Ajker Patrika

সিডরে ভাঙা বেড়িবাঁধ এখনো নির্মাণ হয়নি

কাঠালিয়া (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৪
সিডরে ভাঙা বেড়িবাঁধ এখনো নির্মাণ হয়নি

আজ ভয়াল ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এই দিনে উপকূলসহ কাঠালিয়া উপজেলা সিডরে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বিপদ সংকেত বুঝতে না পাড়ায় খেসারত দিতে হয়েছে কাঠালিয়ার দুই লাখ মানুষকে। কাঠালিয়া উপজেলায় প্রাণ হারান ২৫ জন। জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি। আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় মাঠের ফসল ও গাছপালা। পুরো কাঠালিয়া মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এরপর ১৪ বছর কেটে গেলেও সিডরে ভাঙা বেড়িবাঁধ পুনর্নিমাণ হয়নি।

জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ছিল শুক্রবার। সকাল থেকে সারা দিন গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। সন্ধ্যার পর রাত ৯টার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি বেড়ে যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয় মহাবিপদ সংকেত। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় সিডরে রূপ নেয়। এর প্রভাবে কাঠালিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যায় ১৫-১৭ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস। জোয়ারে বসতবাড়ির আসবাবপত্র ভেসে যায়। মানুষ কী করবে ভেবে পাচ্ছিল না। সবাই দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করে। সবাই বেঁচে থাকার লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃতি শান্ত হয়ে যায়। আস্তে আস্তে পানি নেমে যায়। চতুর্দিকে ভেসে আসে মানুষের আর্তনাদ, সন্তান হারা মায়ের কান্না, মা হারা সন্তানের চিৎকার।

সেই ১৫ নভেম্বরের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি আজও কাঠালিয়ার মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বিষখালী নদীর ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। সিডরের ১৪ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত তা আর নির্মাণ করা হয়নি। এ ছাড়া গৃহহীন পরিবারগুলোর অনেকেই আজও মাথা গোঁজার ঠাঁই করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে চিংড়াখালী গ্রামের দরিদ্র কৃষক মজিবর খান, জয়খালী গ্রামের খাইরুল, আমুরিবুনিয়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রি ছিদ্দিকসহ অনেকে জানান, প্রলয়ংকরী সিডরে তাঁদের বসতঘর, গাছপালা ভেঙে গেছে। অথচ তাঁরা আজও কোনো সাহায্য পাননি।

কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ‘সিডরের পর ১৪ বছর অতিবাহিত হলো। এরই মধ্যে কাঠালিয়ায় ঘূর্ণিঝড় আইলা, বুলবুল ও ইয়াস হয়ে গেল। সিডরে বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীর তীরবর্তী লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধটিকে টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে পাঠানো আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত