শামিম রেজা, রাজবাড়ী
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে জীবনসংগ্রামে সফল নারী হিসেবে পরপর কয়েকবার রাজবাড়ী জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতাসহ ঢাকা বিভাগে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন মর্জিনা বেগম। যাঁর জীবন শুরু হয়েছিল একজন যৌনকর্মী হিসেবে।
জীবনের প্রতিটি পদে পদে নির্যাতিত হয়ে ঘুরে দাঁড়ানো এ নারী এখন সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন। গড়ে তুলেছেন একটি শিশু বিদ্যানিকেতন, যেখানে পড়াশোনা করছে সমাজের অবহেলিত দেড় শতাধিক শিশু। ওই প্রতিষ্ঠানে আরও কর্মসংস্থান হয়েছে নির্যাতিত বেশ কয়েকজন নারীর।
সরেজমিন গত রোববার গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া রেলস্টেশনের পাশে দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লির পাশেই গড়ে উঠেছে মুক্তি মহিলা সমিতি। ভেতরে যেতেই দেখা যায় শিশুদের ক্লাস চলছে। একটি কক্ষে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে ষাট বছর বয়সী মর্জিনা বেগমের। তিনি শিশুদের সঙ্গে বসে কথা বলছেন। শিশুদের হাতে বিস্কুটসহ নানা খাবার দিচ্ছেন। শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার বিভিন্ন খেলনাও রয়েছে প্রতিটা কক্ষে।
জানা যায়, মর্জিনা বেগমের জন্ম গোয়ালন্দের আড়তপট্টির এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ঘরে। ছোট থাকতেই বাবা মারা যাওয়ায় তিন বোন নিয়ে নানাবাড়িতে বেড়ে ওঠেন। ১৩ বছর বয়সে ফরিদপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। মাতাল স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে এলাকায় ফিরে পিঠা বিক্রি করে জীবন চালান।
১৯৮০ সালে দালালের খপ্পরে পড়েন, তাঁকে সিরাজগঞ্জ যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে আসেন দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে। ১৯৯৬ সালে স্থানীয় বেসরকারি সংস্থায় যোগ দেন। পরে ১৯৯৮ সালে পল্লির সমস্যা সমাধানে ১১ জন মিলে গঠন করেন মুক্তি মহিলা সমিতি। যৌনকর্মীদের জুতা ব্যবহার, মারা গেলে নদীতে না ভাসিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করা, শিশুদের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা, স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার প্রয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে করেন আন্দোলন। এ জন্য জেল-হাজতে যেতে হয়, সইতে হয় নানা নির্যাতন।
বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে বর্তমানে ৪২ জন কর্মী নিয়ে মুক্তি মহিলা সমিতির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সেখানে যৌনপল্লির ১৬০ জন শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অনেক যৌনকর্মীর কর্মসংস্থানও। পেয়েছেন নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা।
মর্জিনা বেগম বলেন, ‘কতবার ডিসি অফিস, ইউএনও অফিসের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছি। এই পল্লির মানুষের ভোটের অধিকার, নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করতে গিয়ে জেল হাজতে গিয়েছি। কিন্তু আমি দমে যাইনি। সব সময়ই মনে করেছি, কিছু ত্যাগ না করলে কিছু পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সফল হয়েছি। অনেক সংগ্রাম ও নির্যাতনের শিকার হয়ে এখনো টিকে আছি। অসহায় নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করতে অনেক ভালো লাগে। যত দিন বেঁচে থাকব এসব নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুক্তি মহিলা সমিতিতে কর্মরত নারীরা বলেন, তাঁরাও একসময় যৌনপল্লির বাসিন্দা ছিলেন। মর্জিনা বেগমের সাহায্যে অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর পথে এসেছেন। তাঁদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এখন তাঁরা পরিবার নিয়ে ভালো আছেন।
জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজমীর হোসেন বলেন, গোয়ালন্দের মর্জিনা বেগম রাজবাড়ী জেলাসহ সারা দেশের নারীদের জন্য অনুকরণীয়। তিনি নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন। মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সব সময় তাঁর পাশে আছে। তিনি রাজবাড়ী জেলার গর্ব।
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে জীবনসংগ্রামে সফল নারী হিসেবে পরপর কয়েকবার রাজবাড়ী জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতাসহ ঢাকা বিভাগে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন মর্জিনা বেগম। যাঁর জীবন শুরু হয়েছিল একজন যৌনকর্মী হিসেবে।
জীবনের প্রতিটি পদে পদে নির্যাতিত হয়ে ঘুরে দাঁড়ানো এ নারী এখন সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন। গড়ে তুলেছেন একটি শিশু বিদ্যানিকেতন, যেখানে পড়াশোনা করছে সমাজের অবহেলিত দেড় শতাধিক শিশু। ওই প্রতিষ্ঠানে আরও কর্মসংস্থান হয়েছে নির্যাতিত বেশ কয়েকজন নারীর।
সরেজমিন গত রোববার গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া রেলস্টেশনের পাশে দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লির পাশেই গড়ে উঠেছে মুক্তি মহিলা সমিতি। ভেতরে যেতেই দেখা যায় শিশুদের ক্লাস চলছে। একটি কক্ষে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে ষাট বছর বয়সী মর্জিনা বেগমের। তিনি শিশুদের সঙ্গে বসে কথা বলছেন। শিশুদের হাতে বিস্কুটসহ নানা খাবার দিচ্ছেন। শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার বিভিন্ন খেলনাও রয়েছে প্রতিটা কক্ষে।
জানা যায়, মর্জিনা বেগমের জন্ম গোয়ালন্দের আড়তপট্টির এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ঘরে। ছোট থাকতেই বাবা মারা যাওয়ায় তিন বোন নিয়ে নানাবাড়িতে বেড়ে ওঠেন। ১৩ বছর বয়সে ফরিদপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। মাতাল স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে এলাকায় ফিরে পিঠা বিক্রি করে জীবন চালান।
১৯৮০ সালে দালালের খপ্পরে পড়েন, তাঁকে সিরাজগঞ্জ যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে আসেন দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে। ১৯৯৬ সালে স্থানীয় বেসরকারি সংস্থায় যোগ দেন। পরে ১৯৯৮ সালে পল্লির সমস্যা সমাধানে ১১ জন মিলে গঠন করেন মুক্তি মহিলা সমিতি। যৌনকর্মীদের জুতা ব্যবহার, মারা গেলে নদীতে না ভাসিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করা, শিশুদের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা, স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার প্রয়োগসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে করেন আন্দোলন। এ জন্য জেল-হাজতে যেতে হয়, সইতে হয় নানা নির্যাতন।
বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে বর্তমানে ৪২ জন কর্মী নিয়ে মুক্তি মহিলা সমিতির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সেখানে যৌনপল্লির ১৬০ জন শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অনেক যৌনকর্মীর কর্মসংস্থানও। পেয়েছেন নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা।
মর্জিনা বেগম বলেন, ‘কতবার ডিসি অফিস, ইউএনও অফিসের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছি। এই পল্লির মানুষের ভোটের অধিকার, নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করতে গিয়ে জেল হাজতে গিয়েছি। কিন্তু আমি দমে যাইনি। সব সময়ই মনে করেছি, কিছু ত্যাগ না করলে কিছু পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সফল হয়েছি। অনেক সংগ্রাম ও নির্যাতনের শিকার হয়ে এখনো টিকে আছি। অসহায় নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করতে অনেক ভালো লাগে। যত দিন বেঁচে থাকব এসব নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুক্তি মহিলা সমিতিতে কর্মরত নারীরা বলেন, তাঁরাও একসময় যৌনপল্লির বাসিন্দা ছিলেন। মর্জিনা বেগমের সাহায্যে অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর পথে এসেছেন। তাঁদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এখন তাঁরা পরিবার নিয়ে ভালো আছেন।
জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজমীর হোসেন বলেন, গোয়ালন্দের মর্জিনা বেগম রাজবাড়ী জেলাসহ সারা দেশের নারীদের জন্য অনুকরণীয়। তিনি নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেয়েছেন। মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সব সময় তাঁর পাশে আছে। তিনি রাজবাড়ী জেলার গর্ব।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে