চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পানিসংকটে প্রায় ৫০০ হেক্টর কৃষিজমি চাষাবাদে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে পানি সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে কৃষকদের। সমস্যা সমাধানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষি অধিদপ্তরের দারে দারে ঘুরছেন কৃষকেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১১ নম্বর হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের পাতানিশ ও তার আশপাশের প্রায় ৫০০ হেক্টর কৃষি জমির আলু ফলন শেষে বোরো আবাদের কার্যক্রমে চাষিরা অগ্রসর হয়। কিন্তু হঠাৎ করে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বন্ধ হয়ে যায় পানি সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম। এরপর থেকে চাষাবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়ে যায় কৃষকেরা।

সরেজমিনে জানা গেছে, বিগত বছরের পানি সেচ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সোহেল পাটোয়ারী এবার হঠাৎ করে সেচ প্রকল্পটি পরিচালনা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ইতিমধ্যে কৃষকেরা ইরি-বোরো চাষের জন্য বীজতলায় ধানের চারা ও জমি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের ব্যবস্থাপকের একগুঁয়েমি পানি সংকটে প্রায় ৫০০ হেক্টর ফসিল জমি বোরো ধান চাষাবাদে অনিশ্চয়তায় পড়ে।

পাতানিশ এলাকার কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন, ফারুক হোসেন, বিল্লাল হোসেন, আবদুল কুদ্দুস মুন্সী কৃষি ও সেচ প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দ্রুত সেচ প্রকল্প চালুর ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।

পানি সেচের সংকটে পড়ায় পাতানিশ পূর্ব মাঠ, ধড্ডা, নোয়াপাড়া, সাদিপুরা, পদুয়া, পূর্ব কালচোঁ গ্রামের কয়েকশ কৃষক রয়েছেন। পাতানিশ দক্ষিণ-পশ্চিম মাঠের সাড়াশিয়া, নিশ্চিন্তপুর ও পাতানিশ এলাকার ৬৫ একর জমি। পাতানিশ দক্ষিণ মাঠে কাঁঠালী ও পাতানিশ এলাকায় ২৫ একরসহ পাতানিশ উত্তর মাঠে পাতানিশ-ধড্ডা এলাকায় ৪০ একর, কচুয়া অংশের দুই শতাধিকসহ প্রায় ৫০০ একর কৃষি জমি বোরো চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পাতানিশ এলাকার ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম সবুজ বলেন, পাতানিশের চারপাশের ফসলি মাঠে সেচ প্রকল্প কার্যক্রম স্থবির হওয়ায় কৃষকেরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ চান তিনি।

সেচ প্রকল্পের দায়িত্বরত ম্যানেজার সোহেল পাটোয়ারী বলেন, ‘চলতি বছর সেচ কার্যক্রম পরিচালনা না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তবে কি কারণে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

কৃষি ফিল্ড অফিসার কামাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, সোহেল পাটোয়ারীর সঙ্গে কথা বলে কোন সঠিক সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। সেচ প্রকল্প চালু না হলে কৃষকদের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

জানতে চাইলে হাজীগঞ্জ উপজেলা সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মামুন হোসেন বলেন, ‘সেচ প্রকল্প ম্যানেজার সোহেল পাটোয়ারী। তিনি সেচ প্রকল্প নিয়ে অব্যাহতিপত্র দেয়নি। এখন যথাসময়ে সেচ প্রকল্প চালু না করলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মামুন হোসেন আরও বলেন, গতবারের চেয়ে এবার হাজীগঞ্জে উপজেলায় সেচ প্রকল্প বেশি। হাজীগঞ্জে বড় সাতটা সেচ প্রকল্পসহ মোট ২৫টা সেচ প্রকল্পর কার্যক্রম চলমান আছে।