Ajker Patrika

হিমাগারে মজুত আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
হিমাগারে মজুত আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীর হিমাগারগুলোতে মজুত আলুর এক-পঞ্চমাংশ (২০ শতাংশ) এখনো পড়ে রয়েছে। হিমাগারে মজুতের সময়সীমা শেষ হওয়ার সঙ্গে কমছে আলুর দাম।

ফলে হিমাগারে অবিক্রীত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। লাভের আশা ছেড়ে উৎপাদন খরচ নিয়েই শঙ্কায় তাঁরা। অপর দিকে মজুত আলুর ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশায় রয়েছে হিমাগার কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় হিমাগার রয়েছে মোট ৩১টি। এর মধ্যে সচল রয়েছে ২৭টি হিমাগার। এসব হিমাগারে মোট ধারণক্ষমতা রয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ২৪০ টন। বর্তমানে এসব হিমাগারে অবিক্রীত আলু রয়েছে ৪৩ হাজার টন। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় হিমাগারে মজুত রাখা আলুতে মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান গুনছেন কৃষকেরা।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর টঙ্গিবাড়ী উপজেলায় ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। তবে চলতি বছর আলুর দাম কম থাকায় আগের চেয়ে ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে এ অঞ্চলের কৃষকেরা আলুর পাশাপাশি সরিষা, মসলাসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ করছেন।

সরেজমিনে উপজেলার হিমাগার ঘুরে আলু বাছাই করতে দেখা যায় শ্রমিকদের। হিমাগার থেকে আলুর ৫০ কেজি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে।

উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের আলুচাষি ওয়াহিদ হালদার বলেন, ‘গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলি জমির আলুর বীজ পচে গিয়েছিল। পুনরায় বীজ কিনে শ্রমিক দিয়ে আলু রোপণ করেছিলাম। এতে প্রতি কেজি আলু উৎপাদন, হিমাগারে মজুত রাখাসহ খরচ পড়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা। বর্তমানে সে আলু বিক্রি করছি ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে। বাজারে সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম বেশি, কিন্তু আলুর দাম নেই। এমন অবস্থা থাকলে কৃষকের বাঁচার উপায় থাকবে না।’

যশলং ইউনিয়নের পুরা গ্রামের কৃষক সামসুদ্দিন ঢালী বলেন, ‘লাভের আশায় ঋণ করে আলু রোপণ করছিলাম। ঘূর্ণিঝড় আইসা বীজআলু সব নষ্ট করে দিছিল। আবারও ধারদেনা করে আলু রোপণ করছিলাম। অহন আলুর দাম নাই। কেউ আলুর দাম জিগায় না। হিমাগারের ভাড়া কীভাবে দিমু? মনে হয়, আলু রাইখা চইলা যাইতে হইব।’

টঙ্গিবাড়ী বাজার এলাকার শরীফ হিমাগারের ম্যানেজার মো. আলমগীর বলেন, ‘আমাদের কোল্ডস্টোরেজে আলু রাখা যায় ১ লাখ ৪০ হাজার বস্তা। এখনো এখানে মজুত আছে ১৭ হাজার বস্তা। বাজারে প্রতি বস্তা আলুর দাম ৫০০ টাকা। অথচ সব খরচ মিলিয়ে কোল্ডস্টোরেজের মালিকের বস্তাপ্রতি কৃষকের কাছে পাওনা ৬৬০ টাকা। তাই কৃষকেরা কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু নিচ্ছেন না। এতে কৃষকের সঙ্গে কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়নুল আলম তালুকদার জানান, বাজারে পুরোনো আলুর চাহিদা কম থাকায় টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হিমাগারের আলু বিক্রি কম হচ্ছে। কারণে এই অঞ্চলের কৃষক গত বছরের তুলনায় এ বছর আলুর পাশাপাশি ধান, সরিষা, মসলা ও সবজি চাষ করছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

খেজুরে অতি মুনাফা, হতাশ ক্রেতা

চাপে পড়ে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিয়েছেন পিরোজপুরের ডিসি, সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: প্রেস সচিব

কলাবাগানে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত