পল্লীকবির মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, ১৫: ৩৮
Thumbnail image

ফরিদপুরে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও জসীম ফাউন্ডেশনের সভাপতি অতুল সরকারের নেতৃত্বে গতকাল সকাল ৮টায় শহরের গোবিন্দপুরে কবির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় জেলা পুলিশ, আনসার উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

কবির বাড়ির আঙিনায় সকাল সোয়া ৮টার দিকে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করা হয়। সভার শুরুতে কবি ও তাঁর পরিবারের মৃত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায়ের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। আবু সুফিয়ান চৌধুরী কুশলের পরিচালনায় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জামাল পাশা, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক আসলাম মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ সাইফুল কবির, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় কবির ছেলে ড. জামাল আনোয়ার, কবি শওকত আলী জাহিদ, নারীনেত্রী আসমা আক্তার মুক্তা, অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী বারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীন তাঁর সাহিত্যের মাধ্যমে বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য বিশ্বব্যাপী তুলে ধরেছেন। গ্রাম-বাংলার সেই রূপ-সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হলে জানতে হবে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনকে, পড়তে হবে তাঁর কবিতা ও গ্রন্থাবলি। যিনি গাছের পাশে, নদীর পাড়ে মাটিতে বসে মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে কবিতা, গল্প লিখতেন।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, রূপসী গ্রাম-বাংলাকে তাঁর মতো ভালোবেসে অন্য কেউ সাহিত্য রচনা করেননি। জসীমউদ্‌দীন পল্লির মানুষকে নায়ক-নায়িকায় পরিণত করেছেন। আসমানী, গুনাই বিবি, রুপাই, সাজু প্রভৃতি তাঁর সৃষ্ট শ্রেষ্ঠ চরিত্র। তাই তিনি ‘পল্লীকবি’ হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখা কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় অবদান। বর্তমান ডিজিটাল যুগে গ্রাম বাংলার সেই রূপ-সৌন্দর্য প্রায় হারিয়েই গেছে। গ্রাম বাংলার সেই রূপ-সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হলে জানতে হবে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনকে, পড়তে হবে তাঁর কবিতা-গ্রন্থাবলি।

পল্লীকবিকে স্মরণ রাখতে কবিকে নিয়ে সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। তিনি এ সময় জানান, আগামী ঈদের পর ‘জসীম পল্লী মেলা’ আয়োজন করা হবে। তবে এবারের মেলাটি ভিন্নভাবে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। মেলাটি যেন পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনকে স্মরণ করিয়ে দেয়, সে জন্য মেলা চলাকালীন নিয়মিত কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা, কবির রচিত গান, কবিতা, গল্প ইত্যাদি উপস্থাপনের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া এই জনপদে আরও যে সকল কবি, লেখক বা সাহিত্যিক রয়েছেন, তাঁদের নিয়েও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাঙালি কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক জসীমউদ্‌দীন ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর সদরের কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানাবাড়িতে জন্ম নেন। কবির বাবা আনছারউদ্‌দীন ও মা আমেনা খাতুন। তিনি ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ মারা যান। কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে।

সেখানে প্রাথমিক শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে এসএসসি, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি ও একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে এমএ পাস করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন কবি। তিনি বাল্য বয়স থেকেই কাব্য চর্চা করতেন। তিনি ১৯৭৬ সালে ইউনেসকো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি. লিট উপাধি ও ১৯৭৬ সালে ২১শে পদকে ভূষিত হন। ‘পল্লীকবি’ উপাধিতে ভূষিত জসীমউদ্‌দীন আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ আধুনিক কবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

বিচার বিভাগের সমস্যা তুলে ধরলেন বিচারক, আনিসুল হক বললেন ‘সমস্যা কেটে যাবে’

বিদ্যালয়ে একই পরিবারের ১৬ জনের চাকরি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ভাতা নয়, সঞ্চয়পত্র কিনে দিচ্ছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত