ড. মো. গোলাম ছারোয়ার
বর্তমান বিশ্বে ৪০ শতাংশ মানুষের বসবাস অত্যন্ত নিম্ন শ্রেণির আবাসস্থলে। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী জীবনের মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। তাদের আবাসস্থলকে বিভিন্ন প্রকার জীবাণুর বাহকের উৎপত্তিস্থল হিসেবে গণ্য করা হয়। এখান থেকে উৎপন্ন ২০টির বেশি রোগকে নেগলেকটেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ বা এনটিডি বলা হয়। এই রোগগুলো মূলত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, নেমাটেডি, একটিনো মাইসেটস, ফাঙ্গাস, প্যারাসাইটস ইত্যাদি জীবাণুর মাধ্যমে হয়। ডেঙ্গুও এনটিডির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই ডেঙ্গুও অবহেলিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের রোগ বলা যায়, যারা এখনো নিজেদের অধিকার নিয়ে ততটা সচেতন ও সোচ্চার নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার রক্ত শোষণের নির্মমতা শুধু সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বরাদ্দ।
এই সত্য উপলব্ধি করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২১-৩০ সালকে এনটিডিমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ, অর্থাৎ ‘সবার জন্য সমান স্বাস্থ্যসুবিধা’ নিশ্চিতকরণ হলো এর মূল উদ্দেশ্য। অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ওয়ার্ল্ড মসকিউটো প্রোগ্রাম (ডব্লিউএমপি)। এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিবার, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া প্রভৃতি। বর্তমান বিশ্বের মধ্যে বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও লাতিন আমেরিকায় ডেঙ্গুর প্রভাব অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেড়েই চলেছে। ফলে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডব্লিউএমপি মশা নিধনে নানা গবেষণা এবং এর যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
এরই একটা সফল গবেষণালব্ধ ফলাফল হলো ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্যারাসাইট পদ্ধতির ব্যবহার। অর্থাৎ, জৈবিক পদ্ধতিতে এডিস মশার বংশবৃদ্ধির ক্ষমতাকে রোধ করা, যা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী ও টেকসই। কারণ, বর্তমানে মশা মারার জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক যেমন পরিবেশের ও অন্যান্য প্রাণীর অনেক ধরনের ক্ষতিসাধন করছে। একই সঙ্গে মশাকেও প্রতিরোধী করে তুলে রোগ বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তাই মশা দমনে প্রচলিত সব পদ্ধতির সঙ্গে সমন্বয় করে জৈবিক পদ্ধতির ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে তার জন্য যে অবকাঠামো ও অভিজ্ঞ জনবল প্রয়োজন, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী জানে না মশা, মাছি, ছারপোকা প্রভৃতি পোকামাকড়ের মাধ্যমে কী ধরনের রোগের জীবাণু ছড়ায়। মনে রাখতে হবে, মানুষের শরীরে ক্ষত অথবা রক্ত শোষণ করে এরা জীবাণু বহন করে রোগ ছড়ায়। তাই এসব বাহকের হাত থেকে নিজেকে রক্ষায় যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। এসব বাহক ও জীবাণুর উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। আর এর জন্যই পদ্ধতিগুলোর সমন্বয়ের বিকল্প নেই।
সবার জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি স্যানিটেশন ও হাইজেন-ব্যবস্থা যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বিশেষ করে খাবার প্রস্তুত, বিপণন ও সরবরাহ প্রক্রিয়া সংক্রমণমুক্ত রাখতে হবে। তাই এসব পণ্য উৎপাদনে কোন প্রক্রিয়া এবং কী কী উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। একইভাবে মাছ, গরু-ছাগল ও মুরগির মাংস বাজারে কাটার সময় তা স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হচ্ছে কি না, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। মাছ, গরু-ছাগল ও মুরগির মাংস কাটার সময় পোকামাকড় ও অণুজীবের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। খাবার তখনই নিরাপদ হবে, যখন তা সব ধরনের জীবাণুর আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে। এই খাবার তৈরির পর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে রাখা এবং যথাযথভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার।
আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত দেখা যায় মাছ-মাংস কাটার ক্ষেত্রে এবং কাটার পর তেমন কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। আবার যে পরিবেশে মাংস ঝুলিয়ে রাখা হয়, তা-ও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিভিন্ন স্থানে ময়লা ব্যবস্থাপনার যে বেহাল অবস্থা এবং বদ্ধ পানির যে ভয়ংকর দূষিত অবস্থা, তা শুধু মশা-মাছি ও জীবাণুর উৎপত্তিস্থল নয়, পরিবেশদূষণেরও অন্যতম উপাদান। এই পরিস্থিতিতে এনটিডির অন্তর্ভুক্ত রোগসমূহ নির্মূল করা বেশ কঠিন কাজ।
তাই এসডিজি অর্জনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত রোডম্যাপ অনুযায়ী এসব বাধা সফলভাবে অতিক্রম করতে হবে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে মশা দমনের সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুরসহ যেসব দেশ জৈব উপাদান ব্যবহার করে সফল হয়েছে, সেই সব দেশের পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি।
এই সময়ের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ অধিকাংশ উন্নয়নের সূচকে এগিয়ে আছে। তাহলে কেন অতি ক্ষুদ্র একটি পতঙ্গ এডিস মশার ভয়াল গ্রাস থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হব না? আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে, যেমন—কৃষির উন্নয়নের জন্য অনেকগুলো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, তথ্য ও প্রযুক্তির জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, সিভিল অ্যাভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। তাহলে পাবলিক হেলথের জন্য পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না? পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সব ধরনের জনস্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সমস্যার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জুতসই সমাধান দ্রুত সম্ভব হবে। যেসব মানুষ এনটিডি শ্রেণির জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নিজেদের অত্যন্ত অসহায় মনে করছে এবং বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে প্রকৃতির ওপর ছেড়ে দিয়েছে; এসব উদ্যোগ গ্রহণ করলে তাদের সব ভুল ধারণার অবসান হবে এবং এর বেড়াজাল থেকে মুক্তির পথ উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বাংলাদেশ পেরেছে, বাংলাদেশ পারে। অতীতে বাঙালি জাতি অনেক গৌরব অর্জন করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে উন্নতমানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা এবং বিজ্ঞ গবেষক তৈরির মাধ্যমে এনটিডির অভিশাপকে আশীর্বাদে পরিণত করে সুস্থ ও কর্মচঞ্চল জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াব, সেই প্রত্যাশা করতে পারি।
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কীটতত্ত্ব বিভাগ, নিপসম
বর্তমান বিশ্বে ৪০ শতাংশ মানুষের বসবাস অত্যন্ত নিম্ন শ্রেণির আবাসস্থলে। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী জীবনের মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত। তাদের আবাসস্থলকে বিভিন্ন প্রকার জীবাণুর বাহকের উৎপত্তিস্থল হিসেবে গণ্য করা হয়। এখান থেকে উৎপন্ন ২০টির বেশি রোগকে নেগলেকটেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ বা এনটিডি বলা হয়। এই রোগগুলো মূলত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, নেমাটেডি, একটিনো মাইসেটস, ফাঙ্গাস, প্যারাসাইটস ইত্যাদি জীবাণুর মাধ্যমে হয়। ডেঙ্গুও এনটিডির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই ডেঙ্গুও অবহেলিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের রোগ বলা যায়, যারা এখনো নিজেদের অধিকার নিয়ে ততটা সচেতন ও সোচ্চার নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার রক্ত শোষণের নির্মমতা শুধু সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বরাদ্দ।
এই সত্য উপলব্ধি করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২১-৩০ সালকে এনটিডিমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ, অর্থাৎ ‘সবার জন্য সমান স্বাস্থ্যসুবিধা’ নিশ্চিতকরণ হলো এর মূল উদ্দেশ্য। অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ওয়ার্ল্ড মসকিউটো প্রোগ্রাম (ডব্লিউএমপি)। এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিবার, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া প্রভৃতি। বর্তমান বিশ্বের মধ্যে বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও লাতিন আমেরিকায় ডেঙ্গুর প্রভাব অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেড়েই চলেছে। ফলে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডব্লিউএমপি মশা নিধনে নানা গবেষণা এবং এর যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
এরই একটা সফল গবেষণালব্ধ ফলাফল হলো ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্যারাসাইট পদ্ধতির ব্যবহার। অর্থাৎ, জৈবিক পদ্ধতিতে এডিস মশার বংশবৃদ্ধির ক্ষমতাকে রোধ করা, যা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী ও টেকসই। কারণ, বর্তমানে মশা মারার জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক যেমন পরিবেশের ও অন্যান্য প্রাণীর অনেক ধরনের ক্ষতিসাধন করছে। একই সঙ্গে মশাকেও প্রতিরোধী করে তুলে রোগ বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তাই মশা দমনে প্রচলিত সব পদ্ধতির সঙ্গে সমন্বয় করে জৈবিক পদ্ধতির ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে তার জন্য যে অবকাঠামো ও অভিজ্ঞ জনবল প্রয়োজন, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী জানে না মশা, মাছি, ছারপোকা প্রভৃতি পোকামাকড়ের মাধ্যমে কী ধরনের রোগের জীবাণু ছড়ায়। মনে রাখতে হবে, মানুষের শরীরে ক্ষত অথবা রক্ত শোষণ করে এরা জীবাণু বহন করে রোগ ছড়ায়। তাই এসব বাহকের হাত থেকে নিজেকে রক্ষায় যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। এসব বাহক ও জীবাণুর উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। আর এর জন্যই পদ্ধতিগুলোর সমন্বয়ের বিকল্প নেই।
সবার জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি স্যানিটেশন ও হাইজেন-ব্যবস্থা যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বিশেষ করে খাবার প্রস্তুত, বিপণন ও সরবরাহ প্রক্রিয়া সংক্রমণমুক্ত রাখতে হবে। তাই এসব পণ্য উৎপাদনে কোন প্রক্রিয়া এবং কী কী উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। একইভাবে মাছ, গরু-ছাগল ও মুরগির মাংস বাজারে কাটার সময় তা স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হচ্ছে কি না, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। মাছ, গরু-ছাগল ও মুরগির মাংস কাটার সময় পোকামাকড় ও অণুজীবের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। খাবার তখনই নিরাপদ হবে, যখন তা সব ধরনের জীবাণুর আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে। এই খাবার তৈরির পর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে রাখা এবং যথাযথভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার।
আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত দেখা যায় মাছ-মাংস কাটার ক্ষেত্রে এবং কাটার পর তেমন কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। আবার যে পরিবেশে মাংস ঝুলিয়ে রাখা হয়, তা-ও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিভিন্ন স্থানে ময়লা ব্যবস্থাপনার যে বেহাল অবস্থা এবং বদ্ধ পানির যে ভয়ংকর দূষিত অবস্থা, তা শুধু মশা-মাছি ও জীবাণুর উৎপত্তিস্থল নয়, পরিবেশদূষণেরও অন্যতম উপাদান। এই পরিস্থিতিতে এনটিডির অন্তর্ভুক্ত রোগসমূহ নির্মূল করা বেশ কঠিন কাজ।
তাই এসডিজি অর্জনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত রোডম্যাপ অনুযায়ী এসব বাধা সফলভাবে অতিক্রম করতে হবে। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে মশা দমনের সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুরসহ যেসব দেশ জৈব উপাদান ব্যবহার করে সফল হয়েছে, সেই সব দেশের পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি।
এই সময়ের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ অধিকাংশ উন্নয়নের সূচকে এগিয়ে আছে। তাহলে কেন অতি ক্ষুদ্র একটি পতঙ্গ এডিস মশার ভয়াল গ্রাস থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হব না? আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে, যেমন—কৃষির উন্নয়নের জন্য অনেকগুলো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, তথ্য ও প্রযুক্তির জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, সিভিল অ্যাভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। তাহলে পাবলিক হেলথের জন্য পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না? পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সব ধরনের জনস্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সমস্যার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জুতসই সমাধান দ্রুত সম্ভব হবে। যেসব মানুষ এনটিডি শ্রেণির জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নিজেদের অত্যন্ত অসহায় মনে করছে এবং বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে প্রকৃতির ওপর ছেড়ে দিয়েছে; এসব উদ্যোগ গ্রহণ করলে তাদের সব ভুল ধারণার অবসান হবে এবং এর বেড়াজাল থেকে মুক্তির পথ উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বাংলাদেশ পেরেছে, বাংলাদেশ পারে। অতীতে বাঙালি জাতি অনেক গৌরব অর্জন করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে উন্নতমানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা এবং বিজ্ঞ গবেষক তৈরির মাধ্যমে এনটিডির অভিশাপকে আশীর্বাদে পরিণত করে সুস্থ ও কর্মচঞ্চল জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াব, সেই প্রত্যাশা করতে পারি।
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কীটতত্ত্ব বিভাগ, নিপসম
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে