Ajker Patrika

শিক্ষা কর্মকর্তা ও ঘুষ

সম্পাদকীয়
শিক্ষা কর্মকর্তা ও ঘুষ

যাঁকে নিয়ে কথা বলা হবে, তিনি হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার একজন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি ওই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন বললে কম বলা হবে। তাঁর অনিয়ম-দুর্নীতির অন্যতম হলো অবৈধভাবে এমপিওভুক্তি। এর পাশাপাশি যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের সময় মাউশির প্রতিনিধি হিসেবে পদভেদে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নেন তিনি। নতুন এমপিওভুক্তির জন্য জনপ্রতি ঘুষ দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। এমনকি ম্যানেজিং কমিটি গঠনেও তাঁকে দিতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সরকারের দেওয়া বিনা মূল্যের বই পেতেও ঘুষ দিতে হয় তাঁকে। এ রকম একজন সরকারি শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ-বাণিজ্য নিয়ে মঙ্গলবার আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

জানা যায়, সরকারি বিধি অনুযায়ী একটানা এক জায়গায় তিন বছরের বেশি থাকার নিয়ম না থাকলেও তিনি আছেন সাত বছর ধরে। ঘুষ-দুর্নীতির নিরাপদ ক্ষেত্র তৈরি করায় তিনি এই উপজেলা ছাড়ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাননি।

ঘুষ নেওয়া আইনবিরোধী কাজ হলেও এটি রাষ্ট্রের অনেক সেক্টরে যে বহাল তবিয়তে চলছে, তারই প্রমাণ হলো এ ঘটনাটি। কোনো একটি উপজেলার শিক্ষক সমাজ যদি এ ধরনের অসাধু কর্মকর্তার কাছে জিম্মি হয়ে থাকেন, তাহলে শিক্ষার কী হবে? যোগ্যহীন কোনো ব্যক্তি যখন শুধু অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক হন, তখন শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছ থেকে কীভাবে ভালো শিক্ষা পাবে? একজন শিক্ষা কর্মকর্তা তো দেখবেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ বজায় আছে কি না, প্রয়োজনে শিক্ষার মান উন্নয়নে থাকবে তাঁর তদারকি। কিন্তু তিনি সে কাজটি সঠিকভাবে না করে ঘুষের রমরমা ব্যবসা চালু করেছেন।

ঘুষ দিতে বাধ্য হওয়া কিংবা ঘুষ ছাড়া সেবা না পাওয়ার তথ্য থেকে প্রমাণিত হয় যে ঘুষ আদায় এখন প্রাতিষ্ঠানিকতায় রূপ নিয়েছে। কিন্তু এই ঘুষ-দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাবে কীভাবে? বর্তমান সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার সময় নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা দেখানোর কথা বলেছিল। কিন্তু ১৫ বছরের শাসনে খুব কম ক্ষেত্রেই এর প্রতিফলন দেখা গেছে; বরং অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতির মাত্রা অনেক বেড়েছে। কেবল মুখের কথায় তো দুর্নীতি বন্ধ হবে না। এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নিতে হবে।

শিক্ষাব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করা হয়নি। এটা করা গেলে দুর্নীতির লাগাম অনেকটা টেনে ধরা যেত। ঘুষ যদি বেআইনি হয়ে থাকে, তবে ওই কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই। দুর্নীতির দুষ্টচক্র থেকে শিক্ষাব্যবস্থাকে মুক্ত করার জন্য তা করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত