এনসিডি কর্নার না থাকায় সেবাবঞ্চিত লাখো মানুষ

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১২: ২৭

শিল্পঅধ্যুষিত গাজীপুর জেলায় বসবাস ৫২ লাখ মানুষের। তাঁদের মধ্যে মহানগরীতেই বাস করেন ২৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৭ জন। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের চিকিৎসাসেবায় ভরসার অন্যতম নাম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালটিতে নেই নন-কমিউনিক্যাবল ডিজিজ বা এনসিডি কর্নার। এতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন লাখো মানুষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, বাংলাদেশে প্রতিবছর মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ হয় অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ হৃদ্‌রোগে এবং সরাসরি ডায়াবেটিসে মারা যান ৩ শতাংশ মানুষ। অসংক্রামক রোগে প্রতিবছর মারা যান ৫ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ জন। অকালমৃত্যুর হার ২২ শতাংশ।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশে প্রতিনিয়ত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, কিডনি রোগ, স্ট্রোকসহ নানান অসংক্রামক

রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব রোগের কারণে প্রতিবছর বহু মানুষের অকালে মৃত্যু হয় নির্দিষ্ট বয়সসীমার আগে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রোগীদের উচ্চ রক্তচাপসহ অসংক্রামক রোগ শনাক্ত, বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান এবং ফলোআপ কার্যক্রম শক্তিশালী করার উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৮ সালে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এনসিডি কর্নার চালু করা হয়। যেকোনো সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী আসার পর তাঁর নাম রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রোগীকে এনসিডি কর্নারে পাঠানো হয়।

রোগীর সমস্যা সাধারণ হলে বহির্বিভাগের চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেন। সমস্যা বেশি হলে পরীক্ষার জন্য পাঠান।পরীক্ষার প্রতিবেদন যাচাই করে চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হলে চিকিৎসা দেন অন্যথায় একই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগীর বক্তব্য শুনে এবং পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসাসেবা দেন। অবস্থা জটিল হলে ভর্তির পরামর্শ দেন।

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক তপন কান্তি সরকার বলেন, ‘আমাদের এখানে এনসিডির জন্য নির্দিষ্ট কোনো কর্নার করা হয়নি। তবে মেডিসিন বিভাগে আসা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কামরুল হাসান রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।’

মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন মেডিসিন বিভাগে ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী আসেন। তাঁদের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ জনের মতো রোগী থাকেন, যাঁদের মধ্যে এনসিডির বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। এখানে আসার পর আমরা রোগীদের সঙ্গে আন্তরিক পরিবেশে কথা বলি, সমস্যাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনি। পরে রোগীর রুটিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র ও পরবর্তী কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হলে রোগীদের বলে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার প্রতিবেদনের আলোকে নির্দিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। ওষুধের সরবরাহ থাকলে রোগীদের বিনা মূল্যে সব ধরনের ওষুধও দেওয়া হয়।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত