নানা সমস্যায় জর্জরিত কমিউনিটি ক্লিনিক

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ২১
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৩

নরসিংদীর রায়পুরায় জরাজীর্ণ ভবন, ঔষধ সল্পতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত বেশিরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক। এ কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ক্লিনিকগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করে, ঔষধের বরাদ্দ বৃদ্ধি করে, কেন্দ্রগুলো নজরদারিতে রাখা হোক। অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অদিদপ্তর বলছে, সরজমিনে সব ক্লিনিক ঘুরে নানাবিধ সমস্যার চাহিদাপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। এ সব ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, প্রজননস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরামর্শসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা।

উপজেলায় মোট ৫৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। মাত্র ২টি ক্লিনিক থেকে পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে। ৩৫টি ক্লিনিকের ভবন একেবারে জরাজীর্ণ। ১৭ টির অবস্থা কিছুটা ভালো। ২টি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদায়ক (সিএইচসিপি) নেই। সেখানে কয়েক জন ভলান্টিয়ার কাজ করেন। প্রতি ছয় হাজার জন্য একটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা।

সরেজমিনে বেশ কিছু ক্লিনিক ঘুরে জানা গেছে, বেশিরভাগ কেন্দ্র অবকাঠামো সমস্যা, শৌচাগার, পানি, বিদ্যুসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন মেরামত না করায় ভবন জরাজীর্ণ। কিছু ক্লিনিকে সিএইচসিপি নেই। কিছু ক্লিনিকে সিএইচসিপি থাকলেও তাঁরা ঠিক সময়ে আসেন না বা এলেও তাড়াতাড়ি চলে যান।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সকাল ৯টার মধ্যে ক্লিনিক খোলার কথা থাকলেও বেশ কিছু ক্লিনিক ১০টা পর্যন্ত তালাবদ্ধ থাকে। অনেক স্বাস্থকর্মী সময়মতো এলেও চলে যান নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে।

ক্লিনিকে আসা রোগী মরিয়ম বেগম (৫০), জুমা আক্তার (৩৫), সুমন (২৪) এবং রাজ্জাক (৫৬) একই কথা বললেন। তাঁরা মাথা ব্যাথা, জ্বর, ঠান্ডাসহ নানা রোগের কারণে ওষুধ নিতে আসেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়দ্বায়িত্বরত সেবাদাতা বলেন, বেশিরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন জরাজীর্ন। ক্লিনিগুলোতে নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ। আর স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারী কাজে নিয়মিত না।

সিএইচসিপির সংগঠনের রায়পুরা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক এস এম শরিফ বলেন, ‘আমরা একই বেতনে দীর্ঘ দিন ধরে নানা প্রতিকূলতায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের কাছে আকুল আবেদন আমাদের রাজস্ব খাতে অনর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূরউদ্দিন খান মো জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সরজমিনে সব ক্লিনিক ঘুরে নানাবিধ সমস্যার চাহিদাপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। গ্রামের দরিদ্র মানুষকে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে আমার পক্ষ থেকে যা যা করনীয়, তাই করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত