Ajker Patrika

তলিয়ে গেছে ৩০০ একরের ধান

মির্জাপুর প্রতিনিধি
তলিয়ে গেছে ৩০০ একরের ধান

মির্জাপুরে প্রায় ৩০০ একর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। অসময়ে বংশাই নদের পানি বৃদ্ধি এবং দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে এসব ফসল তলিয়ে গেছে। এতে শত শত কৃষকের স্বপ্ন 
পানিতে ভাসছে। ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে অনেকে ডুবে যাওয়া কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল, কুড়াতলি, ভলুয়া, লতিফপুর ইউনিয়নের চানপুর, লতিফপুর ও তরফপুর ইউনিয়নের ছিটমামুদপুর গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকার ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুব দিয়ে কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটছেন কয়েকজন কৃষক।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে থেকে ভলূয়া গ্রামের দক্ষিণ পাশ দিয়ে প্রবাহিত বংশাই নদের পানি হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রতিদিনই ওই এলাকার খাল দিয়ে ফসলের মাঠে পানি ঢুকতে শুরু করে। এর মধ্যে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে পানি জমে সেসব জমিতে। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ওই অঞ্চলের শালিকমারা বিলসহ সব ডোবা, নালা পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে ধানের জমি পানিতে তলিয়ে যায়। কেউ কেউ ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পানিতে ডুবে ডুবে কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। 

এদিকে ধানকাটা শ্রমিকের সংকটে ধান কাটতে পারছেন না অনেকে। শ্রমিক না পেয়ে কেউ কেউ পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যদের নিয়ে পানিতে নেমে কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটার চেষ্টা করছেন।

বেলতৈল গ্রামের পণ্ডিত আলী মিয়া জানান, তাঁর ৬০ শতাংশ জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে কাঁচা ধান কাটার চিন্তা করছেন। তবে চড়া দামেও ধানকাটা শ্রমিক না পেয়ে স্ত্রী ও নাতিকে নিয়ে পানিতে নেমে কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটছেন।
একই গ্রামের আবুল হাসেমের ৮০ শতাংশ এবং আবুল হোসেনের ৭০ শতাংশ জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। চড়া দাম দিয়ে তাঁরা পানিতে তলিয়ে 
যাওয়া কাঁচা ধান কেটে নিচ্ছেন। তাঁরা বলেন, যেখানে ১০ মণ ধান হতো, সেখানে এখন ৫ মণও হবে না। ৯০০ টাকা দরের একজন 
শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে উল্টো তাঁদের ক্ষতি হবে।
তরফপুর গ্রামের শহীদুর রহমান বলেন, তাঁর নিচু জমির ধানখেতে পানি প্রবেশ করেছে। পুরো ধান পানিতে তলিয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় তিনি আধা পাকা ধান কেটে ফেলেছেন। 

আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, বংশাই নদের পানি বেড়ে ভলুয়া খাল দিয়ে ফসলের মাঠে প্রবেশ করেছ। এতে বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সহায়তার চেষ্টা করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিতে ধানের জমিতে পানি প্রবেশের খবর পেয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উজ্জল হোসেনকে পাঠানো 
হয়েছিল। ওই এলাকার চার থেকে পাঁচ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টদের এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত