Ajker Patrika

৩৫ বছর ভালুকের মতো চলাফেরা

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
৩৫ বছর ভালুকের  মতো চলাফেরা

গায়ে পোশাক নেই। পরলেও রাখতে পারেন না। হাতে ভর দিয়ে ভালুকের মতো ৩৫ বছর ধরে হাঁটছেন। পা দুটি পেছনে এবং হাত দুটি সামনের দিকে বাঁকিয়ে কিম্ভূতকিমাকার ভঙ্গিতে চলাচল করেন তিনি। রাতে ভয়ংকর হাঁটার এ দৃশ্য দেখে অনেকেই ভয়ে আঁতকে ওঠেন।

নাম তাঁর মোহাম্মদ মজনু মিয়া (৪৫)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আইরল গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পাঁচ বছর বয়সে বিরল রোগে আক্রান্ত হন।

এরপর থেকেই চতুষ্পদ জন্তুর মতো হাঁটেন। সারা দিন এ বাড়ি ও বাড়ি ঘোরেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চার ভাই এবং তিন বোনসহ সাত ভাই-বোনের মধ্যে মজনু মিয়ার অবস্থান দ্বিতীয়। হঠাৎ করেই এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে আর হাঁটতে পারেন না মজনু মিয়া। জমিজমা বিক্রি করে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়ে কোনো ফল না পেয়ে চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাবা মো. রবি উল্লাহ জানান, মজনু সারা দিন বাইরে থাকে। এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে বেড়ায়। খুঁজে পেতে কষ্ট হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় খুঁজে বের করে বাড়িতে আনতে হয়। কিছুদিন তাঁকে উঠানে গর্ত করে গর্তের ভেতর আটকে রাখা হয়েছিল। কান্নাকাটি করে বলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

মা অনুফা বেগম জানান, ডাক্তার, কবিরাজ, ঝাড়ফুঁক থেকে শুরু করে সব ধরনের চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু এই রোগের কোনো সমাধান হয়নি। ছেলের সুচিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সৈয়দ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এই রোগটাকে টান সিনড্রোম বলা হয়। এটা নিউরোনাল, জেনেটিক এবং পরিবেশগত সাব সিস্টেম। অভিভাবকেরা এটাকে বাতাস লাগছে বলে কবিরাজের কাছে নিয়ে যান। ঝাড়ফুঁক প্রথা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মজনু মিয়া অপচিকিৎসার শিকার।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত