গাজীপুরে মায়ের বিরুদ্ধে শ্বাসরোধে দুই শিশুকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ওই দুই শিশুর লাশ কুমিল্লার দেবিদ্বারের বড় আলমপুরে দাফন করা হয়েছে। গত রোববার রাত ৯টার দিকে শিশুদের লাশ দেবিদ্বারে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। শত শত নারী-পুরুষ লাশ দেখতে ভিড় করেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। রাত ১০টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

দুই শিশু হলো দেবিদ্বারের বড় আলমপুর দক্ষিণ পশ্চিম পাড়ার বিল্লাল হোসেনের মেয়ে তাসনিম জাহান তাবিহা (৪) ও নুসরাত জাহান সাবিহা (৮ মাস)।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাস আগে গাজীপুর মহানগরীর পশ্চিম জয়দেবপুর মুক্তার টেক এলাকায় বাসা ভাড়া নেন বিল্লাল হোসেন। গত বৃহস্পতিবার বিল্লাল হোসেন তাঁর স্ত্রী লিজা আক্তার ও দুই শিশু সন্তানকে দেবিদ্বার উপজেলার চাঁনপুরের শ্বশুর বাড়ি থেকে গাজীপুরের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। পরে গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে বিল্লাল বাড়ির বাইরে গেলে স্ত্রী ঘরের দরজা বন্ধ করে তাঁর দুই শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে বিল্লাল বাসায় ফিরে ঘরের দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করেন।

লিজার মামা মো. মোজাম্মেল হক জানান, গত পাঁচ বছর আগে বড় আলমপুর গ্রামের আবু কাশেমের ছেলে বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে ফতেহাবাদ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে লিজা আক্তারের বিয়ে হয়। গত আট মাস ধরে লিজা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময়ে ঘরে রাগারাগি ও ভাঙচুর করতেন। তাঁকে বিভিন্ন চিকিৎসক ও কবিরাজের কাছে নিয়েও ভালো করা যায়নি। ঘটনার পর লিজাকে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন তাঁর সন্তানদের খুঁজছে। আবার জ্ঞান হারাচ্ছে।

দাদা মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার বড় নাতিন বাড়ি এলে আমার সঙ্গে এদিক সেদিক যেত। তাকে আমি কোলে নিয়ে ঘুরতাম। এখন আমি আর কাকে কোলে নেব? আমার ছেলের বউয়ের কোনো দোষ নেই। তিনি মানসিক অসুস্থ। আমাদের ভাগ্যে এমন দিন ছিল কেন?’