মুক্তারখলা, এরালিয়া কোনা হাওরেও পানি

ধর্মপাশা ও তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

টাঙ্গুয়ার হাওরে আগেই পানি ঢুকেছে। এরপর তলিয়ে গেছে চাপতি হাওরের ফসল। এবার ডুবছে মুক্তারখলা ও এরালিয়া কোনা হাওরের বোরো ধান।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের পাশেই এরালিয়া কোনা হাওর। গতকাল শুক্রবার সকালে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে হাওরটিতে। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই তলিয়ে যায় ২০০ একর জমির ফসল।

বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে গতকাল সকালেই তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির এরালিয়া কোনা হাওরের বাঁধ রক্ষায় প্রয়োজনীয় বাঁশ, বস্তা ও বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। রক্ষা করা সম্ভব হয়নি বাঁধটি।

টাঙ্গুয়ার হাওর-সংলগ্ন ছোট ছোট আটটি হাওর আছে। গনিয়াকুড়ি, এরালিয়া কোনা, নান্দিয়া, লামারগুল, টানেরগুল, রাঙ্গামাটিয়া, ফলিয়ার বিল ও সন্যাসী হাওর। এসব হাওরের ফসল রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো প্রকল্প নেই। স্থানীয় কৃষকেরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে হাওরগুলো রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে কাজ করেন প্রতিবছর।

কিন্তু এবার বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে এক ফসলী জমিচাষিদের কপালে। এরালিয়া কোনা হাওরের কৃষক আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ‘আমার সারা বছর চলার একমাত্র মাধ্যম এই হাওরের বোরো ধান। সকালে নিমিষেই আমার জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।’

হাওর তীরবর্তী তেরঘর গ্রামের কৃষক গোলাপ নূর বলেন, চলতি বছর এরালিয়া কোনা হাওরে প্রায় ২০০ একর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। হাওরটি তলিয়ে যাওয়ায় শতাধিক কৃষক সারা বছরের জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এদিকে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের মুক্তারখলা হাওরের পাওদোয়া বাঁধ ভেঙে বোরো ফসল তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে সাড়ে ৭টার দিকে এ বাঁধ ভেঙে যায়।

স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসীরা জানান, মুক্তারখলা পাওদোয়া বাঁধসহ প্রায় ১০টি হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো প্রকল্প নেই। এপ্রিল মাসের ২ তারিখ তাহিরপুর উপজেলার নজরখালী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর, দক্ষিণ ইউনিয়নের বাঁধগুলোর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
রংচি গ্ৰামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, তাহিরপুর উপজেলার নজরখালী বাঁধটির প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি থাকলে টাঙ্গুয়ার হাওরের মধ্যনগর উপজেলা অংশের ফসল রক্ষা পাবে। না হয়, এ অঞ্চলের কৃষকের দুঃখের শেষ থাকবে না।

মুক্তারখলা হাওরের কৃষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, মুক্তারখলা হাওরসহ দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের সব বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত করলে আজ কৃষকের এত বড় ক্ষতি হত না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত