বাবুল-মিতুর সন্তানদের সাক্ষ্যদানে বাধা কোথায়

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২২, ০৬: ৪২
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ১১: ৫০

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি আটকে আছে বাবুল-মিতু দম্পতির সন্তানদের বেলায় এসে। এই দম্পতির সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদ করাটা তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের কাছে বারবার মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু আদালতে আবেদন করেও শিশু সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছে না পিবিআই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের (পুলিশ তদন্ত ব্যুরো) পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, মিতু হত্যায় প্রত্যক্ষদর্শী একমাত্র সাক্ষী ছিল তাঁদের এক শিশু সন্তান। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল সাত বছর। মাকে হত্যার ব্যাপারে বর্ণনা দেওয়ার মতো তার যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। তা ছাড়া মিতুর আরেক সন্তানের বয়স তখন ছিল চার বছর। বর্তমানে তার বয়স ১০। তারও বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করার মতো যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা রয়েছে।

গত ৩১ মার্চ আদালতের নির্দেশে শিশু আইনে সব নিয়ম মেনে চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে বাবুল-মিতু দম্পতির সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির করার কথা ছিল। এ জন্য আসামি বাবুল আক্তারের ভাই অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান লাবুর কাছেও হাজিরার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত তারিখে সবাই উপস্থিত থাকলেও শিশু সাক্ষীদের হাজির করা হয়নি। পরদিন শোনা যায়, শিশুদের হাজিরার আদেশ বাতিল চেয়ে একদিন আগে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। যে আবেদনের শুনানি এখনো হয়নি।

ওমর ফারুক আরও বলেন, গত বছরের ১৯ মে ঢাকার একটি আদালতে শিশু সাক্ষীদের সন্ধান পেতে একটি পিটিশন দাখিল করেন তাঁদের নানা ও নিহত মিতুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। পরে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ ও ঝিনাইদহেরর শৈলকুপা থানা-পুলিশ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাদের সন্ধান পায়নি।

এই তদন্তকারী কর্মকর্তা বলছেন, শিশু সাক্ষীদের বারবার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন না করার বিষয়টি স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছে এই সন্তানদের পেছনে অনেক রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। যা প্রকাশ পেলে বাবুল আক্তার ফেঁসে যাবেন।

এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি দেওয়া এক আদেশে ১৫ দিনের মধ্যে মিতু-বাবুল দম্পতির দুই সন্তানকে তদন্তকারী কর্মকর্তার (আইও) কাছে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান রিভিশন আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মিতু-বাবুলের দুই সন্তানকে শিশু আইন মেনে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

মামলাটির তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বর্তমানে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, গত বছর করোনাকালীন পরিস্থিতি থাকায় তখন শিশু সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাবুল আক্তারের ভাই অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান লাবু বলেন, ‘শিশু সন্তানদের কেন হাজির করছি না তা তদন্ত সংস্থা বলতে পারবে।

পরে তিনি একজনের নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।’

একটি অ্যাপস ব্যবহার করে ওই নম্বরের মালিক সাবু নামের এক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। তিনি বাবুল আক্তারের আরেক ভাই বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাবু নিজেকে পরিবারের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

২০১৬ সালের ৫ জুন বড় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে জিইসি মোড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মিতু।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত