সৌগত বসু, সাইফুল মাসুম ও মান্ডি দি কস্তা, ঢাকা
‘চিরুনি অভিযান’ শুনলেই মনে হয়, যেন কোনো দাগি সন্ত্রাসীকে ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। জনমানসে শব্দগুলো এভাবেই পরিচিত। তবে সম্প্রতি মশকনিধনে ‘চিরুনি অভিযান’ কথাটি বেশিই ব্যবহার করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু এসব অভিযানের ফল যে অনেকটা শূন্য, তা বোঝা যায় ডেঙ্গুর মৌসুম এলে।
এ বছর বৃষ্টির মৌসুম শুরু হয়েছে কেবল, অথচ এখনই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬১ জন। সামনের দিনগুলোয় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চিরুনি অভিযান চলে এলেও রাজধানীতে মশার উৎপাত কমছে না। এর কারণ হিসেবে সিটি করপোরেশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে দায়ী করছেন। অন্যদিকে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে। তাঁরা বলছেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশন যে ওষুধ প্রয়োগ করছে, তা প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে মশা। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের কর্মীরা লার্ভা ধ্বংসের চেয়ে ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানোর কাজটাই বেশি করেন। এতে এডিস মশার প্রজনন যেমন থেমে নেই, তেমনি ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানোর সময় প্রকট শব্দে বড় মশা আগেই উড়ে যায়।
কী ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে
২০১৯ সালের জুলাই-আগস্টে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ হয়। এরপর ২০২০ সালে মশা নিয়ন্ত্রণে ঠিক পথেই ছিল দুই সিটি করপোরেশন। তখন আগের ওষুধ বদল করে ম্যালাথিয়ন নামে নতুন ওষুধ আনা হয়। একই সঙ্গে ব্যবহার করা হয় ডেল্টামেথ্রিন। অন্যদিকে লার্ভা ধ্বংসের জন্য দক্ষিণ সিটি টেমিফস ব্যবহার করে আর উত্তর সিটি ব্যবহার করে নোভালিউরন, টেমিফস ও বিটিআই নামক ওষুধ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্রে জানা যায়, এই প্রতিষ্ঠান মশা মারার জন্য ম্যালাথিয়ন ও ডেল্টামেথ্রিন—দুই ওষুধই ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) শুধু ম্যালাথিয়ন ব্যবহার করে। এগুলো উড়ন্ত মশা মারার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার বিরুদ্ধে ডেল্টামেথ্রিন ওষুধ আর কাজ করছে না। এতে কেবল সময় ও অর্থের অপচয়ই হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ডা. কবিরুল বাশার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন যে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা খুব বেশি কাজে দিচ্ছে না, বিশেষ করে ডেল্টামেথ্রিন। কারণ, মশার ইনসেক্টিসাইড রেজিস্ট্যান্স বা কীটনাশক-সহনশীলতা তৈরি হয়েছে। তবে ম্যালাথিয়ন ওষুধটি কার্যকর। কিন্তু প্রকৃতিতে এর কিছু নেতিবাচক প্রভাব আছে।’
প্রশ্নবিদ্ধ মশা নিধন পদ্ধতি
এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এডিস মশার প্রজননকাল। এ কারণে এপ্রিল মাস থেকে লার্ভা নষ্ট করার মধ্য দিয়ে এডিস মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করতে হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কর্মীরা লার্ভা ধ্বংসের চেয়ে ফগার মেশিনে উড়ন্ত মশা মারতেই ব্যস্ত সময় পার করছে বেশি।
মশা নিয়ন্ত্রণে যে ভুল পদ্ধতি প্রয়োগ হচ্ছে, তা নিজেই স্বীকার করেছিলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। তবে সঠিক কোনটি, তা জানা যায়নি আজও।একইভাবে ডিএসসিসি মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক নির্বাচন কমিটি গঠন করেছিল। তবে সেখানে বিশেষজ্ঞের থেকে ভিন্নমত পাওয়ায় তাঁকে পরে আর ডাকা হয়নি।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে কিছুটা সময় লাগবে।’
কেন ব্যর্থ দুই সিটি
সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে বলা হয়, উত্তরে ৪০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭টিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ। আর দক্ষিণে ৫৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টিতে প্রকোপ বেশি আছে। ডেঙ্গু মশা নিধনে দুই সিটি ব্যর্থ কেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে আজকের পত্রিকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত শীতে কিউলেক্স মশার প্রকোপ কমে আসার পর থেকে মশা নিধন কার্যক্রমের গতি মন্থর হয়েছে দুই সিটিতেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী যেভাবে প্রতিবছর বিজ্ঞানসম্মতভাবে মশার লার্ভা ধ্বংস করার কথা, সেটি তারা করেনি। শুধু প্রকোপ বাড়লে কাজ দেখানো হয়। সাধারণত এপ্রিল মাসের শেষে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। সেই সময় ডেঙ্গুর মশার লার্ভা ধ্বংসের কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও সিটি করপোরেশন ব্যস্ত ছিল সিটির অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে। নিজেদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করেনি দুই সিটির মশকনিধন বিভাগ।
কেন নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না প্রশ্নে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন আবহাওয়া ও মৌসুম মশার প্রতিকূলে। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা কাজ করলেও এই সময়ে জলবায়ুগত পরিবর্তনে তা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া মশার হট স্পট শতভাগ নির্ধারণ করা যায়নি।
থেমে নেই খরচ
বিদ্যমান মশকনিধন কার্যক্রম খুব একটা কার্যকর না হলেও এই খাতে অর্থ ব্যয় কিন্তু কম হচ্ছে না। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট পর্যালোচনা করে জানা যায়, দুই সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়ার পর গত ১১ বছরে ডিএসসিসি ওষুধ কেনা এবং প্রয়োগ বাবদ খরচ করেছে প্রায় ১৮০ কোটি টাকা। যন্ত্রপাতি কেনায় খরচ করেছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। আর একই সময়ে ডিএনসিসি ওষুধ কেনা ও প্রয়োগ বাবদ খরচ করেছে প্রায় ৩২২ কোটি টাকা। আর যন্ত্রপাতি ক্রয়ে খরচ করেছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এ ছাড়া দুই সিটি মিলিয়ে মশকনিধন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে খরচ করেছে প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা। এত টাকা খরচ করার পরেও ডেঙ্গুর ভয়াবহ ঝুঁকিতে আছে নগরবাসী
দায় আছে নগরবাসীরও
তবে মশা নিধনে শুধু সিটি করপোরেশনের দায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে নগরবাসীর সচেতনতারও অভাব আছে বলে মনে করেন তাঁরা। কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, বিভিন্ন সময়ে মশা নিয়ে জরিপে তিনি দেখেছেন, বহুতল ভবনের নিচে গাড়ির গ্যারেজে ডেঙ্গুর জন্ম ও বিস্তার বেশি। তিনি বলেন, এসব ভবনে জরিপে গেলে ওই ভবনে প্রবেশের জন্য অনুমতি লাগে। অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। এরপর বাসার গ্যারেজে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া যায়।
ঢাকার বাইরেও প্রকোপ
এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়েছে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায়। রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, বাগেরহাট, বরিশাল ও কক্সবাজারে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটেছে। জনস্বাস্থ্যবিদ ড. আহমেদ পারভেজ জাবীন বলেন, মূলত ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক এডিস মশা। এ ছাড়া ডেঙ্গু ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে যদি এডিস মশা তাকে কামড়ায়, তাহলে ওই মশার মধ্যেও ডেঙ্গু ভাইরাস চলে যাবে।
তিনি বলেন, ঈদের সময় একটা বড় অংশ ঢাকা থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে গেছে। কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত থাকলে ওই অঞ্চলে এডিস মশা কামড় দিলে ডেঙ্গু ভাইরাস বিস্তার লাভ করেছে। এ ছাড়া বাস ও ট্রেনে মশা ঢাকার বাইরে চলে গেছে। এতে সংক্রমণ বেড়েছে।
‘চিরুনি অভিযান’ শুনলেই মনে হয়, যেন কোনো দাগি সন্ত্রাসীকে ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। জনমানসে শব্দগুলো এভাবেই পরিচিত। তবে সম্প্রতি মশকনিধনে ‘চিরুনি অভিযান’ কথাটি বেশিই ব্যবহার করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু এসব অভিযানের ফল যে অনেকটা শূন্য, তা বোঝা যায় ডেঙ্গুর মৌসুম এলে।
এ বছর বৃষ্টির মৌসুম শুরু হয়েছে কেবল, অথচ এখনই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬১ জন। সামনের দিনগুলোয় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চিরুনি অভিযান চলে এলেও রাজধানীতে মশার উৎপাত কমছে না। এর কারণ হিসেবে সিটি করপোরেশনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে দায়ী করছেন। অন্যদিকে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে। তাঁরা বলছেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশন যে ওষুধ প্রয়োগ করছে, তা প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে মশা। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের কর্মীরা লার্ভা ধ্বংসের চেয়ে ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানোর কাজটাই বেশি করেন। এতে এডিস মশার প্রজনন যেমন থেমে নেই, তেমনি ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানোর সময় প্রকট শব্দে বড় মশা আগেই উড়ে যায়।
কী ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে
২০১৯ সালের জুলাই-আগস্টে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ হয়। এরপর ২০২০ সালে মশা নিয়ন্ত্রণে ঠিক পথেই ছিল দুই সিটি করপোরেশন। তখন আগের ওষুধ বদল করে ম্যালাথিয়ন নামে নতুন ওষুধ আনা হয়। একই সঙ্গে ব্যবহার করা হয় ডেল্টামেথ্রিন। অন্যদিকে লার্ভা ধ্বংসের জন্য দক্ষিণ সিটি টেমিফস ব্যবহার করে আর উত্তর সিটি ব্যবহার করে নোভালিউরন, টেমিফস ও বিটিআই নামক ওষুধ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্রে জানা যায়, এই প্রতিষ্ঠান মশা মারার জন্য ম্যালাথিয়ন ও ডেল্টামেথ্রিন—দুই ওষুধই ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) শুধু ম্যালাথিয়ন ব্যবহার করে। এগুলো উড়ন্ত মশা মারার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার বিরুদ্ধে ডেল্টামেথ্রিন ওষুধ আর কাজ করছে না। এতে কেবল সময় ও অর্থের অপচয়ই হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ডা. কবিরুল বাশার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন যে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা খুব বেশি কাজে দিচ্ছে না, বিশেষ করে ডেল্টামেথ্রিন। কারণ, মশার ইনসেক্টিসাইড রেজিস্ট্যান্স বা কীটনাশক-সহনশীলতা তৈরি হয়েছে। তবে ম্যালাথিয়ন ওষুধটি কার্যকর। কিন্তু প্রকৃতিতে এর কিছু নেতিবাচক প্রভাব আছে।’
প্রশ্নবিদ্ধ মশা নিধন পদ্ধতি
এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এডিস মশার প্রজননকাল। এ কারণে এপ্রিল মাস থেকে লার্ভা নষ্ট করার মধ্য দিয়ে এডিস মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করতে হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কর্মীরা লার্ভা ধ্বংসের চেয়ে ফগার মেশিনে উড়ন্ত মশা মারতেই ব্যস্ত সময় পার করছে বেশি।
মশা নিয়ন্ত্রণে যে ভুল পদ্ধতি প্রয়োগ হচ্ছে, তা নিজেই স্বীকার করেছিলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। তবে সঠিক কোনটি, তা জানা যায়নি আজও।একইভাবে ডিএসসিসি মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক নির্বাচন কমিটি গঠন করেছিল। তবে সেখানে বিশেষজ্ঞের থেকে ভিন্নমত পাওয়ায় তাঁকে পরে আর ডাকা হয়নি।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে কিছুটা সময় লাগবে।’
কেন ব্যর্থ দুই সিটি
সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে বলা হয়, উত্তরে ৪০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭টিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ। আর দক্ষিণে ৫৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টিতে প্রকোপ বেশি আছে। ডেঙ্গু মশা নিধনে দুই সিটি ব্যর্থ কেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে আজকের পত্রিকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত শীতে কিউলেক্স মশার প্রকোপ কমে আসার পর থেকে মশা নিধন কার্যক্রমের গতি মন্থর হয়েছে দুই সিটিতেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী যেভাবে প্রতিবছর বিজ্ঞানসম্মতভাবে মশার লার্ভা ধ্বংস করার কথা, সেটি তারা করেনি। শুধু প্রকোপ বাড়লে কাজ দেখানো হয়। সাধারণত এপ্রিল মাসের শেষে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। সেই সময় ডেঙ্গুর মশার লার্ভা ধ্বংসের কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও সিটি করপোরেশন ব্যস্ত ছিল সিটির অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে। নিজেদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করেনি দুই সিটির মশকনিধন বিভাগ।
কেন নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না প্রশ্নে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন আবহাওয়া ও মৌসুম মশার প্রতিকূলে। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা কাজ করলেও এই সময়ে জলবায়ুগত পরিবর্তনে তা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া মশার হট স্পট শতভাগ নির্ধারণ করা যায়নি।
থেমে নেই খরচ
বিদ্যমান মশকনিধন কার্যক্রম খুব একটা কার্যকর না হলেও এই খাতে অর্থ ব্যয় কিন্তু কম হচ্ছে না। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট পর্যালোচনা করে জানা যায়, দুই সিটি করপোরেশন ভাগ হওয়ার পর গত ১১ বছরে ডিএসসিসি ওষুধ কেনা এবং প্রয়োগ বাবদ খরচ করেছে প্রায় ১৮০ কোটি টাকা। যন্ত্রপাতি কেনায় খরচ করেছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা। আর একই সময়ে ডিএনসিসি ওষুধ কেনা ও প্রয়োগ বাবদ খরচ করেছে প্রায় ৩২২ কোটি টাকা। আর যন্ত্রপাতি ক্রয়ে খরচ করেছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এ ছাড়া দুই সিটি মিলিয়ে মশকনিধন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে খরচ করেছে প্রায় ৫১৫ কোটি টাকা। এত টাকা খরচ করার পরেও ডেঙ্গুর ভয়াবহ ঝুঁকিতে আছে নগরবাসী
দায় আছে নগরবাসীরও
তবে মশা নিধনে শুধু সিটি করপোরেশনের দায় দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে নগরবাসীর সচেতনতারও অভাব আছে বলে মনে করেন তাঁরা। কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, বিভিন্ন সময়ে মশা নিয়ে জরিপে তিনি দেখেছেন, বহুতল ভবনের নিচে গাড়ির গ্যারেজে ডেঙ্গুর জন্ম ও বিস্তার বেশি। তিনি বলেন, এসব ভবনে জরিপে গেলে ওই ভবনে প্রবেশের জন্য অনুমতি লাগে। অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়। এরপর বাসার গ্যারেজে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া যায়।
ঢাকার বাইরেও প্রকোপ
এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়েছে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায়। রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, বাগেরহাট, বরিশাল ও কক্সবাজারে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটেছে। জনস্বাস্থ্যবিদ ড. আহমেদ পারভেজ জাবীন বলেন, মূলত ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক এডিস মশা। এ ছাড়া ডেঙ্গু ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে যদি এডিস মশা তাকে কামড়ায়, তাহলে ওই মশার মধ্যেও ডেঙ্গু ভাইরাস চলে যাবে।
তিনি বলেন, ঈদের সময় একটা বড় অংশ ঢাকা থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে গেছে। কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত থাকলে ওই অঞ্চলে এডিস মশা কামড় দিলে ডেঙ্গু ভাইরাস বিস্তার লাভ করেছে। এ ছাড়া বাস ও ট্রেনে মশা ঢাকার বাইরে চলে গেছে। এতে সংক্রমণ বেড়েছে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে