অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন-সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে কয়েক শ চিকিৎসক যুক্ত আছেন চিকিৎসাসেবায়—পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে সে ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
আজকের পত্রিকা: সিআইডির মতে, ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে ৩০০ জন ডাক্তার হয়েছেন। এটা কীভাবে সম্ভব হলো?
ডা. রশিদ-ই-মাহবুব: এটা শুধু মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষা ছিল। ডাক্তারি পাস করার পরীক্ষা ছিল না। যাঁরা মেডিকেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তাঁরা সবাই কিন্তু উপযুক্ত। এ পরীক্ষায় একটা স্কোর নম্বর পেতে হয়। শুধু যাঁরা এ নম্বর পান না, তাঁরা ভর্তির জন্য মনোনীত হন না। আর যাঁদের ভর্তি করা হয়, তাঁরা সেই নম্বর অর্জন করেন। সুতরাং আপনার বা আমার সন্দেহ হচ্ছে, তারা অসদুপায়ে সেই নম্বরটা পেয়ে ভর্তি হয়েছেন। অথবা প্রমাণ আছে, তাঁরা অসদুপায়
অবলম্বন করেছেন।
এখন মিডিয়া বলছে, তাঁরা অসদুপায় অবলম্বন না করলে এ নম্বর পেতেন না; আর তাঁরা মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পরেও সব পরীক্ষায় নকল করে পাস করেছেন। তাহলে কথা হলো, পুরো সিস্টেমের মধ্যেই সমস্যা আছে। আর কোনো একটা গ্রুপ এসবের সঙ্গে যুক্ত। এটা না হলে তো তাঁরা এতগুলো ধাপ অতিক্রম করে ডাক্তার হতে পারতেন না।
আজকের পত্রিকা: এমনিতেই দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে। এ ধরনের ডাক্তারের মাধ্যমে রোগীর ভুল চিকিৎসার শঙ্কা আছে। আপনি কী বলবেন?
ডা. মাহবুব: প্রথম কথা হলো, ভর্তিতে কেউ ডাক্তার হয়ে যান না। ভর্তি হওয়ার পর তাঁকে আগে একাডেমিক পরীক্ষায় পাস করতে হয়। প্রথমে ভর্তি হওয়া একটা যোগ্যতা। তারপর অন্য ধাপগুলো অতিক্রম করে ডাক্তারি পেশায় আসতে হয়। তাঁরা কি মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পরেও পরবর্তীকালে নকল করে ডাক্তারি পাস করেছেন? এভাবে নকল করে ডাক্তার হওয়ার কী শাস্তি হওয়া দরকার, সেটা আমার জানা নেই।
আজকের পত্রিকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার কুশীলব ছিলেন যুগ্ম কর কমিশনার, উপসচিব, চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তা। আপনি কি মনে করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে?
ডা. মাহবুব: আমার মনে করার কোনো বিষয় নয়। অন্যায় করলে যে কারও বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। আমি কী বললাম, সেটা দিয়ে তো কিছু হবে না। তবে রাষ্ট্রীয় প্রচলিত আইন এ ধরনের অপরাধীর বিরুদ্ধেও প্রয়োগ করা উচিত।
আজকের পত্রিকা: কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তো আমাদের দেশে অপরাধীরা পার পেয়ে যান।
ডা. মাহবুব: সে জন্য জনগণের সচেতনতা খুব জরুরি বিষয়। এমনিতেই আমাদের দেশের রাজনীতিবিদেরা এগুলোকে পাত্তা দিতে চান না। কিন্তু হচ্ছে না, হবে না—ব্যাপারগুলো সে রকম নয়। আজকে যেহেতু প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেহেতু ভবিষ্যতে এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও সজাগ হতে হবে।
আজকের পত্রিকা: যাঁরা অনৈতিকভাবে ডাক্তার হয়েছেন, তাঁদের কি চিকিৎসাসনদ বাতিল করা উচিত বলে মনে করেন?
ডা. মাহবুব: প্রথমত, এ প্রশ্নের উত্তর আমি সরাসরি দিতে পারব না। এর কারণ হলো, যাঁরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র নিয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে। কিন্তু তাঁরা কি ভর্তি হওয়ার পরও অবৈধভাবে পাস করেছেন? সে তদন্তও হতে হবে। তাঁরা যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় ডাক্তারি পাস করে থাকেন, তাহলে তাঁদের ডাক্তার হওয়াটা বৈধ। আর যদি পাস না করেন, তাহলে তো তাঁরা ফেল করতেন। এখানে তো ফেল করা নিয়ে কথা হচ্ছে না। তাঁরা পাস করেছেন বলেই তো ডাক্তার হতে পেরেছেন।
আজকের পত্রিকা: পত্রিকার প্রকাশিত রিপোর্টমতে, তাঁরা ভর্তি হওয়ার পরেও অবৈধভাবে সব পরীক্ষায় পাস করেছেন।
ডা. মাহবুব: তারা রিপোর্টে ভুল কথা লিখেছে। ফাঁস করা প্রশ্নপত্রে তাঁরা ভর্তি হয়েছেন।
কিন্তু তাঁরা যে মেডিকেল পরীক্ষায় দুর্নীতির মাধ্যমে পাস করেছেন, সেই প্রমাণ কি তাদের কাছে আছে? দ্বিতীয় কথা হলো, তাঁরা যদি দুর্নীতি করে ডাক্তারি পাস করে থাকেন, তাহলে রাষ্ট্রীয় যে আইন আছে, সেটা এ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। আর এ বিষয়ে যদি কোনো আইন না থাকে, তাহলে জাতীয় সংসদে আগে এ আইন পাস করতে হবে, তাঁদের কী শাস্তি দেওয়া যায়।
আজকের পত্রিকা: এ বিষয়ে তো আইন থাকার কথা।
ডা. মাহবুব: অসদুপায় অবলম্বনের জন্য তো আইন আছে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। যেমন কেউ যদি ডাক্তার না হয়ে এ পেশায় অবৈধভাবে যুক্ত থাকেন, সেসব ক্ষেত্রে দেশে প্রচলিত আইন আছে।
আর একটা কথা হলো, কেউ যদি ডাক্তার হওয়ার জন্য মেধাগতভাবে উপযুক্ত না হয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন, তাঁর বিরুদ্ধে তো আইনে ফয়সালা আছে। অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এখানে দুটি ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত, অসদুপায় অবলম্বন করার মতো অনৈতিক কাজ তাঁরা করেছেন। দ্বিতীয়ত, প্রক্রিয়াগতভাবে তাঁরা পাস করেছেন। এ কারণে এটা একটা দ্বিমুখী সমস্যা, একমুখী তো নয়। এখন তাঁদের ডাক্তারি ডিগ্রি বাতিল করার এখতিয়ার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের। মেডিকেল কলেজ আইনে যদি তা থাকে, কেউ অসদুপায় অবলম্বন করে ভর্তি হলে সেটা অবৈধ, তাহলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ
করতে পারে। তাঁদের ছাত্রত্ব বাতিল না করা পর্যন্ত তো বিএমডিসি কিছু করতে পারবে না। তারপর বিএমডিসির কাছে আসবে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার বিষয়টি। কারণ, বিচার করার বিষয়টি শুধু আইনের মধ্যে হতে পারে। অপকর্ম ধরার এখতিয়ার শুধু রাষ্ট্রের, যে শাখাগুলো এসবের তদারকির দায়িত্বে আছে, তাদের। তারা কী সমাধান দিয়েছে, সেটা তো আমি জানি না।
আজকের পত্রিকা: সিআইডি তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কথা বলেছে। এটা কি সঠিক সিদ্ধান্ত?
ডা. মাহবুব: এখন সিআইডি এই মামলা আদালতে দিতে পারে। তারপর আদালত সিদ্ধান্ত জানাবেন। আদালতের সক্ষমতা আছে কি না, সেটাও ভাবার বিষয়। আমার বলাতে কিছু হবে না। সেটা আদালতের দায়িত্ব। রাষ্ট্রের যদি সক্ষমতা থাকে, তাহলে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
আজকের পত্রিকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা কীভাবে রোধ করা যেতে পারে?
ডা. মাহবুব: এ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র এ ঘটনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতে হবে, যাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ভবিষ্যতে না ঘটে। পাশাপাশি, আইন না থাকলে প্রয়োজনে নতুন আইন পাস করতে হবে। আর প্রকৃত মেধাবীরা যাতে ভর্তি হতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সমাজের সার্বিক পচনের প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আপনি কী বলবেন?
ডা. মাহবুব: মিডিয়া, রাষ্ট্র, জনগণ, রাজনীতিবিদেরা কী দায়িত্ব পালন করছে? সম্মিলিত চেষ্টায় এটা করতে হবে। এসব ঘটনা তো কারও একক দায়িত্ববোধের ব্যাপার নয়। এ ধরনের ঘটনা যদি আর না ঘটে, সে জন্য গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আইনে যদি প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে কিছু একটা হলেও হতে পারে।
আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। এ জন্য উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় পরীক্ষাটা নেওয়া দরকার। তার মানে, প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত সতর্কভাবে পর্যালোচনা করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন-সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে কয়েক শ চিকিৎসক যুক্ত আছেন চিকিৎসাসেবায়—পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে সে ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার মাসুদ রানা।
আজকের পত্রিকা: সিআইডির মতে, ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে ৩০০ জন ডাক্তার হয়েছেন। এটা কীভাবে সম্ভব হলো?
ডা. রশিদ-ই-মাহবুব: এটা শুধু মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষা ছিল। ডাক্তারি পাস করার পরীক্ষা ছিল না। যাঁরা মেডিকেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তাঁরা সবাই কিন্তু উপযুক্ত। এ পরীক্ষায় একটা স্কোর নম্বর পেতে হয়। শুধু যাঁরা এ নম্বর পান না, তাঁরা ভর্তির জন্য মনোনীত হন না। আর যাঁদের ভর্তি করা হয়, তাঁরা সেই নম্বর অর্জন করেন। সুতরাং আপনার বা আমার সন্দেহ হচ্ছে, তারা অসদুপায়ে সেই নম্বরটা পেয়ে ভর্তি হয়েছেন। অথবা প্রমাণ আছে, তাঁরা অসদুপায়
অবলম্বন করেছেন।
এখন মিডিয়া বলছে, তাঁরা অসদুপায় অবলম্বন না করলে এ নম্বর পেতেন না; আর তাঁরা মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পরেও সব পরীক্ষায় নকল করে পাস করেছেন। তাহলে কথা হলো, পুরো সিস্টেমের মধ্যেই সমস্যা আছে। আর কোনো একটা গ্রুপ এসবের সঙ্গে যুক্ত। এটা না হলে তো তাঁরা এতগুলো ধাপ অতিক্রম করে ডাক্তার হতে পারতেন না।
আজকের পত্রিকা: এমনিতেই দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে। এ ধরনের ডাক্তারের মাধ্যমে রোগীর ভুল চিকিৎসার শঙ্কা আছে। আপনি কী বলবেন?
ডা. মাহবুব: প্রথম কথা হলো, ভর্তিতে কেউ ডাক্তার হয়ে যান না। ভর্তি হওয়ার পর তাঁকে আগে একাডেমিক পরীক্ষায় পাস করতে হয়। প্রথমে ভর্তি হওয়া একটা যোগ্যতা। তারপর অন্য ধাপগুলো অতিক্রম করে ডাক্তারি পেশায় আসতে হয়। তাঁরা কি মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পরেও পরবর্তীকালে নকল করে ডাক্তারি পাস করেছেন? এভাবে নকল করে ডাক্তার হওয়ার কী শাস্তি হওয়া দরকার, সেটা আমার জানা নেই।
আজকের পত্রিকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার কুশীলব ছিলেন যুগ্ম কর কমিশনার, উপসচিব, চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তা। আপনি কি মনে করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে?
ডা. মাহবুব: আমার মনে করার কোনো বিষয় নয়। অন্যায় করলে যে কারও বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। আমি কী বললাম, সেটা দিয়ে তো কিছু হবে না। তবে রাষ্ট্রীয় প্রচলিত আইন এ ধরনের অপরাধীর বিরুদ্ধেও প্রয়োগ করা উচিত।
আজকের পত্রিকা: কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তো আমাদের দেশে অপরাধীরা পার পেয়ে যান।
ডা. মাহবুব: সে জন্য জনগণের সচেতনতা খুব জরুরি বিষয়। এমনিতেই আমাদের দেশের রাজনীতিবিদেরা এগুলোকে পাত্তা দিতে চান না। কিন্তু হচ্ছে না, হবে না—ব্যাপারগুলো সে রকম নয়। আজকে যেহেতু প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেহেতু ভবিষ্যতে এটা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও সজাগ হতে হবে।
আজকের পত্রিকা: যাঁরা অনৈতিকভাবে ডাক্তার হয়েছেন, তাঁদের কি চিকিৎসাসনদ বাতিল করা উচিত বলে মনে করেন?
ডা. মাহবুব: প্রথমত, এ প্রশ্নের উত্তর আমি সরাসরি দিতে পারব না। এর কারণ হলো, যাঁরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র নিয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে। কিন্তু তাঁরা কি ভর্তি হওয়ার পরও অবৈধভাবে পাস করেছেন? সে তদন্তও হতে হবে। তাঁরা যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় ডাক্তারি পাস করে থাকেন, তাহলে তাঁদের ডাক্তার হওয়াটা বৈধ। আর যদি পাস না করেন, তাহলে তো তাঁরা ফেল করতেন। এখানে তো ফেল করা নিয়ে কথা হচ্ছে না। তাঁরা পাস করেছেন বলেই তো ডাক্তার হতে পেরেছেন।
আজকের পত্রিকা: পত্রিকার প্রকাশিত রিপোর্টমতে, তাঁরা ভর্তি হওয়ার পরেও অবৈধভাবে সব পরীক্ষায় পাস করেছেন।
ডা. মাহবুব: তারা রিপোর্টে ভুল কথা লিখেছে। ফাঁস করা প্রশ্নপত্রে তাঁরা ভর্তি হয়েছেন।
কিন্তু তাঁরা যে মেডিকেল পরীক্ষায় দুর্নীতির মাধ্যমে পাস করেছেন, সেই প্রমাণ কি তাদের কাছে আছে? দ্বিতীয় কথা হলো, তাঁরা যদি দুর্নীতি করে ডাক্তারি পাস করে থাকেন, তাহলে রাষ্ট্রীয় যে আইন আছে, সেটা এ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। আর এ বিষয়ে যদি কোনো আইন না থাকে, তাহলে জাতীয় সংসদে আগে এ আইন পাস করতে হবে, তাঁদের কী শাস্তি দেওয়া যায়।
আজকের পত্রিকা: এ বিষয়ে তো আইন থাকার কথা।
ডা. মাহবুব: অসদুপায় অবলম্বনের জন্য তো আইন আছে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। যেমন কেউ যদি ডাক্তার না হয়ে এ পেশায় অবৈধভাবে যুক্ত থাকেন, সেসব ক্ষেত্রে দেশে প্রচলিত আইন আছে।
আর একটা কথা হলো, কেউ যদি ডাক্তার হওয়ার জন্য মেধাগতভাবে উপযুক্ত না হয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন, তাঁর বিরুদ্ধে তো আইনে ফয়সালা আছে। অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এখানে দুটি ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত, অসদুপায় অবলম্বন করার মতো অনৈতিক কাজ তাঁরা করেছেন। দ্বিতীয়ত, প্রক্রিয়াগতভাবে তাঁরা পাস করেছেন। এ কারণে এটা একটা দ্বিমুখী সমস্যা, একমুখী তো নয়। এখন তাঁদের ডাক্তারি ডিগ্রি বাতিল করার এখতিয়ার মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের। মেডিকেল কলেজ আইনে যদি তা থাকে, কেউ অসদুপায় অবলম্বন করে ভর্তি হলে সেটা অবৈধ, তাহলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ
করতে পারে। তাঁদের ছাত্রত্ব বাতিল না করা পর্যন্ত তো বিএমডিসি কিছু করতে পারবে না। তারপর বিএমডিসির কাছে আসবে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার বিষয়টি। কারণ, বিচার করার বিষয়টি শুধু আইনের মধ্যে হতে পারে। অপকর্ম ধরার এখতিয়ার শুধু রাষ্ট্রের, যে শাখাগুলো এসবের তদারকির দায়িত্বে আছে, তাদের। তারা কী সমাধান দিয়েছে, সেটা তো আমি জানি না।
আজকের পত্রিকা: সিআইডি তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কথা বলেছে। এটা কি সঠিক সিদ্ধান্ত?
ডা. মাহবুব: এখন সিআইডি এই মামলা আদালতে দিতে পারে। তারপর আদালত সিদ্ধান্ত জানাবেন। আদালতের সক্ষমতা আছে কি না, সেটাও ভাবার বিষয়। আমার বলাতে কিছু হবে না। সেটা আদালতের দায়িত্ব। রাষ্ট্রের যদি সক্ষমতা থাকে, তাহলে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
আজকের পত্রিকা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা কীভাবে রোধ করা যেতে পারে?
ডা. মাহবুব: এ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র এ ঘটনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতে হবে, যাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ভবিষ্যতে না ঘটে। পাশাপাশি, আইন না থাকলে প্রয়োজনে নতুন আইন পাস করতে হবে। আর প্রকৃত মেধাবীরা যাতে ভর্তি হতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন করা যেতে পারে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সমাজের সার্বিক পচনের প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আপনি কী বলবেন?
ডা. মাহবুব: মিডিয়া, রাষ্ট্র, জনগণ, রাজনীতিবিদেরা কী দায়িত্ব পালন করছে? সম্মিলিত চেষ্টায় এটা করতে হবে। এসব ঘটনা তো কারও একক দায়িত্ববোধের ব্যাপার নয়। এ ধরনের ঘটনা যদি আর না ঘটে, সে জন্য গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আইনে যদি প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে কিছু একটা হলেও হতে পারে।
আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। এ জন্য উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় পরীক্ষাটা নেওয়া দরকার। তার মানে, প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত সতর্কভাবে পর্যালোচনা করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে