Ajker Patrika

জোটেনি কোনো ভাতা ও সরকারি স্বীকৃতি

কে এম মিঠু, গোপালপুর
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৮
জোটেনি কোনো ভাতা ও সরকারি স্বীকৃতি

গোপালপুরের হাদিরা ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের একাত্তরের শহীদ পরিবারের হতদরিদ্র বিধবাদের ভাগ্যে কোনো সরকারি ভাতা এখন পর্যন্ত জোটেনি। এই শহীদ পরিবারের বিধবা ও অসহায় সন্তানেরা চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে দিন পার করছেন।

হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের তালুকদার জানান, ১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ওই গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা চালায়। এতে ১৭ জন শহীদসহ শতাধিক আহত হন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অসংখ্য বাড়িঘর। নগদা শিমলা যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে এ হামলা চালায় পাকিস্তানিরা।

এরপর হানাদারেরা পানকাতা ইসলামীয়া হাইস্কুলের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে হামলা চালায়। ১০-১২ জন মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদপুর গ্রামের বটতলায় তাঁদের বাধা দেন। টানা দুই ঘণ্টা সেখানে যুদ্ধ চলে। একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। এসব হামলায় আহতরা প্রায় সবাই পঙ্গু হয়ে বিনা চিকিৎসায় পরে মারা যান।

যুদ্ধাহত সমলা বেগম বলেন, ‘আমার দুই ঊরুতে গুলি লাগে। অর্থাভাবে অপারেশন করতে না পারায় সেই গুলি নিয়ে এখনো যন্ত্রণায় ভুগী। স্বাধীনতার তিন বছর পর এক দিনমজুরের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। চার বছর পর স্বামী মারা যান। শেষ সম্বল ভিটেবাড়ি বিক্রি করে দুই মেয়ের বিয়ে দিই। এখন ছোট ভাই শাহআলমের বাড়িতে থাকি। বিধবা বা বয়স্ক ভাতা পাইনি।’

মাহমুদপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ বলেন, শহীদ পরিবারের ১৩ বিধবার মধ্যে এখন শুধু আমজাদ ফকিরের স্ত্রী রাবেয়া এবং দুদু ফকিরের স্ত্রী সালহা বেগম দুঃসহ স্মৃতি আর অভাব অনটনের মধ্যে বেঁচে আছেন।

শহীদ দুদু ফকিরের সন্তান গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বাবা শহীদ হওয়ার পর অভাব অনটনের সঙ্গে লড়াই করে মা বহু কষ্টে আমাদের মানুষ করেছেন। আর্থিক সহায়তা নয়, শুধু শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেই আমরা খুশি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ মল্লিক বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে শহীদ পরিবারের অসচ্ছল বিধবা ও সন্তানেরা সরকারি ভাতা না পাওয়ার খবরটি অস্বস্তিকর। এরা যাতে নিয়মানুযায়ী ভাতা পান সেটি দেখা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত