নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ২০ ডিসেম্বর থেকে চলছে নির্বাচন কমিশন নিয়ে সংলাপ। ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সিদ্ধান্তে আসতে হবে সরকারকে। সংলাপ নির্বাচন কমিশন নিয়ে হলেও আলোচনা ঘুরেফিরে সেই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েই।
আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে ইসি গঠনে আইন হচ্ছে না—সরকারের কাছ থেকেই দফায় দফায় এমন বক্তব্য এসেছে। বিকল্প হিসেবে অধ্যাদেশ জারি করে ইসি গঠনে নতুন আইন করার ক্ষমতা থাকলেও সে পথেও হাঁটবে না সরকার। ‘কম সময়’ থাকার অজুহাত দেখিয়ে এবারও সার্চ কমিটি করে ইসি গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনেরা।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বুধবার বলেছেন, ইসি গঠনে আইন করবে সরকার। তবে আগামী কমিশন গঠনের আগে সেই আইন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ব্যাপারে একটি অরডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) করে দেন। আমি বলেছি, সেটা সম্ভব না। সংবিধান বলছে আইন করে দিতে। এ রকম একটা আইন সংসদকে পাশ কাটিয়ে করতে রাজি না।’
আইনমন্ত্রীর সুরেই গতকাল দলের অবস্থান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও ফারুক খান। মতিয়া চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যই আমাদের দলের বক্তব্য। ফারুক খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইন না হলেও তার মতো একটি কাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। পরেরবার হয়তো আইনি মাধ্যমেই ইসি গঠন করা হবে।
তবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এগুলো (সংলাপ) কিছুই হবে না। খামাখা সময়ের অপচয়। ওনারা (সরকার) তাঁদের মতো করে যা করার তাই করবেন। কিচ্ছু হবে না। আপনারা (সাংবাদিক) আপনাদের মতো করে লেখেন।’
প্রথম দফায় আমন্ত্রণ পাওয়া নয়টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ছাড়া সবাই রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়েছে। প্রত্যাখ্যানের তালিকায় বাসদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিও (সিপিবি)। দুটি দলই বলছে, ২০১২ ও ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তার কোনো বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
শুরু হওয়ার আগে থেকেই চলমান সংলাপকে ‘লোক দেখানো’ বলে আসছিল বিএনপি। দলটির নীতি নির্ধারকদের মতে এই সংলাপের ফলাফলে অতীতের ধারাবাহিকতারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে। সেখান থেকে ভালো কিছু আশা করা অমূলক। তাই এই সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। ইসি গঠনের সংলাপে বসার চেয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টিই দলটির কাছে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এ নিয়ে আলোচনার জন্য সংলাপে বসতে আপত্তি নেই বিএনপির।
বিএনপির সংলাপে যাওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি রাজধানীর বনানীতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলটির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা এই সংলাপে যাচ্ছে না। গত ২৭ ডিসেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সভায় বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ছাড়া কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়। বিগত দুইটি কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ইসি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছিল তারা। কিন্তু নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না। বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই অনুষ্ঠান করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন তাঁর কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অতীতেও এ রকম সংলাপ হয়েছে। পরে সার্চ কমিটি করেছে, নির্বাচন কমিশন করেছে। পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে যে, যাকে দিয়েই কমিটি করা হোক না কেন, তারা ছিলেন সরকারের আজ্ঞাবহ।
‘চলমান সংলাপ ভালো কিছু দেবে না’ মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সংলাপ মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে কলুষিত করছে। সংবিধানকে অবমাননা করছে। নির্বাচন কমিশন গঠন নয়, সংলাপটা হওয়া উচিত কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকার কনফার্ম করতে। তাহলে তা জাতিকে একটা ভালো কিছু দিতে পারে।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল নির্বাচনকালীন সরকার। ছোট করা হয়েছিল মন্ত্রিসভা। বিএনপিকে এই নির্বাচনকালীন সরকারে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন বয়কট করে ৷
একই রকমভাবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই হয় নির্বাচনকালীন সরকার। তৎকালীন সংসদে তাদের কোনো সাংসদ না থাকায় নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় ওই দলের কেউ ছিলেন না। তারপরেও নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাঁচটি আসনে জেতে বিএনপি।
যদিও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে এবার আর কোনো আলোচনা করছে না আওয়ামী লীগ। গত দুইবারের ধারাবাহিকতায় এবারও নির্বাচনের আগে তিন মাসের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়টিই প্রস্তুতিতে আছে ক্ষমতাসীনদের। এ নিয়ে সরকারের মধ্যে নানা আলোচনা আছে। তবে সরকারের গঠন যাই হোক তা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ৬ অক্টোবর তিনি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। তার আগের দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার চাইলে বিএনপি আলোচনায় বসতে রাজি। তবে সেই আলোচনা হতে হবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক এজেন্ডাতেই। এরই জবাব দেন কাদের।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকারে অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দায়িত্বশীল সব রাজনৈতিক দলের উচিত এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া।
গতকাল পর্যন্ত যে আটটি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্বাচক কমিশন গঠনে আলোচনা করেছে তাতে সব দলই ইসি গঠনে সার্চ কমিটি ও আইন প্রণয়নের বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। একমাত্র খেলাফত মজলিশই নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে।
বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় না দাবি করে সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য প্রস্তাব দেয় দলটি।
যদিও আগের দিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে দলের কার্যকরী সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, তিনি বলেছেন, ‘আপনারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন। ফলে, আমি আমার ক্ষমতার মধ্যে থেকে জনগণের যে দাবি, আপনাদের যে দাবি তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মতে, রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ আনুষ্ঠানিকতা, লোক দেখানো। নিয়োগ তো হবে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, সংবিধানের ৪৮ এর ৩ ধারা অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি ছাড়া সবকিছুই রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অতীতে যা হয়েছে ভবিষ্যতেও তাই হবে কারণ মূলত প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ীই রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ২০ ডিসেম্বর থেকে চলছে নির্বাচন কমিশন নিয়ে সংলাপ। ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সিদ্ধান্তে আসতে হবে সরকারকে। সংলাপ নির্বাচন কমিশন নিয়ে হলেও আলোচনা ঘুরেফিরে সেই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েই।
আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে ইসি গঠনে আইন হচ্ছে না—সরকারের কাছ থেকেই দফায় দফায় এমন বক্তব্য এসেছে। বিকল্প হিসেবে অধ্যাদেশ জারি করে ইসি গঠনে নতুন আইন করার ক্ষমতা থাকলেও সে পথেও হাঁটবে না সরকার। ‘কম সময়’ থাকার অজুহাত দেখিয়ে এবারও সার্চ কমিটি করে ইসি গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনেরা।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বুধবার বলেছেন, ইসি গঠনে আইন করবে সরকার। তবে আগামী কমিশন গঠনের আগে সেই আইন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ব্যাপারে একটি অরডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) করে দেন। আমি বলেছি, সেটা সম্ভব না। সংবিধান বলছে আইন করে দিতে। এ রকম একটা আইন সংসদকে পাশ কাটিয়ে করতে রাজি না।’
আইনমন্ত্রীর সুরেই গতকাল দলের অবস্থান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও ফারুক খান। মতিয়া চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যই আমাদের দলের বক্তব্য। ফারুক খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইন না হলেও তার মতো একটি কাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। পরেরবার হয়তো আইনি মাধ্যমেই ইসি গঠন করা হবে।
তবে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এগুলো (সংলাপ) কিছুই হবে না। খামাখা সময়ের অপচয়। ওনারা (সরকার) তাঁদের মতো করে যা করার তাই করবেন। কিচ্ছু হবে না। আপনারা (সাংবাদিক) আপনাদের মতো করে লেখেন।’
প্রথম দফায় আমন্ত্রণ পাওয়া নয়টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ছাড়া সবাই রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়েছে। প্রত্যাখ্যানের তালিকায় বাসদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিও (সিপিবি)। দুটি দলই বলছে, ২০১২ ও ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তার কোনো বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
শুরু হওয়ার আগে থেকেই চলমান সংলাপকে ‘লোক দেখানো’ বলে আসছিল বিএনপি। দলটির নীতি নির্ধারকদের মতে এই সংলাপের ফলাফলে অতীতের ধারাবাহিকতারই পুনরাবৃত্তি ঘটবে। সেখান থেকে ভালো কিছু আশা করা অমূলক। তাই এই সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। ইসি গঠনের সংলাপে বসার চেয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টিই দলটির কাছে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এ নিয়ে আলোচনার জন্য সংলাপে বসতে আপত্তি নেই বিএনপির।
বিএনপির সংলাপে যাওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি রাজধানীর বনানীতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দলটির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা এই সংলাপে যাচ্ছে না। গত ২৭ ডিসেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সভায় বলা হয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ছাড়া কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়। বিগত দুইটি কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ইসি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছিল তারা। কিন্তু নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সব উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দলীয় সরকার বহাল রেখে নির্বাচন কমিশন কখনই স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে না। বিএনপি বিশ্বাস করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো নির্বাচন কমিশনই অনুষ্ঠান করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি নিজেই বলেছেন তাঁর কোনো ক্ষমতা নেই পরিবর্তন করার। সেই কারণে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ কোনো ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারবে না। বিএনপি অর্থহীন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, অতীতেও এ রকম সংলাপ হয়েছে। পরে সার্চ কমিটি করেছে, নির্বাচন কমিশন করেছে। পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে যে, যাকে দিয়েই কমিটি করা হোক না কেন, তারা ছিলেন সরকারের আজ্ঞাবহ।
‘চলমান সংলাপ ভালো কিছু দেবে না’ মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সংলাপ মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে কলুষিত করছে। সংবিধানকে অবমাননা করছে। নির্বাচন কমিশন গঠন নয়, সংলাপটা হওয়া উচিত কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকার কনফার্ম করতে। তাহলে তা জাতিকে একটা ভালো কিছু দিতে পারে।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল নির্বাচনকালীন সরকার। ছোট করা হয়েছিল মন্ত্রিসভা। বিএনপিকে এই নির্বাচনকালীন সরকারে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন বয়কট করে ৷
একই রকমভাবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই হয় নির্বাচনকালীন সরকার। তৎকালীন সংসদে তাদের কোনো সাংসদ না থাকায় নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় ওই দলের কেউ ছিলেন না। তারপরেও নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাঁচটি আসনে জেতে বিএনপি।
যদিও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে এবার আর কোনো আলোচনা করছে না আওয়ামী লীগ। গত দুইবারের ধারাবাহিকতায় এবারও নির্বাচনের আগে তিন মাসের জন্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়টিই প্রস্তুতিতে আছে ক্ষমতাসীনদের। এ নিয়ে সরকারের মধ্যে নানা আলোচনা আছে। তবে সরকারের গঠন যাই হোক তা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ৬ অক্টোবর তিনি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। তার আগের দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার চাইলে বিএনপি আলোচনায় বসতে রাজি। তবে সেই আলোচনা হতে হবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক এজেন্ডাতেই। এরই জবাব দেন কাদের।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকারে অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দায়িত্বশীল সব রাজনৈতিক দলের উচিত এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া।
গতকাল পর্যন্ত যে আটটি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্বাচক কমিশন গঠনে আলোচনা করেছে তাতে সব দলই ইসি গঠনে সার্চ কমিটি ও আইন প্রণয়নের বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। একমাত্র খেলাফত মজলিশই নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে।
বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় না দাবি করে সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য প্রস্তাব দেয় দলটি।
যদিও আগের দিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে দলের কার্যকরী সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, তিনি বলেছেন, ‘আপনারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন। ফলে, আমি আমার ক্ষমতার মধ্যে থেকে জনগণের যে দাবি, আপনাদের যে দাবি তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মতে, রাষ্ট্রপতির এই সংলাপ আনুষ্ঠানিকতা, লোক দেখানো। নিয়োগ তো হবে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, সংবিধানের ৪৮ এর ৩ ধারা অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি ছাড়া সবকিছুই রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অতীতে যা হয়েছে ভবিষ্যতেও তাই হবে কারণ মূলত প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ীই রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত নেবেন।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে