Ajker Patrika

স্বল্পমূল্যের পণ্য পেতে ভোগান্তি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
স্বল্পমূল্যের পণ্য পেতে ভোগান্তি

ময়মনসিংহে স্বল্পমূল্যে ওএমএসের চাল-আটা ক্রয় করতে আসা ক্রেতাদের ভোগান্তি কোনোভাবেই কমছে না। শীত উপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেকে পণ্য ক্রয় করতে না পেরে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন। ক্রেতাদের অভিযোগ, একটি চক্র গরিবের এ চাল-আটা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সভাপতি শিব্বির আহম্মেদ লিটন বলেন, ঊর্ধ্বগতির বাজারে শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ নয়, মধ্যবিত্তরাও লাইনে দাঁড়িয়ে চাল-আট ক্রয় করছে। এটি সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। এর মধ্যে স্বচ্ছতা না আনলে ডিলারদের পাশাপাশি খাদ্য বিভাগের লোকজনও ফুলে-ফেঁপে উঠবে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে জানান, সিটি করপোরেশনের মধ্যে ১৭ জন ডিলার এবং ৭ জন ট্রাক ডিলারের কাছ থেকে ক্রেতারা চাল ও আটা পাঁচ কেজি করে কিনতে পারবে। আলাদাভাবে একটা পণ্য বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া জেলা-পৌরসভায় ডিলারদের মাধ্যমে পাঁচ কেজি করে চাল ৩০ টাকা ধরে বিক্রি করা হচ্ছে। কালোবাজারে পণ্য বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ১ অক্টোবর থেকে ময়মনসিংহেও শুরু হয় স্বল্পমূল্যে আটা ও চাল বিক্রি। সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৭ জন দোকান ও সাতজন ট্রাক ডিলারের মাধ্যমে সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি করে চাল, ২৪ টাকা দরে আটা বিক্রির কথা। এ ছাড়া প্রতিটি পৌরসভা ও উপজেলায় একজন করে মোট ৪১ জন ডিলার রয়েছেন। তাঁরা দৈনিক এক টন করে চাল বিক্রি করেন। সম্প্রতি বাজারে আটা ও চালের দাম বাড়ায় ময়মনসিংহে দীর্ঘ হচ্ছে ওএমএসের লাইনে দাঁড়ানো ক্রেতাদের সংখ্যা।

নগরীর বাতিরকল ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে লাইনে দাঁড়ানো হযরত আলী নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, বেলা ১১টা বাজে, এখনো অর্ধেক মানুষ পণ্য ক্রয় করতে পারেননি। হয়তো আমার সিরিয়াল এলে পণ্য শেষ হয়ে যেতে পারে। এমন অনেকবার হয়েছে। যে পরিমাণ চাল ও আটা ডিলাররা পান, সুষ্ঠুভাবে বিক্রি করলে হয়তো আমরা পেতাম।’

কেওয়াটখালী এলাকায় পণ্য ক্রয় করতে আসা আখলিমা আক্তার বলেন, ‘পেটের তাগিদে আমরা কম পয়সায় চাল-আটা কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। অনেক দিন ক্রয় করতে পারি, আবার অনেক দিন পারি না। তবে চাল-আটা একবারে ক্রয় করতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হতো।’

বিবেক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কমল চন্দ্র সিংহ বলেন, ‘আমরা চাল-আটা উত্তোলন করে সাধারণ ক্রেতাদের কাছেই বিক্রি করি। কালোবাজারে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। সারাক্ষণ খাদ্য বিভাগের লোকজন এখানে থাকে।’

 জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি সরকারের একটি বিশেষ উদ্যোগ। এটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। যারা ওএমএসের চাল-আটা বিক্রির কারসাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত