অর্চি হক, ঢাকা
দশ বছর বয়স থেকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের জুতার কারখানায় কাজ করছে রাকিব। যে সময়টায় স্কুলে লেখাপড়া আর খেলাধুলায় মেতে থাকার কথা, সেই সময়ে স্যাঁতসেঁতে বদ্ধ কারখানায় জুতার চামড়া কাটা, প্যানেলের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে তাকে। কাজের চাপে কখন শৈশব কেটে গেছে টেরই পায়নি সে। আজকের পত্রিকাকে রাকিব জানায়, বর্তমানে তার বয়স প্রায় ১৭। এর মধ্যে জীবনের সাত বছরই জুতার কারখানায় কাটিয়ে দিয়েছে সে। শুরুর দিকে মজুরি ছিল না। তবে এখন ২৪ জোড়া জুতার কাজ করলে ৫০০ টাকা মেলে।
শ্রমিকেরা জানান, এ ধরনের কারখানায় নবিশ হিসেবে শুধু শিশুদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়। হালকা কাজের নামে নিয়োগ দিয়ে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজও করিয়ে নেওয়া হয়। অনভিজ্ঞ প্রাপ্ত বয়স্ক কেউ এ সব কারখানায় কাজ পান না। রাকিব বর্তমানে যে কারখানায় কাজ করছে সেই এসকেএম সুজের কর্ণধার রাজু আহমেদ নিজেও ছিলেন একজন শিশু শ্রমিক। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি তার। ১২ বছর বয়সে জুতার কারখানায় কাজ নেয় সে। আজকের পত্রিকাকে রাজু আহমেদ বলেন, ১২ ১৩ বছর বয়সই কাজ শেখার সময়। একবার কাজটা শিখে নিলে কিছু করে খাওয়া যায়।
শিশুশ্রমিক থেকে কারখানার মালিক বনে যাওয়া রাজু আহমেদ নিজেই জানালেন, কারখানায় যেসব শিশুরা কাজ করে প্রথম দুই বছর তাদের কোন পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। শুধু দু'তিনবেলা খাবারের বিনিময়ে কাজ করে তারা। রাজু আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তার কারখানায় চার পাঁচজন শিশু শ্রমিক কাজ করে। তবে কারখানার প্রতিটি তলা ঘুরে দেখা গেল, সংখ্যাটা কমপক্ষে দ্বিগুণ। শিশুদের কেউ মেশিন চালাচ্ছে, কেউ আবার হাতেই জুতার অংশবিশেষ তৈরি করছে।
২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা অনুসারে, দেশে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার শিশু কর্মে নিয়োজিত। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ লাখ শিশুশ্রমিক। এদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু। আর ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে।
শিশুশ্রমিকদের ৩৩ শতাংশেরই বসবাস ঢাকা, চট্টগ্রাম ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায়। শিশুশ্রম বন্ধে গৃহীত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২০-২৫ নথিতে ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত মাল্টিপল ইন্ডিকেটরস ক্লাস্টার জরিপ অনুযায়ী,৫-১৭ বছরের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু শ্রমে নিয়োজিত (ছেলে ৯ লাখ ৫০০০০, মেয়ে ৭৫০০০০)। আর বিবিএসের জরিপ বলছে সিটি করপোরেশনের বস্তি ও অনুন্নত এলাকায় প্রতি ৮ জনে ১ জন শিশু শ্রমে নিয়োজিত।
বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) করোনাকালে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জ, কুমিল্লা, বরিশাল, যশোর ও খুলনায় একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে দেখা যায়, ওই এলাকাগুলোতে আগের চেয়ে কম পারিশ্রমিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪০০ শিশু। নতুন করে ৭ হাজার ৮০০ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ১২ জুন পালিত হচ্ছে শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস।
