একের পর এক চুরিতে উদ্বেগ, নির্ঘুম রাত

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২২, ০৭: ০৭
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২২, ১২: ৩৫

ঈশ্বরগঞ্জে একের পর এক চুরির ঘটনায় উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। গত কয়েক মাসে বাসা-বাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসা, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি ইউনিয়নে হয়েছে গরু চুরি। শুধু তা-ই নয়, পৌর বাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি হয়েছে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা। তবে এসব উদ্ধারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি পুলিশ। ফলে মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে, নির্ঘুম রাত বাটছে অনেকের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট পৌর এলাকার জয়বাংলা মোড়ে ঘরের তালা ভেঙে নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এ ঘটনার পর সেখানে গিয়ে ওই বাসার সামনে থেকেই আরেকজনের মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। এর একদিন পর উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে এক সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি হয়।

গত ২১ আগস্ট রাজিবপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. ফরিদ আহমেদ ও তাঁর ভাতিজার প্রায় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের তিনটি গরু চুরি হয়। এর কয়েক দিন আগে আঠারবাড়ি ইউনিয়নের বিঞ্চুপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মানিক মিয়ার দুটি, গেন্দু মিয়ার একটি ও আবু তাহেরের গরু চোরে নিয়ে যায়।

এরপর গত ১ নভেম্বর মাইজবাগ ইউনিয়নের চরশঙ্কর গ্রাম থেকে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ চুরি হয়। ২ ডিসেম্বর উচাখিলা বাজারের দুটি দোকানের তালা ভেঙে পণ্য চুরি করেন চোরেরা। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টার থেকে দিনদুপুরে এক কর্মীর নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার চুরি হয়।

এদিকে গত ২১ মার্চ রাতে ঈশ্বরগঞ্জের আটটি দোকানে চুরি হয়। এ সময় নগদ টাকাসহ কয়েক লাখ টাকার পণ্য নিয়ে যায় চোরেরা। এ ছাড়াও ওই রাতেই পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশন থেকে তার চুরি হয়েছে। এর একদিন পর গত ২২ মার্চ মাইজবাগ ইউনিয়নের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজার থেকে ইজিবাইকের অন্তত ১০০ ব্যাটারি চুরি হয়।

এর বাইরে ইজিবাইকসহ ছোটখাটো আরও কয়েকটি চুরির খবর পাওয়া গেছে। তবে এর অধিকাংশই উদ্ধার বা চোরদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

আঠারবাড়ি বিঞ্চুপুর এলাকার মো. মোজাম্মেল হক হিরণ বলেন, ‘চোরের আতঙ্কে সারা রাত সজাগ থাকতে হয়। কয়েক দিন আগেও আমার চাচাতো ভাইদের তিনটি গরু চুরি হয়েছে। আমাদের গোয়ালঘর থেকেও একটি গরু বের করে ফেলে চোর। পরে আমরা টের পাওয়ায় গরু ফেলে চোরেরা পালিয়ে যায়।’

কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘চারদিকে যেভাবে চোরের উপদ্রব বেড়েছে। থানা ও গ্রাম পুলিশসহ পাহারাদারদের আরও তৎপর হওয়া উচিত।’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে অহরহ চুরির ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তাঁদের।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘চুরির ঘটনায় থানায় যারা অভিযোগ দিয়েছেন, তাঁদের মামলা নিয়েছি। বিদ্যুৎ অফিসে চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারসহ চোর শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চুরি বেড়ে যাওয়ায় আমি নিজেও উদ্বিগ্ন। থানার ওসিসহ প্রতিটি ইউপির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে চুরি প্রতিরোধে যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, অচিরেই তা করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত