কুড়িগ্রামে এক মাস ধরে বিদ্যুৎহীন সাড়ে ৮ হাজার গ্রাহক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১৪: ১২

সাবমেরিন কেবলের সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কয়েকটি চরাঞ্চলে প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসব এলাকার পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাড়ে আট হাজার গ্রাহক। আমনখেতে সেচ এবং বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল গৃহস্থালি সরঞ্জাম ব্যবহারে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে তারা।

কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) তথ্য অনুযায়ী, নাগেশ্বরীর মাদারগঞ্জ এলাকা থেকে চরাঞ্চলের দিকে স্থাপিত সাবমেরিন কেব্‌লে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এতে নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর এবং সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কেব্‌লের ত্রুটি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তবে নদীর পানি বাড়তে থাকায় মেরামতকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগতে পারে।

নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নারায়ণপুর প্রামাণিকপাড়ার বাসিন্দা ইব্রাহিম বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তির কথা জানিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক মাস ধরে এলাকায় বিদ্যুৎ নাই। এখন ল্যাম্প (কেরোসিন দিলে জ্বালানো গ্রামীণ বাতি) জ্বালিয়ে থাকি। আমাদের বিড়ম্বনার শেষ নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেচপাম্প খুলে রেখে শ্যালো মেশিন দিয়ে আমনের সেচ দিচ্ছি। বাড়িতে ফ্যান চালানো বন্ধ। গরমে শিশুদের অবস্থা বেশি খারাপ। সন্ধ্যার পর বাজারে গিয়ে জেনারেটরে মোবাইল চার্জ দিয়ে আনি। বাটন ফোনের চার্জ খরচ ২০ টাকা, স্মার্ট ফোন হলে ৩০ টাকা নিচ্ছে।’

নারায়ণপুরের উত্তর ঢাকদহর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমরা খুব সমস্যায় আছি। রাতে বাড়িঘর অন্ধকার থাকছে। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না। পাম্প বন্ধ থাকায় পানি সেচ দিতে পারছি না। কৃষির খুব ক্ষতি হচ্ছে। অনেক টাকা খরচ করে শ্যালো কিনছে। কিন্তু সবার সেই সাধ্য নাই। কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

একই অবস্থা যাত্রাপুর ইউনিয়নের দ্বীপচর রলাকাটার চর, চর ভগবতীপুর, বড়ুয়ার চর, চিড়া খাওয়ার চর, ঝুনকারচরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার। রলাকাটার চরের বাসিন্দা মুনির হোসেন বলেন, ‘এক মাস ধরে বিদ্যুৎ নাই। আমাদের নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথাও নেই।

বিদ্যুতের অভাবে এলাকায় মানুষ চরম কষ্টে আছে।’ একই ভোগান্তির কথা জানান ঝুনকার চরের ফারুক ও ভগবতীপুরেরবাবু।

পবিস কুড়িগ্রামের জেনারেল ম্যানেজার মো. মহিতুল ইসলাম বলেন, ‘ভূগর্ভস্থ লাইনে ত্রুটি হয়েছে। নদীতে পানি বেশি থাকায় এখনো ত্রুটি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। আমরা ত্রুটি চিহ্নিত করার কাজ করছি। শিগগির মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত