) সনদপ্রাপ্ত ১৯৮টি লিড গ্রিন কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে প্লাটিনাম রেটেড ৭১ এবং ১১৩টি গোল্ড রেটেড। বিশ্বের সেরা ১০০ কারখানার মধ্যে ৪০টি আমাদের। আরও ৫০০টির মতো কারখানা লিড সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়াধীন।
সার্কুলারিটি: রূপকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমরা সার্কুলার ফ্যাশন বা সার্কুলারিটি নিয়েও কাজ করছি। বিজিএমইএ দেশে সার্কুলার ফ্যাশন অনুশীলনকে সহায়তা করার জন্য একটি ‘সার্কুলার ফ্যাশন পার্টনারশিপ’ প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, পোশাক কারখানায় প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সার্কুলার ফ্যাশনসহ পোশাক খাতে টেকসই অনুশীলনের প্রচার করা।
রেসপন্সিবল বিজনেস হাব: বর্তমানে ফ্যাশন বিশ্বের একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সাসটেইনেবল বিজনেস এনভায়রনমেন্ট। নতুন নতুন ডিউ ডিলিজেন্স গাইডলাইন আসছে। বিজিএমইএ জিআইজেডের সহযোগিতায় পোশাক খাতে মানবাধিকার, পরিবেশগত ডিউ ডিলিজেন্স (এইচআরইডিডি) শক্তিশালী করতে রেসপন্সিবল বিজনেস হাব চালু করেছে।
যেসব ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে
কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে আমরা সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের গুরুত্ব এবং শিল্পে এর প্রভাব দেখেছি। আমাদের অবশ্যই গুরুত্ব আরোপ করতে হবে সময়মতো অর্ডার সরবরাহ করায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটানোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি উৎপাদন খরচ কমাতে, গুণগত মান উন্নত করতে, সাপ্লাই চেইনের দক্ষতা বাড়াতে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। আপস্ট্রিম সাপ্লাই চেইনকে একীভূত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আমদানি করা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
মন্দার সময় ক্রেতারা আরও সাশ্রয়ী মূল্যে বিকল্পগুলো খুঁজছেন। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য পোশাক প্রস্তুতকারকদের অবশ্যই উৎপাদন পরিচালনা সুবিন্যস্তকরণ, বর্জ্য হ্রাসকরণ এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে ব্যয় দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশ্বব্যাপী ভোক্তারা ফ্যাশনশিল্পের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে উঠছেন এবং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পোশাকের ক্রমবর্ধমান চাহিদা রয়েছে।
জৈব কটন ও পুনর্ব্যবহৃত উপকরণ ব্যবহার করে, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি টেকসই ফ্যাশন চেইন তৈরি করে ভোক্তাদের এই প্রবণতাকে পুঁজি করে আমরা সুবিধা পেতে পারি। এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সহজে অর্থায়নের নিয়মিত স্কিমগুলো গ্রহণ করতে পারে এবং সাসটেইনেবিলিটি চর্চাগুলো গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থ হয়, এর ব্যবস্থা করতে হবে।
শিল্পের জন্য অব্যাহত বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহের বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে রপ্তানি ত্বরান্বিত করার জন্য আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া, বিশেষ করে কাস্টমস, বন্দর এবং বন্ড-সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ করা জরুরি।
সবশেষে বলতে হয়, দীর্ঘ মেয়াদে শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য শক্তিশালী নীতি-সহায়তা স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। যেসব নীতি-সহায়তা ইতিমধ্যে শিল্পের জন্য সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সমর্থন দেওয়া জরুরি। তারা এই সংকটকালে আন্তর্জাতিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শক্তিশালী উপস্থিতির জন্য আগামী কয়েক বছরের জন্য স্থিতিশীল রাজস্ব নীতি, আরও প্রণোদনামূলক স্কিম, রপ্তানির কাঁচামালে শুল্ক-সুবিধা, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদান প্রভৃতির কথা ভাবতে পারে।
লেখক: সভাপতি, বিজিএমইএ
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে