Ajker Patrika

রামেকের শিক্ষক কোয়ার্টারে ভাড়া ছাড়াই কর্মীদের বাস

রিমন রহমান, রাজশাহী
রামেকের শিক্ষক কোয়ার্টারে ভাড়া ছাড়াই কর্মীদের বাস

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) শিক্ষকদের একটি কোয়ার্টারে সপরিবার বসবাস করেন পাঁচ কর্মচারী। কিন্তু এ জন্য বিধি অনুযায়ী তাঁরা সরকারকে কোনো ভাড়া দেন না। রামেকের ক্যাশিয়ার মো. মইনউদ্দিন খোদ এই কোয়ার্টারে থাকেন বলে ভাড়া আদায়ে তিনিও কোনো উদ্যোগ নেন না। একইভাবে হিসাবরক্ষক হাফিজুর রহমানও থাকছেন বিনা ভাড়ায়।

বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার মইনউদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। তিনি দাবি করেন, কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত। তাই তাঁরা থাকেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামেক কর্তৃপক্ষ এখনো এই কোয়ার্টার পরিত্যক্ত ঘোষণা করেনি। একই সময়ে নির্মাণ হওয়া অন্য দুটি কোয়ার্টার ইতিমধ্যে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (রামেবি) বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এগুলো এখন রামেবির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৪ নম্বর কোয়ার্টারে কর্মচারীরা বিনা ভাড়ায় থাকার কারণে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রামেকের অধ্যাপকদের জন্য মোট চারটি কোয়ার্টার রয়েছে। এর মধ্যে দুটি কোয়ার্টার রামেবির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে বরাদ্দ দেয় মন্ত্রণালয়। আর একটি কোয়ার্টার রয়েছে রামেকের অধ্যক্ষের জন্য। তবে বর্তমান অধ্যক্ষ নওশাদ আলী এই কোয়ার্টারে থাকেন না। বাইরে থেকে কোনো অতিথি এলে শুধু তাঁদেরই এখানে রাখা হয়।

রামেকের ৪ নম্বর কোয়ার্টারটিও অধ্যাপকদের। অথচ এখানে কোনো অধ্যাপকের বাস নেই। থাকেন প্রতিষ্ঠানটির ক্যাশিয়ার মইনউদ্দিন, হিসাবরক্ষক হাফিজুর, টেকনোলজিস্ট মো. মহাসিন, দপ্তরি আবদুর রহিম ও আউট সোর্সিংয়ের অফিস সহায়ক সাইফুল ইসলাম। কর্তৃপক্ষ তাঁদের বসবাসের বিষয়টি জানলেও কারও বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না।

মঙ্গলবার সকালে কোয়ার্টারের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, তিনতলা ভবনে কর্মচারীরা সপরিবার বসবাস করছেন। এই কোয়ার্টারে শুধু অধ্যাপকদেরই থাকার কথা। কিন্তু তাঁরা থাকলে তাঁদের বেতনের ৪৫ শতাংশ বাড়িভাড়া হিসেবে কেটে নেওয়া হবে, তাই থাকেন না। এ সুযোগে থাকেন কর্মচারীরা।

সূত্র আরও জানায়, রামেবিকে বরাদ্দ দেওয়া ২ নম্বর কোয়ার্টারটিতে আগে ছয়জন অধ্যাপক থাকতেন। তাঁদের বেতন থেকেও ভাড়া কেটে নেওয়া হতো না। বিশ্ববিদ্যালয়কে কোয়ার্টারটি বরাদ্দ দেওয়ার পর তাঁরা চলে যান। ছয়জন চিকিৎসকের নামে এই কোয়ার্টারের বিদ্যুতের বিলও বকেয়া পড়ে আছে। ৪৯ হাজার ১৩৩ টাকা সুদ-আসলে বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অক্টোবরেই ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৫ টাকায় দাঁড়ায়। এই বিল পরিশোধের জন্য নেসকো প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রামেক অধ্যক্ষ নওশাদ বলেন, ‘মন্ত্রণালয় কোয়ার্টারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ দিয়েছে। আমরা এটা ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের লোকেরা কাজ করে না। বিল এখনো আসছে আমাদের নামে। বকেয়াও আছে কিছু।’

৪ নম্বর কোয়ার্টারে বিনা ভাড়ায় কর্মচারীদের বসবাসের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘ওখানে অধ্যাপকেরা থাকেন না। তাই গাঁজার আসর বসত। দেখাশোনার জন্য একজন কর্মচারীকে রেখেছিলাম। অন্য কেউ থাকেন কি না, সেটা জানি না। তবে কে কে থাকেন, সেটা জানতে সম্প্রতি একটা তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পরে বলতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নবরাত্রির জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষা, পিরিয়ডের কারণে পালন করতে না পেরে আত্মহত্যা

আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, খই-মুড়ির মতো বোমা ফুটছে জাজিরায়

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আরাকান আর্মির আপত্তি ও শর্ত

অটোতে ফেলে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দিলেন কলেজছাত্র

পরকীয়া নিয়ে ঝগড়া, স্ত্রীর কাঠের আঘাতে স্বামী নিহত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত