মহাসড়কে নিষিদ্ধ ভটভটি-নসিমন। অথচ এসব গাড়িই দাপিয়ে বেড়ায় রাজশাহীর বিভিন্ন সড়ক। রাজশাহী নগরীর সিটিহাটে গরুর হাটকে ঘিরে একটি টার্মিনালও গড়ে উঠেছে এসব গাড়ির। সপ্তাহে দুই দিন সিটিহাটে গরুর হাট বসে। আর তাই এখানে করা হয়েছে ভটভটি-নসিমনের টার্মিনাল।

এই হাটটি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক)। কয়েকজন ব্যবসায়ী হাটটি ইজারা নিয়ে পরিচালনা করছেন। বৈধ এ হাটের ভেতর তাঁরাই অবৈধ ভটভটি-নসিমনের টার্মিনাল গড়ে তুলেছেন। এই টার্মিনাল থেকে গরু তুলে মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করে গাড়িগুলো। এ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কোনো বাধা বা নজরদারি নেই বলে জানিয়েছেন ভটভটি-নসিমনের চালকেরা। 
অভিযোগ রয়েছে, মহাসড়কে চলাচলের জন্য ট্রাফিক পুলিশকে সমিতির মাধ্যমে নিয়মিত চাঁদা দেন চালকেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সপ্তাহের রবি ও বুধবার বিভিন্ন এলাকা থেকে সিটিহাটে গরু নিয়ে আসে ভটভটি ও নসিমন। তারপর গাড়িগুলো হাটের ভেতরের ‘টার্মিনালে’ রাখা হয়। হাটের সামনে মূল সড়কেও থাকে অনেক গাড়ি। বিকেলে আবার এখান থেকেই গরু নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যায় গাড়িগুলো। আর মহাসড়কে গাড়িগুলো চলে বেপরোয়া গতিতে।

চালকেরা জানিয়েছেন, সিটিহাটের টার্মিনালে গাড়ি রাখার জন্য দিতে হয় গাড়িপ্রতি ৩০ টাকা করে। ট্রাক-মিনি ট্রাকের ভাড়া আরও বেশি। তাই গরু পরিবহনে তাঁদের গাড়ির চাহিদাই বেশি। হাটের দিন বিভিন্ন এলাকার দেড় থেকে দুই হাজার ভটভটি ও নসিমনে করে গরু নিয়ে আসা হয়। মহাসড়ক দিয়ে এলেও কোথাও কেউ তাঁদের আটকায় না। বৈধ গাড়ির মতোই সেগুলো অবাধে চলছে। 
হাটের ভেতর অবৈধ গাড়ির টার্মিনাল গড়ে তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার অতিকুর রহমান কালু বলেন, ‘এটি আমাদের জায়গা না। আমরা হাট ইজারা নিলেও কোনো টার্মিনাল করতে পারি না। আমরা করিনি। আমরা গাড়ি থেকে কোনো টাকাও তুলি না।’

অবৈধ এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি রাজশাহী নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার শারমিন আকতার চুমকি। 
উল্লেখ্য, এসব ভটভটিতে চড়ে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকার গ্রাম থেকে শ্রমিকেরা প্রতিদিন শহরে কাজের সন্ধানে আসেন। তাঁরা সিটি করপোরেশনে বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। কয়েক মাস আগে ট্রাফিক পুলিশ এসব গাড়ি ধরপাকড় শুরু করলে শ্রমিকেরা গিয়ে নগর ভবন ঘেরাও করেন। পরে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কিছুসংখ্যক এ ধরনের গাড়ি চলতে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে নগর পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন যে পরিমাণ গাড়ি চলাচলের অনুরোধ জানায়, বাস্তবে এখন তার চেয়েও বেশি চলছে।