অস্বাস্থ্যকর অনিরাপদ কারখানা
কামরাঙ্গীরচরের বরগ্রামের যে ভবনটিতে এসকেএম সুজের কারখানা, সেটি যেমন অস্বাস্থ্যকর, তেমনি অনিরাপদ। চার তলা ভবনের পানি জমে থাকা পিচ্ছিল সরু সিঁড়িগুলোতে নেই কোন রেলিং (হাতল)। শিশুশ্রমিকেরা বিপজ্জনক সেই সিঁড়ি দিয়েই ভারী মালামাল নিয়ে ওঠানামা করে। এসকেএম সুজের আশপাশের প্রায় প্রতিটি ভবনেই জুতা, ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্যের কারখানা। তবে কোনো ভবনের সামনেই নেই কারখানার সাইনবোর্ড। যে গলির দু পাশে এই কারখানাগুলো গড়ে উঠেছে, সেটি এতটাই সরু যে পাশাপাশি দুজন মানুষ হাঁটাও কষ্টসাধ্য। গলিময় মেশিন চলার ঘটঘট শব্দ ছাড়া ভবনগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই সেগুলো কারখানা। কারখানাগুলোর কোনোটিতেই নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অগ্নিকাণ্ড বা ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়ে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে কোনো গাড়ি প্রবেশেরও পথ নেই।
প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক সনদে শিশু ও শিশুশ্রম
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী যেকোনো ব্যক্তিই শিশু। তবে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ২ (৬৩) ধারা অনুযায়ী, ১৪ বছরের নিচে যে কোন ব্যক্তিকে শিশু ও ২ (৮) ধারা অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে সকল ব্যক্তিকে কিশোর বলে বিবেচনা করা হবে। তবে শিশু আইন, ২০১৩ এর ৪ ধারায় আবার বলা হয়েছে, অন্য আইনে যাই বলা থাকুক, ১৮ বছরের নিচে সকল ব্যক্তিকে শিশু বলা হবে। জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০ অনুসারে, শিশুদের আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে দেওয়া যাবে না। কিশোরদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের কাছ থেকে শিশু–কিশোরদের সক্ষমতা সনদ নিয়ে শর্ত সাপেক্ষে হালকা কাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে।
আইন আছে, আইনের ফাঁকফোকরও আছে। তবে শিশু শ্রম প্রতিরোধ করতে না পারার মূল কারণ আইনের ফাঁকফোকর নয়, বরং দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, ক্ষুধা নিবৃত্তির নিশ্চয়তা ছাড়া শিশুশ্রম প্রতিরোধ সম্ভব নয়। শুধুমাত্র আইন করে এটা বন্ধ করা যাবে না।
নামমাত্র মজুরিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও শিশুরা কেন কাজে
কামরাঙ্গীরচরের নামহীন একটি ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজ করছিল আনুমানিক নয় দশ বছরের শিশু রুস্তম। ওয়েল্ডিংয়ের যে মেশিনটি নিয়ে সে কাজ করছিল, একটু অসতর্ক হলে সেটা যে তার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে, তা বোঝার মতো বয়সও হয়নি শিশুটির। মেশিন চালাতে ভয় লাগে কিনা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল, শুরুতে ভয় লাগত। অহন মজাই লাগে।
ওই এলাকারই একটি ব্যাগ কারখানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানালেন, তিনি নিজে সাত বছর বয়স থেকে কারখানায় কাজ করছেন। নিজের আট বছরের ছেলেকেও কারখানায় দিয়েছেন। শিশু শ্রম বিষয়ক আইন সম্পর্কে তিনি জানেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করলেন, আইন কি কাউরে খাওন দেয়? একটা কাজ শিখলে কমছে কম ২০ হাজার টাকা ইনকাম হয়। আইন কি এই টাকা দিব?
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এহছানে এলাহী বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইতিমধ্যেই গত বছর ১ লাখ শিশুশ্রমিককে আমরা প্রি প্রাইমারি (প্রাক প্রাথমিক) এবং দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দিয়েছি ৷ তারা এখন শিশুশ্রমে নেই ৷ ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
দশ বছর বয়স থেকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের জুতার কারখানায় কাজ করছে রাকিব। যে সময়টায় স্কুলে লেখাপড়া আর খেলাধুলায় মেতে থাকার কথা, সেই সময়ে স্যাঁতসেঁতে বদ্ধ কারখানায় জুতার চামড়া কাটা, প্যানেলের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে তাকে। কাজের চাপে কখন শৈশব কেটে গেছে টেরই পায়নি সে। আজকের পত্রিকাকে রাকিব জানায়, বর্তমানে তার বয়স প্রায় ১৭। এর মধ্যে জীবনের সাত বছরই জুতার কারখানায় কাটিয়ে দিয়েছে সে। শুরুর দিকে মজুরি ছিল না। তবে এখন ২৪ জোড়া জুতার কাজ করলে ৫০০ টাকা মেলে।
শ্রমিকেরা জানান, এ ধরনের কারখানায় নবিশ হিসেবে শুধু শিশুদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়। হালকা কাজের নামে নিয়োগ দিয়ে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজও করিয়ে নেওয়া হয়। অনভিজ্ঞ প্রাপ্ত বয়স্ক কেউ এ সব কারখানায় কাজ পান না। রাকিব বর্তমানে যে কারখানায় কাজ করছে সেই এসকেএম সুজের কর্ণধার রাজু আহমেদ নিজেও ছিলেন একজন শিশু শ্রমিক। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়নি তার। ১২ বছর বয়সে জুতার কারখানায় কাজ নেয় সে। আজকের পত্রিকাকে রাজু আহমেদ বলেন, ১২ ১৩ বছর বয়সই কাজ শেখার সময়। একবার কাজটা শিখে নিলে কিছু করে খাওয়া যায়।
শিশুশ্রমিক থেকে কারখানার মালিক বনে যাওয়া রাজু আহমেদ নিজেই জানালেন, কারখানায় যেসব শিশুরা কাজ করে প্রথম দুই বছর তাদের কোন পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। শুধু দু'তিনবেলা খাবারের বিনিময়ে কাজ করে তারা। রাজু আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তার কারখানায় চার পাঁচজন শিশু শ্রমিক কাজ করে। তবে কারখানার প্রতিটি তলা ঘুরে দেখা গেল, সংখ্যাটা কমপক্ষে দ্বিগুণ। শিশুদের কেউ মেশিন চালাচ্ছে, কেউ আবার হাতেই জুতার অংশবিশেষ তৈরি করছে।
২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা অনুসারে, দেশে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার শিশু কর্মে নিয়োজিত। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ লাখ শিশুশ্রমিক। এদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু। আর ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে।
শিশুশ্রমিকদের ৩৩ শতাংশেরই বসবাস ঢাকা, চট্টগ্রাম ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায়। শিশুশ্রম বন্ধে গৃহীত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২০-২৫ নথিতে ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত মাল্টিপল ইন্ডিকেটরস ক্লাস্টার জরিপ অনুযায়ী,৫-১৭ বছরের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু শ্রমে নিয়োজিত (ছেলে ৯ লাখ ৫০০০০, মেয়ে ৭৫০০০০)। আর বিবিএসের জরিপ বলছে সিটি করপোরেশনের বস্তি ও অনুন্নত এলাকায় প্রতি ৮ জনে ১ জন শিশু শ্রমে নিয়োজিত।
বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) করোনাকালে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জ, কুমিল্লা, বরিশাল, যশোর ও খুলনায় একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে দেখা যায়, ওই এলাকাগুলোতে আগের চেয়ে কম পারিশ্রমিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪০০ শিশু। নতুন করে ৭ হাজার ৮০০ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ১২ জুন পালিত হচ্ছে শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস।
অস্বাস্থ্যকর অনিরাপদ কারখানা
কামরাঙ্গীরচরের বরগ্রামের যে ভবনটিতে এসকেএম সুজের কারখানা, সেটি যেমন অস্বাস্থ্যকর, তেমনি অনিরাপদ। চার তলা ভবনের পানি জমে থাকা পিচ্ছিল সরু সিঁড়িগুলোতে নেই কোন রেলিং (হাতল)। শিশুশ্রমিকেরা বিপজ্জনক সেই সিঁড়ি দিয়েই ভারী মালামাল নিয়ে ওঠানামা করে। এসকেএম সুজের আশপাশের প্রায় প্রতিটি ভবনেই জুতা, ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্যের কারখানা। তবে কোনো ভবনের সামনেই নেই কারখানার সাইনবোর্ড। যে গলির দু পাশে এই কারখানাগুলো গড়ে উঠেছে, সেটি এতটাই সরু যে পাশাপাশি দুজন মানুষ হাঁটাও কষ্টসাধ্য। গলিময় মেশিন চলার ঘটঘট শব্দ ছাড়া ভবনগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই সেগুলো কারখানা। কারখানাগুলোর কোনোটিতেই নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অগ্নিকাণ্ড বা ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়ে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে কোনো গাড়ি প্রবেশেরও পথ নেই।
প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক সনদে শিশু ও শিশুশ্রম
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী যেকোনো ব্যক্তিই শিশু। তবে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ২ (৬৩) ধারা অনুযায়ী, ১৪ বছরের নিচে যে কোন ব্যক্তিকে শিশু ও ২ (৮) ধারা অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে সকল ব্যক্তিকে কিশোর বলে বিবেচনা করা হবে। তবে শিশু আইন, ২০১৩ এর ৪ ধারায় আবার বলা হয়েছে, অন্য আইনে যাই বলা থাকুক, ১৮ বছরের নিচে সকল ব্যক্তিকে শিশু বলা হবে। জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০ অনুসারে, শিশুদের আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে দেওয়া যাবে না। কিশোরদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের কাছ থেকে শিশু–কিশোরদের সক্ষমতা সনদ নিয়ে শর্ত সাপেক্ষে হালকা কাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে।
আইন আছে, আইনের ফাঁকফোকরও আছে। তবে শিশু শ্রম প্রতিরোধ করতে না পারার মূল কারণ আইনের ফাঁকফোকর নয়, বরং দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, ক্ষুধা নিবৃত্তির নিশ্চয়তা ছাড়া শিশুশ্রম প্রতিরোধ সম্ভব নয়। শুধুমাত্র আইন করে এটা বন্ধ করা যাবে না।
নামমাত্র মজুরিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও শিশুরা কেন কাজে
কামরাঙ্গীরচরের নামহীন একটি ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজ করছিল আনুমানিক নয় দশ বছরের শিশু রুস্তম। ওয়েল্ডিংয়ের যে মেশিনটি নিয়ে সে কাজ করছিল, একটু অসতর্ক হলে সেটা যে তার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে, তা বোঝার মতো বয়সও হয়নি শিশুটির। মেশিন চালাতে ভয় লাগে কিনা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল, শুরুতে ভয় লাগত। অহন মজাই লাগে।
ওই এলাকারই একটি ব্যাগ কারখানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানালেন, তিনি নিজে সাত বছর বয়স থেকে কারখানায় কাজ করছেন। নিজের আট বছরের ছেলেকেও কারখানায় দিয়েছেন। শিশু শ্রম বিষয়ক আইন সম্পর্কে তিনি জানেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করলেন, আইন কি কাউরে খাওন দেয়? একটা কাজ শিখলে কমছে কম ২০ হাজার টাকা ইনকাম হয়। আইন কি এই টাকা দিব?
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এহছানে এলাহী বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ইতিমধ্যেই গত বছর ১ লাখ শিশুশ্রমিককে আমরা প্রি প্রাইমারি (প্রাক প্রাথমিক) এবং দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দিয়েছি ৷ তারা এখন শিশুশ্রমে নেই ৷ ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
২ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