ওয়ানডেতেও চাপে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২২, ০৬: ৩২
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২২, ১২: ০১

সাধারণত আত্মবিশ্বাসী মনোভাবেই ওয়ানডে ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশ দল। এই সংস্করণ নিয়ে নিজেদের ‘গর্ব করা উচিত’ কথাটা অনেকবারই শোনা গেছে অধিনায়ক তামিম ইকবালের মুখে। সেটা বলার যৌক্তিক কারণও আছে। এই সংস্করণে ধারাবাহিক নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলে বাংলাদেশ। অথচ হারারেতে পরশু সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের কাছে পাত্তাই পাননি তামিমরা।

জিম্বাবুয়ের কাছে এভাবে হেরে দলের আত্মবিশ্বাসও একটু টলে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে গতকাল আর মাঠে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি বাংলাদেশ দল। বিশ্রামেই কেটেছে দিনটা। টানা খেলার মাঝে একটু বিশ্রাম নিয়ে যদি চনমনে হওয়া যায়। এবার জিম্বাবুয়ে সফরে একের পর এক চিন্তার খবর আসছে বাংলাদেশ দল থেকে। আততায়ীর মতো চোট হানা দিয়েছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ না হতেই পুরো সফর থেকে ছিটকে গেছেন নুরুল হাসান সোহান। পরশু হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে সফর শেষ হয়ে গেছে এই মুহূর্তে দলের সেরা ব্যাটার লিটন দাসের। লিটনকে না পাওয়া বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা অবশ্যই।

সোহান-লিটনের বদলি হিসেবে গতকাল সন্ধ্যায় জিম্বাবুয়েতে রওনা দিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম ও ইবাদত হোসেন। যদিও লম্বা ভ্রমণ শেষে আজ তাঁদের মাঠে নামার সম্ভাবনা ক্ষীণ। লিটনের জায়গায় খেলতে তিন থেকে ওপেনিংয়ে উঠে আসতে পারেন এনামুল হক বিজয়। সে ক্ষেত্রে তাঁর তিন নম্বর পজিশনে একাদশে ঢুকতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে শান্তর ব্যাট হাসেনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত পরশু প্রথম ওয়ানডেতে তাঁকে বসিয়ে তাই বিজয়কে সুযোগ দেওয়া হয়।

একাদশে দেখা মিলতে পারে নাসুম আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম, দুই বাঁহাতি স্পিনারের একজনকে। জিম্বাবুয়ের প্রথম পাঁচ ব্যাটারই ডানহাতি। পরশু বাংলাদেশ একাদশে ছিল না কোনো বাঁহাতি স্পিনার। ম্যাচ-আপের সুযোগ নিয়ে তাই মিরাজ-মোসাদ্দেকদের ওপর চড়াও হন দুই জিম্বাবুইয়ান ব্যাটার সিকান্দার রাজা ও ইনোসেন্ট কাইয়া। এই জুটিই মূলত বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচটা ছিনিয়ে নেয়। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলেনে গেম প্ল্যানে ভুলের কথা অকপটে স্বীকারও করেছেন তামিম। একাদশে কোনো বাঁহাতি স্পিনার না থাকা নিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘হ্যাঁ, এখন তো মনে হচ্ছে একজন বাঁহাতি স্পিনার হলে ভালো হতো।’

ভাবনা আছে বাংলাদেশের ফিল্ডিং নিয়েও। গত শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কয়েকটি ক্যাচ হাতছাড়া করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ফিল্ডিং নিয়ে চিন্তিত অধিনায়ক তামিমও। তাতে অবশ্য আড়াল হচ্ছে না পেসারদের ব্যর্থতা। বাংলাদেশের বিপরীত চিত্র জিম্বাবুয়ে দলে। প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর নিয়মিত অধিনায়ক ও দলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন খেলোয়াড়কে ছাড়াই প্রথম ওয়ানডেতে অবলীলায় বাংলাদেশকে হারিয়েছে স্বাগতিকেরা।

আজ হারারেতে নতুন এক অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। গত দুই বছরে ওয়ানডেতে যেটা ভুলেই গিয়েছিল তারা। গত দুই বছরে বাংলাদেশ যে ৭টি ওয়ানডেতে সিরিজ খেলেছে (সব কটিই ৩ ম্যাচের সিরিজ), কোনোটিতেই প্রথম ম্যাচ হেরে সিরিজ হারের শঙ্কায় পড়তে হয়নি। হারারেতে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে তাই বিষম চাপ জেঁকে বসছে তামিমদের ওপর। গত বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ডে সিরিজ হারটা বাদে এই সংস্করণে বাংলাদেশ এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য গতিতেই এগোচ্ছিল। নিয়মিত জিততে জিততে যে মানসিক ব্যাপারটা ঘটে, হারারেতে পরশু সেই অতি আত্মবিশ্বাসই কি এই পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশকে?

এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার একটাই উপায়—জয়। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে, গতকাল জিম্বাবুয়েতে রওনা দেওয়ার আগে পেসার ইবাদত সেটিই বলে গেলেন, ‘দুই-একটা ম্যাচ খারাপ হলে আমরা দল হিসেবে খারাপ? বাকি দুই ম্যাচ জিতলে সিরিজ আমাদেরই।’ তা তো বটেই। কিন্তু আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কাজটা যে মোটেও সহজ নয়, এরই মধ্যে প্রমাণিত। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত